‘ফিজিক্যাল থেরাপির নামে অপচিকিৎসা করে সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে’

‘ফিজিক্যাল থেরাপির নামে অপচিকিৎসা করে সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে’

নিউজ টোয়েন্টিফোর হেলথ

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক অধিদপ্তরের কারওয়ান বাজারস্থ প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ফিজিক্যালথেরাপি এসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ, ফিজিওথেরাপি সেন্টার পরিচালনাকারী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দের অংশগ্রহণে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ বিষয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ. এইচ এম সফিকুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ফিজিক্যালথেরাপি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. মুহাম্মদ তৌহিদুজ্জামান, সহ-সভাপতি ডা. মো. শফিউল্লাহ প্রধান ও স্বাস্থ্য বিভাগ, ঢাকার সহকারী পরিচালক ডা. আসিফ ইকবাল।   

আরো উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ ফিজিক্যালথেরাপি এসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ, ফিজিওথেরাপি সেন্টার পরিচালনাকারী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

সভার শুরুতে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা গ্রহণের জন্য মানুষের যাতায়াত বৃদ্ধি পেয়েছে। সে প্রেক্ষিতে ফিজিক্যাল থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির অদক্ষ ও অসৎ লোক মিথ্যা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফিজিক্যাল থেরাপির নামে অপচিকিৎসা করে এই সেবা সেক্টরের সুনাম ক্ষুন্ন করছেন।

ডা. মুহাম্মদ তৌহিদুজ্জামান বলেন, বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় চিকিৎসা সেবা হচ্ছে ফিজিক্যাল থেরাপি।

একে পুঁজি করে অনেক ফিজিক্যাল সেন্টার গড়ে উঠেছে যেখানে যথাযথ চিকিৎসা প্রদান করা হয় না। বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন-২০১৮ অনুযায়ী ফিজিক্যাল থেরাপিস্টদের চার বছর মেয়াদি স্নাতক ও এক বছরের ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করতে হবে। ক্ষেত্র বিশেষে দেখা যায় অদক্ষ লোক ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট সেজে সেবা দিচ্ছেন। এতে গ্রাহকদের অর্থহানির পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়াও এ সেক্টরের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। তিনি এই সেক্টরের সুনাম রক্ষার পাশাপাশি সঠিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অধিদপ্তরের সহযোগিতা কামনা করেন।

ডা. মো. শফিউল্লাহ প্রধান বলেন, জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি-২০১১ প্রণয়নে অধিদপ্তরের বর্তমান মহাপরিচালকের অবদান অনস্বীকার্য। ফিজিক্যাল থেরাপির সেবা সম্পর্কে অনেক ভোক্তারই সঠিক ধারনা নেই। সেই সুযোগে এক শ্রেণীর অসাধু ও অদক্ষ লোক সেবার নামে প্রতারণা করছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতার কথা বলেন।

ডা. আসিফ ইকবাল বলেন, ফিজিক্যাল থেরাপি একটি ম্যাজিক থেরাপি। অনেক রোগ ঔষধের মাধ্যমে নিরাময় করা সম্ভব হয় না কিন্তু ফিজিক্যাল থেরাপির মাধ্যমে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।  

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ভোক্তা অধিকারের ব্যাপ্তি এমন যেখানে ভোক্তার অধিকার রয়েছে সেখানেই অধিদপ্তর কাজ করবে। বর্তমানে ফিজিক্যাল থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান উল্লেখ্যযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকৃত ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট এর মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ না করে অদক্ষ লোকের মাধ্যমে সেবা নিলে সুস্থ্যতার পরিবর্তে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ ফিজিক্যালথেরাপি এসোসিয়েশনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ফিজিক্যাল থেরাপির নামে অপচিকিৎসা করা হলে তার তথ্য প্রদানের জন্য অনুরোধ জানান। এক্ষেত্রে অধিদপ্তর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বরাবর পত্র প্রেরণ করে অধিদপ্তরে তলব করে ব্যাখ্যা গ্রহণ করা হবে।  

অপরদিকে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে অধিদপ্তরে দায়েরকৃত ইভ্যালির গ্রাহকদের অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে পাওনা টাকা ফেরত প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উল্লেখ্য, আজ ১০০ জন অভিযোগকারীকে দশ লক্ষ টাকা ফেরত প্রদান করা হয়।

news24bd.tv/health