ড. ইউনূস এখন আসলে কী চাচ্ছেন?

ড.মুহাম্মদ ইউনূস-ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে ছবি।

নিজেকে রক্ষার দুই পলিসি

ড. ইউনূস এখন আসলে কী চাচ্ছেন?

অনলাইন ডেস্ক

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দণ্ডিত নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস অনেকদিন থেকেই প্রকাশ্যে সরকারের বিরোধিতা করে আসছেন। তার বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটনের মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বের একটি প্রভাবশালী মহলকে সবসময়ই আওয়ামী লীগের সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপতথ্য দিয়ে আসছেন। শুধু তাই নয়, বিচার ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি সরকারের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে মুখর।

সম্প্রতি ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া ইন্টারভিউতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, মিয়ানমারের বন্দুকের গুলি যখন গায়ের ওপর লাগছে, ঘরের কাছে পড়ছে, এটা খুব ভালো লক্ষণ নয়। তিনি ডয়েচে ভেলেকে বলেছেন, ‘ আমরা কেউ গণতন্ত্রের বিপক্ষে না, আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে, ন্যায়নীতির পক্ষে৷ এগুলো না থাকলে তো জাতি হিসেবে আমরা টিকে থাকব না৷ তবে মুখ খুলে মানুষ গণতন্ত্রের কথা বলতে পারছে না । ’
কর ফাঁকি দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. ইউনূস ডয়েচে ভেলেকে বলেন, আমার টাকা, আমি রোজগার করি, আমি নিজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি মালিক হব না৷ যেহেতু আমি মালিক হব না, তাই আমি ট্রাস্টে দিয়ে দিতে চাচ্ছি ৷ আমাদের আইনজীবী বলেছেন, আপনি যেহেতু দান করছেন, এটাতে আর কর দেওয়ার কোনো বিষয় নেই৷
তিনি ডয়েচে ভেলের কাছে ওয়ান-ইলেভেনের সময়কার ঘটনা সম্পর্কে বলেছেন,  যদি (রাষ্ট্র পরিচালনা করতে) চাইতাম, তাহলে যখন মিলিটারি আমার বাসায় এসে বসে রইলো সারারাত আমাকে রাজি করানোর জন্য, আমিতো লুফে নিতাম!
উইকিলিকস থেকে ফাঁস হওয়া গোপন নথিতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের প্রধান দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠাতে চেয়েছিলেন এই নোবেলজয়ী। জেনারেল মইন ইউ আহমেদের লেখা বই এবং আরও কিছু নথি থেকে এটি স্পষ্ট ছিল যে, ১-২ বছরের জন্য নয়, বরং দীর্ঘ মেয়াদে অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক সরকার গঠনের জন্য ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন ড. ইউনূস।

ড. ইউনূসের মেয়ে মনিকার তৎপরতা:
একদিকে ড. ইউনূস ডয়েচে ভেলেকে যখন এমন কথা বলছেন তারই কিছুদিন আগে সিএনএনে ক্রিস্টিন আমানপোরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তার যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কন্যা অপেরা মিউজিশিয়ান মনিকা ইউনূস বাংলাদেশের বিচার বিভাগের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। একইসঙ্গে  আমানপোরের বেশ কিছু প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি।
ক্রিস্টিন আমানপোর মনিকাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় তার বাবা’র ভুমিকা কি ছিল ? তখন মনিকা প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন।  
ক্রিস্টিন আমানপোর যখন জানতে চান, তার বাবা’র বিরুদ্ধে যেসব অবিযোগে এখন বিচার চলছে সেসব কি ভিত্তিহীন?
এ প্রশ্নের জবাবও মনিকা ইউনূস সরাসরি দেন নি। তিনি বলেন, ‘ অভিযোগগুলো মূলত তার কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত, যেটা সাধারণভাবে দেওয়ানি আদালতেই নিষ্পত্তি সম্ভব। কিন্তু এগুলোকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে দেখানো হয়েছে। ’
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন,  মনিকা ইউনূস যে কথাটা বলতে চাচ্ছেন, তাতে পরোক্ষভাবে উনি স্বীকার করেই নিয়েছেন যে, এখানে শ্রম আইন লঙ্ঘন হয়েছে। শ্রম আইন ২০০৬ ও বিধিমালা ২০১৫ আইএলও কর্তৃক স্বীকৃত এবং সেখানে ফৌজদারি একটা আলাদা চ্যাপ্টার আছে।

