তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ রুখতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে জার্মানি ?

পুতিন ও শলৎজ--এএফপি ফাইল ছবি।

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ রুখতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে জার্মানি ?

অনলাইন ডেস্ক

চলতি বছরের জানুয়ারিতে জার্মান সংবাদপত্র বিল্ড একটি প্রতিবেদনে কিছু নথি ফাঁস করে জানায় যে, রাশিয়া  চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধিয়ে দিতে পারে । এ যুদ্ধের শুরু হিসেবে বলেছে সেপ্টেম্বরে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ বাড়ানোর পাশাপাশি লিথুনিয়া ও পোল্যান্ডে হামলা চালাতে পারে মস্কো। পোলাল্ডে হামলা চালালে এর তাপ এসে পড়বে জার্মানির ওপর। ফলে জার্মানিও প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের।

 
জার্মান সংবাদপত্র বিল্ড জানায়, জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে একটি শ্রেণিবদ্ধ সামরিক তথ্য পেয়েছে তারা। যেখানে বলা হয়েছে, জার্মান সশস্ত্র বাহিনী পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার ‘হাইব্রিড’ আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিল্ডের দাবি, রাশিয়া সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্র দেশগুলোতে আক্রমণ করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধ আরও প্রসারিত করতে পারে। আর এভাবেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে।
 
অন্যদিকে রাশিয়া বলছে, ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব যে জড়িত, এসব তথ্য তাই প্রমাণ করে। এএফপির প্রতিবেদনে মঙ্গলবার ( ৫ মার্চ) বলা হয়, ১ মার্চ রাশিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত আরটি চ্যানেলের প্রধান মার্গারেট সিমোনিয়ান টেলিগ্রামে ৩৮ মিনিটের সেই অডিও রেকর্ড পোস্ট করেন। সেখানে তিনি বলেন, জার্মান সেনা কর্মকর্তারা ক্রিমিয়ায় সম্ভাব্য হামলা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
মার্গারেট বলেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জার্মানির বিমানবাহিনীর প্রধান জেনারেল ইঙ্গো গেরহার্টজ ও উচ্চপদস্থ তিন কর্মকর্তার মধ্যে এই কথোপকথন হয়েছিল।
ইউক্রেন বাহিনীর জার্মানির তৈরি শক্তিশালী টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্রের সম্ভাব্য ব্যবহার এবং ব্যবহার করলে তার সম্ভাব্য প্রভাব কী হতে পারে—রেকর্ডিংয়ে এমন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে শোনা গেছে।

রেকর্ডিংয়ে সশস্ত্র বাহিনীর উচ্চপদস্থ এই তিন কর্মকর্তা টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্রের সম্ভাব্য ব্যবহার এবং কতটি ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো হতে পারে—সেসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
আলোচনার একপর্যায়ে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ক্রিমিয়াকে যুক্তকারী কার্চ সেতুটি ধ্বংস করা হবে কি না, তা নিয়ে কথা বলেন তাঁরা। ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়াকে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে।
জার্মান চ্যান্সেলর শলৎজ এই রেকর্ডিং ফাঁস হওয়াকে  ‘খুবই ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করেছেন। এতে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সঙ্গে ঐক্যে ফাটল ধরতে পারে।
ওলাফ শলৎজ প্রকাশ্যেই ইউক্রেনকে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র দেবেন না বলে ঘোষণা দেন। এখন এই কথোপকথন ওলাফ শলৎজ কী কারণে এমন ঘোষণা দিয়েছেন, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

এদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ গতকাল সোমবার ( ৪ মার্চ)  বলেছেন, রেকর্ডিংয়ের কথোপকথনই প্রমাণ করে পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে। জার্মানির সশস্ত্র বাহিনী বুন্দেসওয়ের রুশ ভূখণ্ডে হামলার পরিকল্পনা করেছে।  
বর্তমানের রুশ নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ টেলিগ্রামে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘জার্মানি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরাও পাল্টা জবাব প্রয়োজনে দিবো’।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়  সোমবার মস্কোয় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। তবে জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তলবের বিষয়টি নাকচ করে দেয়।  

news24bd.tv/ডিডি