'বাস থেকে নেমে দেখি জামা-পায়জামা সবই কাটা'

ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

'বাস থেকে নেমে দেখি জামা-পায়জামা সবই কাটা'

'বাস থেকে নেমে দেখি জামা-পায়জামা সবই কাটা'
নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

বাসে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত নানারকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে নারীদের। বিশেষ করে কর্মজীবী নারী ও শিক্ষার্থীরা এ ধরণের পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন বেশি। শারীরিকভাবে হয়রারানির পাশাপাশি নানা ধরণের কটুক্টি, অশ্লীল মন্তব্য ছুড়ে দিচ্ছে এক শ্রেণির বখাটে। অনেকে নিরবে দিনের পর দিন এগুলো সহ্য করে যাচ্ছেন আর জ্বলে পুড়ে মরছেন নিজের ভেতরে।

কেউ আবার প্রতিবাদ করছেন। ইদানিং এসব নারীদের প্রতিবাদের একটি প্লাটফরম হয়ে দাঁড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সেখানে মনের কষ্টের কথাগুলো শেয়ার করছেন অনেকে।  

এমনই একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ফেসবুকে তুলে ধরেছেন একটি বেসকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনন্যা (ছদ্মনাম)।

তিনি  লিখেছেন, ''আজকে ভার্সিটি থেকে আসার সময় রামপুরা থেকে বাসে উঠি আমি আর আমার ফ্রেন্ড বাসায় আসার জন্য। আমার দুই সিটে আমি একা। বাসের সিটটা একটু নড়া চড়া করতেছিলো। ব্রেক করলে সিটটা সামনে চলে যাচ্ছিল। হতেই পারে, পাবলিক বাস।

পিঠের সিট আর বসার সিট এর জয়েন্ট দুইয়ের মাঝে ফাঁক হয়ে যাচ্ছিলো বারবার। হঠাৎ মনে হলো ওই ফাঁক দিয়ে পেছনের লোকটা হাত দেওয়ার চেষ্টা করছে। বুঝতে পেরে আমি পিছনে লোকটার দিকে তাকায় দেখলাম, বয়স ৪৫ এর বেশি হবে। আমার তাকানো দেখে সে কিছুই বুঝলো না ভাব। আমি সরে পাশের সিটে গিয়ে বসলাম। বাস থেকে নামার পর আমার ফ্রেন্ড বলতেছে তোর জামা ছিড়লো কেমনে? তখন দেখি এ অবস্থা! আমি তো থ! তখন বুঝলাম ওই যে ওই সময় মনে হয়েছিল, ওই সময়ই তাইলে! ভেবে পাইনা কি পাইলো এটা করে,কেনো করলো? তারপর ভাবলাম পায়জামাটা দেখি তো, তখন হাত দিয়ে দেখি পায়জামাও!  এত কিছু কখন কেমনে করলো। আমি কিচ্ছু টের কেমনে পাইলাম না। হাত পা কাঁপা শুরু হয়ে গেছে তারপর...''

রাজধানীতে কর্মরত এক নারী সাংবাদিকও সামাজিক মাধ্যমে এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, সেদিন বসুন্ধরা গেটে বাস থেকে নামলাম, দেখি আমার সামনে এক মেয়ে খুব বিব্রত হয়ে রিকশা খুঁজছে। ভাল করে তাকিয়ে দেখি তার সাদা জামা ব্লেড কিংবা এনটি কাটার জাতীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে অনেক জায়গায় কেটে দেওয়া। সেজন্য মেয়েটি এত বিব্রতবোধ করছে। ঠিক তার ৫ দিন পরে আমি অফিস থেকে ফিরছি, পরনে ছিল শাড়ি। পেছনের সিট থেকে কেউ আমার কোমরে হালকা স্পর্শ করছিল। আমি কয়েকবার হাত দিয়ে সরিয়ে দিলাম। ভেবেছিলাম পেছনের ভদ্রলোক পা তুলে বসেছে তাই তার পায়ের নখ সিটের ফাঁক দিয়ে আমার কোমরে লাগছে। কিন্তু না, বাসায় ফিরে দেখি আমার শাড়ির ১০/১২ জায়গায় ব্লেড দিয়ে কেটে দেওয়া।

আজ আরেকজনের কাছে শুনলাম আরেক মেয়ের জামা- পাজামা সব কেটে দিয়েছে বাসের কেউ। অদ্ভুত ঘটনা! শহরে নিশ্চয়ই এমন কোনও বিকৃত মানসিকতার সাইকো ঘুরে বেড়াচ্ছে, যে নারীদের ছিন্ন বস্ত্রে দেখে, বিব্রত হতে দেখে বিকৃত সুখ পাচ্ছে। আমি সেদিন পেছনের ছেলেটিকে একঝলক দেখেছিলাম। তাকে দেখে আর যাই হোক পকেটমার মনে হয়নি।

সম্পর্কিত খবর