এদিকে  ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দাবি করা হলেও আসলে এই ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো সরকারিভাবে। ১৯৮৩ সালে রাষ্ট্রপতির অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে একটি সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে গ্রামীণ ব্যাংক। আর ড. ইউনূস ছিলেন এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সরকারের নিযুক্ত ও বেতনভুক্ত একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক; কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠাতা নন তিনি।
 
গ্রামীণ ব্যাংক নারীদের ঋণগ্রস্ত করে তুলছে এবং ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে অনেকে আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছেন, এমন অভিযোগগুলোর বিষয়ে সাক্ষাৎকারে মনিকার কাছে জানতে চাওয়া হলে জবাবে তিনি বলেন, ক্ষুদ্রঋণ সুনির্দিষ্ট একটি মডেল, যা সঠিকভাবে অনুসরণ করা না হলে অন্য যেকোনো জিনিসের মতোই তা ব্যর্থ হতে পারে। অর্থাৎ যারা আত্মহত্যা করেছে তাঁরা নিজেদের ভুলের কারণেই করেছে বলে মত দিয়েছেন তিনি।

এদিকে সাক্ষাৎকারে একাধিকবার ড.ইউনূস কেন বাংলাদেশ সরকারের প্রতিহিংসার শিকার তা জানতে চাইলেও এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি মনিকা। আর আইনের যে সকল অসঙ্গতিকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে এই মামলাকে প্রতিহিংসা পরায়ণ দাবি করা হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা সহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি না দিয়ে কেনো প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি প্রদান করা হচ্ছে না এ বিষয়েও কোন ব্যাখ্যা মেলেনি ইউনূসের পক্ষে কাজ করে যাওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে। মনিকার কাছ থেকেও।  

