ক্ষমা

অলংকরণ: কামরুল

কিস্তি-১১

ক্ষমা

অনলাইন ডেস্ক

'ক্ষমা একটি মহৎ গুণ। ' হা হা হা। এইটা একটা ফালতু কথা। কেউ কাউকে ক্ষমা করে না আসলে।

ক্ষমা করার ভাব দেখায়। ক্ষমা করা মহৎ গুণ হোক আর না হোক, ক্ষমা করার ভানে থাকে ব্যাপক মহত্ত্ব। ধরুন, আপনি একটা বিয়ের দাওয়াতে গেছেন। কোনো কারণে কাচ্চির জন্য নিহত গো-বেচারা ছাগলটির অর্ধ-সিদ্ধ মাংস আপনার হিংস্র দাঁতে নিয়তির মতো লেগে আছে।
সেটা দেখে ফেলে কেউ একজন আপনাকে বহুদিন ধরে অপেক্ষিত অপদস্থ করার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে হাসতে হাসতে বলে উঠলো:  'আপনি কি মাংস একটু বেশিই খেয়ে ফেলেছেন নাকি, দাঁত সাক্ষ্য দিচ্ছে যে!' তখন আপনি কী করবেন?  তখন আপনার গভীর গভীর গহনাগুলি কি মুহূর্তেই বাঁশপাতার কাহিনি হয়ে যাবে না?

আপনার স্পেশাল কিছু এক্সিকিউটিং  স্কিলের জন্য নেয়া ভারী ভারী ভাব সব নিমেষেই কাঁচের বাটির মতো নিমেষেই গুড়ো গুড়ো হয়ে যাবে না?
ওই ব্যাটা এই কথা গোপনে ডেকেও তো বলতে পারতো? পারতো না? বলেন?
লোকটা কেন এটা করলো? আপনি ওইসময় নিশ্চয়ই লোকটার সঙ্গে ফাইট দিতে যাবেন না? উলটো তাৎক্ষণিকভাবে লোকটার সঙ্গে ভরপেট রসিকতায় অংশ নেবেন। কিন্তু আপনি কি তাকে ক্ষমা করে দেবেন? মনে হয় না।
আমি দিতাম না। অবশ্য ভান করতাম ক্ষমা করে দিয়েছি। মহৎ হবার জন্য এই ভান আমি করতাম। আমি শিওর আপনিও এ ভানটাই করেছেন।
মানুষ সবসময় সামাজিকভাবে মহৎ হওয়ার ভণিতা করে থাকে। এটাই সামাজিক ভাষা। অতি কৃত্রিম। ঠিক এ কারণেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষ একটা ভণিতাপ্রধান প্রাণী। অতি ফালতু আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অকাজের। তবে তারা সময় গেলে অপমান ভুলে যায় হয়তো। অথবা অধিক অপমানের ভিড়ে অল্প অপমানের কথা আর মনে রাখতে পারে না।

আমি সারাজীবনে কাউকে কোনোদিন ক্ষমা করিনি। মুখে মুখে বলেছি, ক্ষমা করেছি। আমাকেও কেউ কোনোদিন ক্ষমা করেনি। কেউ কাউকে ক্ষমা করে না আসলে। দস্তইয়েফস্কি তাঁর বাবাকে ভয় পেলেও জীবনে ক্ষমা করেননি। আমি হয়তো ক্ষতি করার সুযোগ দিইনি, তাই অনেক ক্ষেত্রে ব্যাপারগুলো ক্ষমার মতো শেইপ পেয়েছে। মানুষ খারাপ হওয়ার সুযোগে খারাপ হয়, সুযোগ না পেলে ভালো থাকে।
সেটা কেমন?

