আমাদের দেশে সেফটি কালচারের অভাবে দুর্ঘটনা বাড়ছে

জাহিদ হোসেন

আমাদের দেশে সেফটি কালচারের অভাবে দুর্ঘটনা বাড়ছে

জাহিদ হোসেন

‘জনবলের অভাব’ এই কথাটি একটা অজুহাত বলে মনে হয়। একবার জার্মানির ন্যুরেমবার্গ বেড়াতে গিয়েছি। রেল স্টেশনে নেমেই একটা উইকলি টিকিট কিনে নিলাম। ট্রেনে বাসে সাত দিনে চষে ফেললাম শহর।

কিন্তু একবারও কেউ আমার টিকিট চেক করলো না। ফিরে আসার আগের রাতে হোস্ট বন্ধুকে কথায় কথায় বললাম, ‘টিকিটটা না কাটলেই বা কী হতো, কেউ তো চেক করলো না’।  উনি জবাব দিলেন, ‘কেউ ধরে নি তাই আপনার মনে হচ্ছে সহজেই ফাঁকি দেওয়া যেতো। কিন্তু আমরা যারা এখানে থাকি তারা জানি একবার ধরলে জরিমানা দিয়ে ফতুর হয়ে যাবার দশা হতো।
 
‘যদি ধরা পড়ি তাহলে আগাপাশতলা সাইজ হয়ে যাব’। এই  ভয় থাকায় কেউ বিনা টিকিটে এখানে বাসে টেনে চড়ে না এবং এইভাবে, যুগের পর যুগ ধরে, টিকিট কেটে বাসে ট্রেনে চড়তে চড়তে,  জার্মানদের টিকিট কাটাটা অভ্যাস বা কালচারের অংশ হয়ে গেছে। কেউ এখানে ভাবতেই পারে না যে, বিনা টিকিটে যাওয়া যায়। ‘পর্যাপ্ত জনবল’ বলে আসলে কিছু হয় না। সবসময়েই সব দেশেই চোরের তুলনায় পুলিশ কম থাকে। তাহলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণের উপায়? উপায় হলো আইনের সঠিক প্রয়োগ। দশজন অন্যায়কারীকে হয়ত ধরা যাবে না, কিন্তু যাকে ধরা হবে তার উপর আইনের সঠিক প্রয়োগটা একবার করা হলে বাকি নয় জন সতর্ক হয়ে যাবে।  
একটা শপিং কমপ্লেক্স বা একটা মাল্টি স্টোরিড বিল্ডিং ফায়ার এক্সটিংগুইশারের মেয়াদ না থাকায় সিলগালা হয়ে যাক, কেউ কোনো তদবির না করুক, মালিকের আইন অনুসারে সাজা হোক, দেখবেন রাত পোহাবার আগেই অন্য বিল্ডিংগুলোও সতর্ক হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে, শাস্তি কেবল প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য নয়, একই অপরাধ প্রতিরোধের জন্যও। আইনের প্রয়োগ হতে থাকলে, দোষী শাস্তি পেতে থাকলে, ক্রমে  একটা ‘সেফটি কালচার’ গড়ে ওঠে। তখন রাজউকের একজন অফিসার একাই এক হাজার জনের সমান হয়ে উঠবে।  

news24bd.tv/ডিডি
 

এই রকম আরও টপিক