ড. ইউনূসের পক্ষে আন্তর্জাতিক লবিং :
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলা আইনি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে বিভিন্ন সময়ে  বিভিন্নভাবে চলছে আন্তর্জাতিক লবিং। তাকে ‘আইনি হয়রানি’ বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন হিসেবে একটি যৌথ বিবৃতি ছাপা হয়েছে, যে বিবৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ১২ জন সিনেটর। এর আগে বিচার বন্ধে এমনই বিজ্ঞাপন আকারে বিবৃতি দিয়েছেন কয়েকজন নোবেলজয়ী। মজার ব্যাপার সেখানকার অনেক নোবেল জয়ী যে স্বাক্ষর করেছিলেন সেটাই তারা জানেন না বলে সেসময় কাউন্টার পাঞ্চে একটা খবর প্রচারিত হয়েছিল। এরমানে নোবেলজয়ীদের ‘স্বাক্ষর জালিয়াতি’ করছেন ইউনূস এ নিয়েও তখন প্রশ্ন উঠেছিল।  
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে ইউনূসের পরিচিত আছে। আর এসব লবিং, বিবৃতি ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিচার বন্ধের আহ্বানকে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর চাপ প্রয়োগ ও হস্তক্ষেপের সামিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মানবাধিকার রক্ষার নামে গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে যাচ্ছে আমেরিকার জো বাইডেন প্রশাসন। যার মাধ্যমে তারা ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যাকে অনুমোদন দিচ্ছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি তৃতীয়বারের মতো জাতিসংঘে গাজার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো দেয় আমেরিকা। আর এরমাধ্যমে বাইডেন প্রশাসনের দুমুখো নীতি আরও প্রকাশ্যে এসেছে। দেশটি ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকারকে তোয়াক্কা না করলেও বাংলাদেশের মানুষের মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার।  
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি বাহিনীকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে রুল জারি না করার জন্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সম্প্রতি ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে জনসাধারণের তোপের মুখে পড়লেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। বাংলাদেশের নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বন্ধু হিসেবে পরিচিত হিলারি গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বার্লিনে ওয়ার্ল্ড ফোরাম ইভেন্টে বক্তব্য রাখেন। সেখানে গাজা ইস্যুতে ইসরায়েলের পক্ষ নেওয়ায় সাধারণ দর্শকরা তাঁকে যুদ্ধাপরাধী ও ভণ্ড বলে দুয়ো ধ্বনি তোলেন।  
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল জার্মানির বেসরকারি সংস্থা সিনেমা ফর পিস। সেখানে গাজায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হওয়ার বিষয়ে হিলারি ক্লিনটন বলেন, অবশ্যই, ‘আমি এতে অবাক হইনি কারণ যুদ্ধে এমনটি ঘটে। ’
হিলারির বক্তব্য শুনে এক দর্শক বলেন, ‘ইসরায়েল তাদের রক্ষা করছে না। তারা গণহত্যা চালাচ্ছে। যার জন্য আপনারা অর্থ দিচ্ছেন। আবার আপনারা নারী অধিকার নিয়ে কথা বলেন? আপনারা কী এ নিয়ে সিরিয়াস? কীসের নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলছেন।  
আরেক দর্শক হিলারিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি শত শত পাকিস্তানিকে হত্যা করেছেন। আপনি আফগানিস্তান,ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে সমর্থন দিয়েছেন। আপনি যুদ্ধাপরাধী। আপনি ভণ্ড। লজ্জা করে না আপনার। ’
অন্যদিকে, বাংলাদেশ গাজায় নারী-শিশুসহসহ নিরীহ বেসামরিক হত্যার নিন্দায় অটল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে আগ্রাসন ও যুদ্ধ বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে বিশ্বকে অবিচলভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের প্রস্তাবিত দুটি রাষ্ট্রের তত্ত্ব বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন।  
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি একটি পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করেছে যা্র মাধ্যমে শেখ হাসিনার বিরোধিতাকারী শক্তিগুলোর প্রতি সরাসরি সমর্থন দেখাচ্ছে। আর এতেই একের পর এক সরকারবিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে ইউনূস ও তাঁর কন্যা।

নিজের কথাতেই ফেঁসে যাচ্ছেন ইউনূস: 
কর ফাঁকি দেওয়া এবং তার কর্মীদের বেতন না দেওয়ার অপরাধে ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত হয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।  বিশ্লেষকরা বলছেন, গণমাধ্যমকে ব্যবহার করতে ইউনূস দুমুখো নীতি অবলম্বন করছেন।  
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, আমি সাক্ষাৎকার দেওয়ার ক্ষেত্রে সব গণমাধ্যমকে স্বাগত জানাই না। বরং এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু গণমাধ্য্যমকে দিই। আর তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার আগে কিছু শর্তও জুড়ে দেওয়া হয়। কারণ বিপদ এড়াতে চাই।
এ কথায় স্পষ্ট যে নির্দিষ্ট গণমাধ্যমে কথা বলতে পছন্দ করেন ইউনূস, যা গণতন্ত্র পরিপন্থী।  
অনেক সাংবাদিক বলছেন, পলাতক, খুনি, সামরিক স্বৈরশাসকেরা মিডিয়ার সাথে এটিই করতে পছন্দ করে। তারা গণমাধ্যমকে ‘পাবলিক রিলেশন অফিসার’র মতো করে ব্যবহার করেন।  

