পুতিন বিরোধীদের নজর এখন নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়ার দিকে

ইউলিয়া--বিবিসি ফাইল ছবি

পুতিন বিরোধীদের নজর এখন নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়ার দিকে

অনলাইন ডেস্ক

রাশিয়ায় সদ্য মারা যাওয়া সরকারবিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির সঙ্গে স্ত্রী ইউলিয়ার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে। নাভালনি সবসময়ই ফ্যাসিজম বিরোধী। তার মতে ছিল, পুতিন একজন একনায়কতান্ত্রিক। তার পক্ষে রাশিয়ার কখনোই ভালো হতে পারে না।

সবসময়ই পুতিনবিরোধী বক্তব্য দিতেন । মিছিল –সমাবেশে অংশ নিতেন।  
কিন্তু তার স্ত্রী নাভালনি আড়ালে থাকতে পছন্দ করতেন। নাভালনির মৃত্যুর পর প্রথম মুখ খুলেন এবং বলেন নাভালনিকে বিষপ্রয়োগ করে হত্যা করেছেন পুতিন।
এর বিচার চান তিনি। তিনি মুখ খোলার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও বিচার চান নাভালনি হত্যাকান্ডের।  
এরপরই সারা বিশ্বে পুতিন বিরোধীরা অপেক্ষা করছেন ইউলিয়া কি পদক্ষেপ নেন বা বলেন সেটার জন্যে।  
তাকে আগে থেকেই রাশিয়ায় বিরোধীদলীয় ‘ফার্স্ট লেডি’ বলা হতো।  
গত সোমবার ( ১৯ ফেব্রুয়ারি)  ৯ মিনিটের এক ভিডিওতে ইউলিয়া বলেন, ‘৩ দিন হয়ে গেল, ভ্লাদিমির পুতিন আমার স্বামী অ্যালেক্সাই নাভালনিকে হত্যা করেছে। ওকে হত্যার মধ্য দিয়ে পুতিন আমাকেও অর্ধেক মেরে ফেলেছে, আমার অর্ধেক হৃদয় আর অর্ধেক আত্মাও পুতিনের হত্যার শিকার হয়েছে। তবে এখনও আমি অর্ধেক বেঁচে আছি। আমার অর্ধেক হৃদয় আমাকে বলছে, পিছিয়ে যাওয়ার কোনো অধিকার আমার নেই। আমি নাভালনির কাজ অব্যাহত রাখব। অব্যাহত রাখব দেশের জন্য আমার লড়াই। ’
এর আগে গত রোববার নাভালনিকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স ( টুইটার) ও ইনস্টাগ্রামে দুটি পোস্টও দেন ইউলিয়া। দুই পোস্টে অভিন্ন ভাষা ও একটা ছবি শেয়ার করেন। সেই কথাগুলো হচ্ছে  ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি। ’ পোস্টে নিজেদের একটি ছবি যুক্ত করেছেন ইউলিয়া। ছবিতে দেখা যায়, তারা কোনো প্রদর্শনী উপভোগ করছেন। পরস্পরের মাথা স্পর্শ করে আছে। ইউলিয়া আরও বলেন, ‘আমি একটা মুক্ত রাশিয়া দেখতে চাই। মুক্ত রাশিয়া প্রতিষ্ঠা করতে চাই। ’

আরও পড়ুন: নাভালনির মৃত্যু নিয়ে স্ত্রী ইউলিয়াসহ বিশ্বজুড়ে পুতিনের সমালোচনা

নাভালনির সমর্থকদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবেও কাজ করেছিল তার ও ইউলিয়ার প্রণয় ও সংসার জীবন। নাভালনিও বলেছিলেন, ইউলিয়াকে ছাড়া একাকি ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে পারতেন না তিনি। মস্কোর সমালোচনায় এতটা দুর্বার হতেও পারতেন না। ইউলিয়ার পারিবারিক নাম ছিল ইউলিয়া আমব্রোসিমোভা। জন্ম ১৯৭৬ সালে মস্কোয়। তাঁর বাবা ছিলেন সর্বজনশ্রদ্ধেয় বিজ্ঞানী বোরিস আমব্রোসিমভ। ইউলিয়া অর্থনীতিতে স্নাতক করেন। সে অনুযায়ী চাকরি শুরু করেছিলেন ব্যাংকে। তবে দুই সন্তানের জন্মের পর চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। নাভালনিও তত দিনে রাশিয়ার একজন বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন। নাভালনি ও ইউলিয়ার দেখা হয়েছিল তুরস্কে, ১৯৯৮ সালে। এর দুই বছর পর বিয়ে করেন দুজন। তখন কিন্তু নাভালনির ভবিষ্যৎ জনপ্রিয়তার কোনো আঁচ পাওয়া যায়নি।  
২০২০ সালে রুশ সাপ্তাহিক সোবেসেদনিককে ইউলিয়া বলেছিলেন, ‘আমি বিখ্যাত হতে যাওয়া কোনো আইনজীবী বা বিরোধীদলীয় নেতাকে বিয়ে করিনি। আমি বিয়ে করেছিলাম অ্যালেক্সি নামের এক তরুণকে। ’
 নাভালনির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ইউলিয়া নাম লিখিয়েছিলেন চলতি শতকের শুরুর দিকে। সে সময় দুজনই লিবারেল ইয়াবলোকো পার্টির সদস্য ছিলেন। তবে নাভালনির শরীরে বিষপ্রয়োগের আগ পর্যন্ত তিনি বলতে গেলে আড়ালেই ছিলেন। এখন তিনি মুক্ত রাশিয়ার পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন। সূত্র বিবিসি।  

news24bd.tv/ডিডি

 

এই রকম আরও টপিক