দাওয়াতের ক্ষেত্রে সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি

দাওয়াতের ক্ষেত্রে সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি

 হাদি-উল-ইসলাম

দাওয়াতি কাজ তথা দ্বিন প্রচারের কাজে পারস্পরিক সহযোগিতা করা দাওয়াতের একটি অপরিহার্য বিষয়। কোনো দাঈ যেন ‘একলা চলো’ নীতি অবলম্বন না করেন। দাঈরা চলবেন ‘সুন্নাহর আলোকে উম্মাহকে সঙ্গে নিয়ে। ’ সবাই মিলে একে অন্যকে সাহায্য করবেন, সহযোগিতা করবেন, পরস্পর শলাপরামর্শ করবেন।

আল্লাহর পথে দুজন দুজন, তিনজন তিনজন এবং চারজন চারজন করে দাঁড়িয়ে যাবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি বলো, আমি তোমাদের একটি বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছি, তা এই যে তোমরা আল্লাহর জন্য দুই দুইজন বা এক একজন করে দাঁড়িয়ে যাও। ’ (সুরা : সাবা, আয়াত : ৪৬)

দুনিয়াতে খারাপ পথের দাওয়াতদাতারা সবাই একাট্টা। সেখানে আল্লাহর পথের দাঈরা কেন ঐক্যের শামিয়ানায় জড়ো হবেন না? দাওয়াতের পথে কে কোথায় বিদ্যা-বুদ্ধিতে ভুল করছেন, দাওয়াতের পদ্ধতিতে ত্রুটি করছেন, কেন তাঁরা ভালোবেসে একে অন্যকে বলবেন না? আমরা যখন কোরআন ও সুন্নাহর বাণীর দিকে তাকাই, তখন আমরা তো দেখি আল্লাহ তাআলা মুমিনদের এমন সব গুণ তুলে ধরেছেন, যাতে প্রতীয়মান হয়, তাঁরা একতাবদ্ধ এবং একে অন্যকে সাহায্যকারী।

তিনি বলেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও নারীরা পরস্পরের বন্ধু। তারা সৎকাজের আদেশ দেয় ও অসৎ কাজে নিষেধ করে। তারা সালাত কায়েম করে ও জাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে। এসব লোকের প্রতি আল্লাহ অবশ্যই অনুগ্রহ বর্ষণ করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাবান। ’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৭১)

অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যে একটা দল থাকা আবশ্যক, যারা মানুষকে কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে এবং অন্যায় থেকে নিষেধ করবে। বস্তুত তারাই হলো সফলকাম। তোমরা তাদের মতো হয়ো না, যারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং স্পষ্ট প্রমাণাদি এসে যাওয়ার পরও তাতে মতভেদ করেছে। এদের জন্য আছে ভয়ংকর শাস্তি। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪-১০৫)

যারা মন্দ ও খারাপ কাজের দাওয়াত দেয় ওরা দ্বিনের দাঈদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিভেদই চায়। ওরা জানে, দাঈদের মধ্যে ঐক্য ও সহযোগিতা তাদের জন্য সফলতা বয়ে আনবে। পক্ষান্তরে অনৈক্য ও অসহযোগিতা তাদের ব্যর্থতা ও অসফলতা নিশ্চিত করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো। আপসে ঝগড়া কোরো না। তাহলে তোমরা শক্তিহীন হবে এবং তোমাদের প্রতিপত্তি উবে যাবে। তোমরা ধৈর্য ধারণ করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে থাকেন। ’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ৪৬)

এ ক্ষেত্রে আমাদের করণীয় হবে আল্লাহ যেরূপ আদেশ করেছেন তেমনটা হওয়া। আমরা বরং ঠিক তেমন গুণাবলির অধিকারী হবো, যেমনটা আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এরা সবাই তোমাদের একই উম্মতভুক্ত। ’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৯২)

তাই দ্বিন প্রচারকদের উচিত বিভক্তি পরিহার করে ঐক্যের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করা।

এই রকম আরও টপিক