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউনূসের  বর্তমান রাজনৈতিক বক্তৃতা ন্যায়বিচার এড়ানোর জন্য দেওয়া। নিজেকে নির্দোষ হিসাবে উপস্থাপনের জন্য তিনি নিজেকে ভুক্তভোগী বানানোর চেষ্টা করছেন।  
এদিকে সাক্ষাৎকারে একের পর এক মিথ্যা বলে যাচ্ছেন ইউনূস। তিনি বলেন, তারা আমার অফিসে হামলা চালিয়ে সবকিছু দখল করে নিয়েছেন, কোনো আইন মানা হয়নি। কর্মচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল।  
 কিন্তু ওই কর্মকর্তারা আদালতের নোটিশ ছাড়া তাঁর অফিসে বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে ঢুকেছে তা ইউনূস প্রমাণ করতে পারেননি।   জাতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ঘেঁটে দেখা গেছে যে,  গত ১২ ফেব্রুয়ারি ইউনূসের কাছ থেকে দায়িত্ব নিতে আসা কর্মকর্তাদের তিনি স্বাগত জানিয়েছেন এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।
কর ফাঁকির মামলায় অভিযুক্ত হয়ে ইউনূস এরইমধ্যে কর আদায় করেছেন। তাঁর মানে হলো তিনি শাস্তি মেনে নিয়েছেন। এরপরেও তিনি সাক্ষাৎকারে নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন।
নতুন গুঞ্জন ছড়াচ্ছে :
শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে দণ্ড পাওয়া শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শাস্তি থেকে রক্ষা করতে লবিংয়ে নেমেছেন তার কন্যা মনিকা ইউনূস। সরকারের সঙ্গে আপোস প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ফোরকে দেয়া সাক্ষাতকারে কোনো এক সময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ড. ইউনূস একসঙ্গে কাজ করেছেন জানিয়ে মনিকা বর্তমান আওয়ামী  সরকারের সাথে সমঝোতার প্রস্তাব দেন।
মনিকা বলেন, ‘আমি আশা করি, সেই সময়টি আবার ফিরে আসুক। যদি তারা (শেখ হাসিনা ও ড. ইউনূস) আবারো একসঙ্গে কাজ করেন, তাহলে তা হবে চমৎকার,’ বলেন মনিকা।
ড. মুহম্মদ ইউনূসের কন্যা মনিকা ইউনূস সিএনএন এর খ্যাতনামা সাংবাদিক ক্রিস্টিনা আমানপোর কাছে একই কথা বলেছেন।  সাক্ষাত্কারে তিনি ড. ইউনূসকে কাজে লাগানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তার এই বক্তব্যের পর ড. ইউনূস ইস্যু নতুন মোড় নিয়েছে। অনেকে মনে করছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস এখন সরকারের সাথে আর বিরোধে যেতে রাজি নয়। বরং সরকারের সাথে আপোষ সমঝোতা করতে চান। এই আপোষ সমঝোতা করার বার্তাটি তার কন্যার মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  

ক্রিস্টিনা আমানপোর সিএনএন এর প্রথিতযশা সাংবাদিক এবং বিশ্বের বরণ্যে সাংবাদিকদের মধ্যে একজন। এই সাক্ষাৎকারটি যে মার্কিন ডেমোক্র্যাটদের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং ড. ইউনূসের সম্মতিতে দেওয়া হচ্ছে, এ নিয়ে কোন সন্দেহই নেই। ড. মুহম্মদ ইউনূসের মনের কথাটি মনিকা ইউনূস বলেছেন এমনটি মনে করেন অনেকে। আর এ কারণেই মনিকা ইউনূসের এই বক্তব্যের পর আসলে ড. ইউনূসের সঙ্গে সরকারের কোনো সমঝোতা হবে কি না, এ নিয়ে নানামুখী আলাপ আলোচনা চলছে।  

গুঞ্জন রয়েছে এছাড়াও সরকারের ভেতরে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সরকারের ভেতরে প্রভাব বিস্তার করে এরকম একজনের সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে তার বিরুদ্ধে মামলাগুলোর ব্যাপারে যেন সরকার একটি সহনশীল অবস্থা গ্রহণ করে এবং উদারতা দেখায় সে জন্য সরকারের সঙ্গে ড. ইউনূসের পক্ষের লোকজন যোগাযোগ করছে বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে। ড.ইউনূস ডয়েচে ভেলে’র সাক্ষাৎকারেও  এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন তিনি সরকারের দুরেরও না কাছেরও না। আরেকটি প্রশ্নের জবাবে বলেন,সরকার চাইলে সহায়তা করবেন ।  

news24bd.tv/ডিডি