আরও পড়ুন:আমার দস্তইয়েভস্কি

ধরুন আপনি একজন গাড়িবাহী সরকারি কর্মকর্তা। গেছেন বিয়ের দাওয়াতে (ভারতীয় সিনেমা-নাটকের কনটেন্টে বিয়ে একটি জনগ্রাহ্য ব্যাপার, তাই আমার উদাহরণগুলোতেও বিয়েবাড়ি থাকছে)। আপনার পদবির ঠ্যালায় গরম গরম ভালো খাবারের নিশ্চয়তা না থাকলে কি আপনি প্রথম বৈঠকেই মিসকিনদের মতো আগে-ভাগে বসে যাবেন না? অবশ্যই যাবেন। কিন্তু আপনি নিজেকে মহৎ এবং ভদ্রলোক মনে করেন, চলাচল করেনও ওই ভাব রেখে। ফলে খারাপ হবার সুযোগ না পেয়ে আপনি ভালো থাকেন। আর সে জন্য আপনি একজন আপাদমস্তক ভণ্ডও। আপনি মানে আমিও ভণ্ড। ভণ্ডামি আমি করি। কারণ আমি ক্ষমা করি না। অথচ তা প্রকাশ্যে কবুলও করি না। মহৎ হবার ভাব দেখাই।

আমি যদি কারো জন্য ক্ষতিকর না হই, অথচ তার হিংসার দাপটে আক্রান্ত হই – এ ধরনের ক্ষেত্রে আমি কখনোই কাউকে ক্ষমা করি না। এরকম অনেক ঘটনাই ঘটেছে জীবনে। হৃদয় থাকা মানুষ মগজের সাপেক্ষে বেশ বোকাসোকা হয়। মগজওয়ালারা সমাজের ভাষা রিড করতে পারে দ্রুত, ফলে জীবন যাপনে তাদের অনেক সুবিধা হয়। মিথ্যাকে তখন তারা আর্টিস্টিক পন্থায় ব্যবহার করতে শিখে যায়। আমাকে বোকাই ভাবি আমি। কিন্তু অতোটা না যতোটা ভেবে মানুষ আমার সঙ্গে আমৃত্যু দুই নাম্বারি করে যেতে পারবে।

আমি জীবনে সব থেকে বেশি দুই নাম্বারির শিকার এবং আক্রান্ত হয়েছি নারীদের দ্বারা। স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি, বাবা-মা ও আমার বৈবাহিক সম্পর্কের জীবন, চাকরিজীবনে আমি বহুবার বহু নারী দ্বারা ধর্ষিত হয়েছি। শব্দটিকে 'ধর্ষণ'ই বলতে চাই। 'ধর্ষণ' কোনো বিশেষ লিঙ্গভিত্তিক ক্রিয়া হতে পারে না। নারীদের হিংসাবিজড়িত মন পুরুষের হিংস্রতা থেকে কোনো অংশেই কম যায় না। মহান খোদাতায়ালা যদি এইসব মনের জন্য দৃশ্যমান কোনো অঙ্গ বাজেটে রাখতেন তো দেখতেন, কোর্টগুলোতে মামলার কারবার কেমন চলা চলতো! ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাডমিন ফেলে রেখে সবাই ব্যারিস্টারি পড়তো।

এই বাংলাদেশের নারীরা অত্যন্ত কমবুদ্ধি সম্পন্ন প্রাণী। আমি নিজেও। ঘোড়ার জন্য কাটা ঘাস খেয়ে জীবন পার করি সবাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আমাকে পছন্দ করে বিয়ে করেছেন – এটা আমার সংশ্লিষ্ট নারী-সমাজ কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি। এই বিয়ের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে গোটা বাংলাদেশের সঙ্গেই যেন আমার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। খুব ভালো সখ্য থাকা বান্ধবীদের কাছে আমি চক্ষুশূল হয়ে উঠলাম মুহূর্তেই। বন্ধুত্ব টুটে গিয়ে কী বিশ্রী পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো, তা ভাবতে গিয়ে আমার পোয়াতি নারীদের মতো বমি এসে পড়ার উপক্রম হচ্ছে।

