শরীয়তপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

প্রধান শিক্ষক গবিন্দ চন্দ্র দত্ত। ছবি: নিউজ২৪

শরীয়তপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

শরীয়তপুর সদরে দাসার্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গবিন্দ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের অভিভাবকগণ এই শিক্ষকের প্রত্যাহার ও চাকুরীচ্যুতের দাবী জানিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত দরখাস্ত দিয়েছেন।

দশজন নারী অভিভাবক ও তিন জন পুরুষ অভিভাবকের স্বাক্ষরিত ঐ দরখাস্তে তারা অভিযোগ করে বলেন, গোবিন্দ দত্ত একজন ধর্ষক। দীর্ঘদিন যাবৎ সে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে চলেছে।

সম্প্রতি এই বিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন গবিন্দ। বিষয়টি জানাজানি হলে ঐ ছাত্রী মান সম্মানের ভয়ে এলাকা ছাড়ে। স্থানীয় একটি কুচক্রী মহলের ছত্রছায়ার ঐ শিক্ষক একের পর এক কু-কর্ম করে যাচ্ছে বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেন।

এমন অবস্থায় অভিভাবকরা তাদের শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন।

এরকম শিক্ষককে অনতিবিলম্বে চাকুরি থেকে বহিস্কারেরও দাবী তোলেন তারা।

উক্ত বিদ্যালয়ের নারী অভিভাবক লামিয়া বেগম (ছদ্ম নাম) বলেন, এই প্রধান শিক্ষকের চরিত্র খারাপ। আমরা চাই না এরকম একজন খারাপ চরিত্রের মানুষের কাছে আমার মেয়ে পড়ুক। আমার মেয়েকে এখন বিদ্যালয়ে পাঠাতে ভয় পাই। সব সময় ভয়ে থাকি কখন কী ঘটে যায়। আমি এমন শিক্ষক চাই না।

আরও পড়ুন: নরসিংদীতে ভুল চিকিৎসায় মায়ের মৃত্যু, বিচার চাইল অবুঝ সন্তান

এছাড়া আরও একাধিক নারী অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, আমরা এই শিক্ষককে চাই না। আমরা একজন সৎ চরিত্রবান শিক্ষক চাই। যিনি ছাত্রীদের নিজের সন্তানের চোখে দেখবেন।

আরেক অভিভাবক মোস্তফা মুন্সি বলেন, গবিন্দ দত্ত স্কুলে আসার পর থেকেই বাচ্চাদের ফুঁসলিয়ে কু-কর্ম করে আসছে। আমি জেলা প্রথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে দাবী জানাচ্ছি, এই চরিত্রহীন শিক্ষককে চাকরি থেকে বহিস্কার করা হোক। আমার মেয়ে এই বিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী। আমি বাবা হয়ে চাই না এই শিক্ষক এখানে থাকুক।

অভিভাবক মো. সেকেন্দার মোল্লা বলেন, গোবিন্দ ছাত্রীদের সঙ্গে কু-কর্মে লিপ্ত, অভিভাবকদের ও সে কু-প্রস্তাব দেয়। আমার জানামতে উনি অনেক খারাপ লোক। ওনাকে এখান থেকে প্রত্যাহার করা হোক।

আরও পড়ুন: দুই বোনের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে রাজশাহীতে আইইডিসিআর

শরীয়তপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম বলেন, গবিন্দ দত্ত এর আগেও যখন অন্যান্য স্কুলে দায়িত্বে ছিলো তখনও তার বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছিলো। তদন্তও হয়েছিলো। কিন্তু একটি শক্তি তা ধামাচাপা দেয়। এখন আবারও এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একজন ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা আমাকে জানিয়েছে, ঐ বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া একটি বাচ্চাকে প্রায় দুই বছর যাবৎ যৌন নির্যাতন করে চলছে। এখন বিষয়টি বাজে পর্যায়ে পৌঁছেছে। মেয়েটি হতদরিদ্র পরিবারের হওয়ায় এতোদিন মুখ খোলেনি। এখন মেয়েটি সিক্সে উঠেছে, এখন বলছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নুরুল হাসান বলেন, গবিন্দের ব্যাপারে আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে তাকে একবিন্দু ছাড় দেওয়া হবে না।

news24bd.tv/DHL