আর পড়ুন:দাঁড়িয়ে আছি মাধ্যাকর্ষণের টানে

আমার বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনে খুব সখ্য থাকা বান্ধবীদের সঙ্গে কেমন যেন অদৃশ্য দূরত্ব তৈরি হয়ে গেল। হয়তো মানবেতিহাসে এটাই চরম সত্য। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাসের বিখ্যাত এক নারী চরিত্রের নামে নাম ছিল আমার এক সতীর্থের। সে অনেক আগে থেকেই দেখতে পারতো না আমাকে। তার দেখতে না পারার অবশ্য অনেকগুলো কারণ আছে। প্রথমত ক্লাসের এক সুদর্শন সতীর্থ আমার জন্য ফিদা ছিলো। কিন্তু আমার কোনোদিনও ভাল্লাগতো না তাকে। আমার প্রতি ওর বাড়তি খেয়াল-টেয়াল দেখে একবার এই বিষয়টা নিয়ে ক্লাসের ইচড়ে পাকা (অতি অল্প বয়সে বিবাহ করেছিলো বলে বললাম) সতীর্থকে বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনের শুরুর দিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এরকম কিছু ও টের পায় কি না। সে ব্যাপারটাকে হেসে উড়িয়ে দিয়েছিল। উলটো বললো, গার্লস স্কুল থেকে এসেছিস তো, তাই এরকম মনে হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করলাম। কারণ আমার হাই স্কুল ও কলেজ ছিলো গার্লস। এরপর এই ছেলে আমাকে খুব ভালো বন্ধু হিসেবে ইমপ্রেস করার জন্য বহুকিছু করেছে, কিন্তু কোনোদিন প্রপোজ করেনি। আপনার মধ্যে কারো ব্যাপারে কোনোপ্রকার ফিলিং তৈরি হওয়া ছাড়া কেউ যদি নিজের মুখে নিজে আপনাকে না বলে দুনিয়ার মানুষকে বুঝিয়ে বা বলে বেড়ায়, তাহলে তার সাথে কোনোদিন আপনার প্রেম হবে? এমনটা শুনেছেন কোনোদিন কোথাও? প্রেম তো দ্বিপক্ষীয় রাজনীতির মতো গণতান্ত্রিক। স্বৈরশাসন সেখানে একেবারেই অচল।
আরে ভাই, ঘোষণা দেয়া প্রেমই প্রেম বলে গণ্য হয় না, আর অঘোষিত আরোপিত প্রেমকে কী করে প্রেম বলা যায় বলেন দেখি!
কিন্তু ওই সতীর্থ মেয়েটি যেহেতু ছেলেটার মনের খবর জানতো (মানে ছেলেটা তাকে জানাতো) সেহেতু সে ব্যাপারটা মোটেও ভালো চোখে দেখেনি। আমি তো জানি, আমাদের মধ্যে কিছুই ছিলো না। তার পরামর্শে আমি ছেলেটাকে অ্যাভোয়েড করতে শুরু করি। না না, শুধু ওর পরামর্শে না, অন্য একটি কারণও ছিলো সাথে। সেটা অন্য একদিন বলবো। গভীর-গূঢ় সে কথা।  
তো এই এড়িয়ে চলার কারণে ছেলেটা আরও বিগড়ে যায়। প্রথমত এই ছেলে বিগড়ে গেল, দ্বিতীয়ত তাদের অতি প্রিয় 'আজম স্যার' কী করে এভাবে আমার মতো একটা 'খচ্চর' মেয়েকে বিয়ে করে ফেলল! নিশ্চয়ই আমি সুবিধার মেয়ে না। বিয়ের পরে বিভাগের, বিভাগের বাইরের অনেক ছাত্রী, আমার বরের সহকর্মী, সহকর্মীদের সহধর্মিণী নারীকুল আমাকে একদম সহ্যই করতে পারতেন না (কেউ কেউ এখনও পারে না, তাতে আমার কচুটা হয়)। পাশাপাশি শ্বশুরবাড়ির নারীরা তো ছিলেনই৷ 

এই বিয়ের কারণে পুরো দেশের মানুষ (আমাদের সংশ্লিষ্ট যতো মানুষ) আমার শ্বশুরবাড়ি হয়ে গেল। এবং এই 'শ্বশুরবাড়ি' দুনিয়ায় আমার জাদরেল শাশুড়ি, রায় বাঘিনী ননদিনীদের অভাব পড়তে দেখা যায় না৷
এর মধ্যে আবার আছেন অত্যাচারী শ্বশুর, ভাসুর, দেবরের দলও। বলেন, মাশাল্লাহ! 
ব্যাপারটা কিউট না?

১৬ বছরের এই বিবাহিত জীবনে কটু কথা, অপ্রীতিকর পরিস্থিতিরও কোনো অভাব হয়নি আমার। আবারও বলেন: মাশাল্লাহ! ওইসব কটূক্তি আর বাজে পরিবেশ সৃষ্টিকারী একজনকেও আমি ক্ষমা করিনি। করবোও না। তবে কাজ চালানোর জন্য অভিনয় করে যাচ্ছি, যাবোও হয়তো। এখন আমাকে একপ্রস্থ গালি দিয়ে বলেন, ভণ্ড কোথাকার!

আরও পড়ুন:মা

অবশ্য একদম বাদ যে কাউকে দিইনি তা কিন্তু নয়। একেবারে বাতিল করে দিয়েও চলি, আই মিন চলতে পারি। আবার প্রয়োজনে অভিনয়ও চালিয়ে যেতে পারি। এটা কম হলেও সাংঘাতিক কষ্টদায়ক। ওইসব মানুষের সান্নিধ্যে কম থাকার চেষ্টা করি।
একদম শুরু থেকে শেষ অবধি মানুষ আমাকে কম কথা শোনায়নি। হয়তো আমার ঘটনাটা কথা শোনার মতোই ছিলো। কিন্তু যারা শোনাতো, তাদের অতীত ইতিহাসও কম কথা শোনানোর নয়। আচ্ছা মানুষ এমন কেন? নিজে যা করে, তা অন্য কাউকে করা দেখতে পারে না কেন?
বিবাহিত জীবনে ছোট ছিলাম যখন তখন কেঁদে-মেদে ভাসিয়ে বেড়াতাম। এখন করুণা করি। আহা, বেচারাদের যাপনের জন্য আমি কতোই না ভালো রসদ যুগিয়ে দিলাম!

তো, স্বভাবতই বাংলা বিভাগের যেসব ছাত্রী মোহাম্মদ আজমের পাণিপ্রার্থী ছিলো, তারা দুনিয়ার সর্বত্রই রাষ্ট্র করে দিলো যে, মোহাম্মদ আজম যাকে বিয়ে করেছে সেই মেয়ে ডেঞ্জারাস! এটা মোটামুটি আমার চাকরি জীবনকেও অনেক দূর পর্যন্ত বিভীষিকাময় করে তুলতে পেরেছে। ফলে, তারা নিজেদেরকে মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর মতো সফল মনে করে বেড়াতে চেষ্টা করেছে। আসলে তাতে কচুটা হয়েছে।  

অপ্রয়োজনে কটু কথা, নিজের মনের কুৎসিত ইচ্ছা দমাবার জন্য যারা মিথ্যাচার করে বেড়িয়েছে, তাদের কাউকেই ক্ষমা করিনি আমি। এই লেখার মধ্যে দিয়ে এই বিষয়টি পরিষ্কার করে দিলাম।

এই ১৬ বছর ধরে এ বিষয়টি নিয়ে আমার মধ্যে ভাবনার অনেক মিউটেশন হয়েছে। আমি একটা বিষয় আবিষ্কার করলাম। মোহাম্মদ আজম যেই কিসিমের মানুষ, তাতে তাঁর বিয়েই তো করার কথা না – এমতাবস্থায় আমার জায়গায় যদি কোনো মুনমুন বা মুন্নীর বিয়ে হতো, লোকে তাকেও ছাড়তো না। ফলে এটা ভেবে সান্ত্বনা নেই যে, মানুষের কটু কথা আসলে মোহাম্মদ আজমের স্ত্রীর পদের জন্য বরাদ্দ। কিন্তু তারপরেও আমার টেম্পার নষ্ট করার জন্য ক্ষমা আমি কাউকেই করি না।

আমার চারপাশের মানুষের ব্যাপারে আমি অতোটা আশাবাদী নই। তারা ততক্ষণ পর্যন্ত আমার ব্যাপারে পজেটিভ থাকবে, যতোক্ষণ পর্যন্ত সব দিক থেকে আমি তাদের কাছে 'ঊন' হয়ে থাকবো। সমান বুঝতে গেলে বা মূর্খদের থেকে বেশি বুঝতে গেলে আমি আক্রান্ত তো হবোই।
কে না জানে, যেকোনো 'অপর'কে অপদস্থ দেখার চেয়ে ভালো লাগার বিষয় আর হয় না।

আবার নিজেকে মহৎ করার জন্য অনেক রকম ভণ্ডামি আমরা করে থাকি। যেমন ধরুন, আপনি ভাবলেন আপনার একদিন অনেক টাকা হবে। আপনি গরিবের জন্য অনেক কিছু করবেন। বাংলা সিনেমার গানে নায়ক জসীমের নাচের তালের মতো আপনি ফটাশ করে একদিন ধনী হয়ে গেলেন এবং ভাবলেন, পুরনো হয়ে যাওয়া মাছের তরকারিটা বুয়াকে না দিয়ে ফেলে দিই। বুয়াকে নতুন তরকারির কিছু অংশ দিই। আমি যেটা খেতে পারবো না সেটা ঘরের পরিচারিকাকে কী করে দেব? ঠিক এই পরিস্থিতিতে বুয়া দেখলো আপনি তাকে তরকারি না দিয়ে ফেলে দিচ্ছেন। পুরনো হলেও বাসায় নিয়ে তো সে তার মতো প্রসেস করে খেতে পারতো। সব বড়োলোক সম্পর্কে তার ধারণা থেকে আপনাকে সে একচুল সরাবে না। ফলে আপনি ভালো নিয়ত করেও গরিবের জন্য ভালো কিছু কখনোই করতে পারবেন না। যদিও আপনার মতো নতুন তরকারি দেবার মানসিকতা হয়তো সবার থাকবে না। বা থাকলেও সেটা শ্রেণিকরণের খপ্পরে পড়ে চেঞ্জ হয়ে যাবে। আপনি আসলে আপনার ক্লাসটাকেই ধরে রাখবেন।

আমরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্লাসের প্যারাস্যুটে বেঁচে থাকি। চাইলেও থাকি, না চাইলেও থাকি। কিন্তু প্রতিনিয়ত ভণ্ডামি করে যাই। সব থেকে বেশি ভণ্ডামি করি নিজের সাথে। জোর করে পজেটিভ থাকাটাও ভণ্ডামি। চর্চায় যদি ইতিবাচকতার লেশ না থাকে তো অতো পজেটিভিটি দেখিয়ে কী হয় আসলে? কচু হয়।

আমি যে এতো এতো কাহিনি লিখে বেড়াচ্ছি এবং এগুলোর বর্ণনাও যে শতভাগ সত্য নয়, সেটা কিন্তু আমি স্বীকার করি। এই স্বীকারোক্তিও একটা আজাইরা ভণ্ডামি।

আমি আমার নিজেকেও অনেক সময় ক্ষমা করি না। আবার মাঝে মাঝে মুগ্ধও হই। এটাই তো মানব-প্রকৃতি! শয়তান ফেরেশতা হলেও তার পক্ষে মানুষ হওয়া সম্ভব না। আবার মানুষের পক্ষে শুধু ফেরেশতা বা শুধু শয়তান হওয়াও সম্ভব না।

মানুষের ক্ষতি হতে পারে – এমন সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে ক্ষমা করে অথবা না করেও প্রচুর জ্ঞান লাভ হয়। আমি অতো সহজে ক্ষমা করি না। বেঁচে থাকার তাগিদে সামাজিক ভাষার মধ্যে বসবাস করে স্রেফ কাজটুকু চালিয়ে নেই।

লেখক পরিচিতি : কবি, লেখক ও শিক্ষক। পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে।   বর্তমানে সরকারি বিজ্ঞান কলেজে কর্মরত।
 news24bd.tv/ডিডি

এই রকম আরও টপিক