রিজিক সম্পর্কে কোরআনে যা বলা হয়েছে

রিজিক সম্পর্কে কোরআনে যা বলা হয়েছে

রিজিক সম্পর্কে কোরআনে যা বলা হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক

জীবন ধারণ ও সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য রিজিকের গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে হালাল উপায়ে রিজিক অন্বেষণের নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে বর্ণিতে হয়েছে, অতঃপর যখন জুমার নামাজ শেষ হয়ে যাবে তখন তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর। ’ (সূরা জুমুয়াহ, আয়াত, ১০)

রিজিক অনুসন্ধানের জন্য মানুষ হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে।

রিজিক নিয়ে মানুষ অনেক দুশ্চিন্তায় ভোগে। পৃথিবীতে প্রেরিত প্রত্যেকের রিজিক আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নির্ধারিত। সবাই তার জন্য নির্ধারিত রিজিক লাভ করবেন নির্দিষ্ট নিয়মে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা তায়ালা বিভিন্ন জায়াগায় রিজিক নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এখানে কোরআনের আলোকে রিজিকের বর্ণনা তুলে ধরা হলো-

পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘পৃথিবীর প্রত্যেক জীবের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর। তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয়। সবকিছুই (উল্লেখ) এক সুবিন্যস্ত কিতাবে (লওহে মাহফুজে) রয়েছে। ’ (সূরা হুদ, আয়াত, ৬)

অপর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আকাশে রয়েছে তোমাদের রিজিক ও প্রতিশ্রুত সব কিছু। ’ (সূরা জারিয়াত, আয়াত, ২২)

মানুষ রিজিকের জন্য চেষ্টা করে। চেষ্টা করা স্বাভাবিক রীতি। তবে রিজিকদাতা একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। কোরআন মাজিদে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ হলেন তিনি, যিনি রিজিকদাতা এবং মহাশক্তিধর ও মহাপরাক্রমশালী। ’ (সুরা আয যারিয়াত, আয়াত, ৫৮)

মানুষ চেষ্টা করার পরও অনেক সময় রিজিকে কমবেশি হয়। এটি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে পরীক্ষা। কোরআনে এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব, কখনো ভয়ভীতি, কখনো অনাহার দিয়ে, কখনো তোমাদের জানমাল ও ফসলাদির ক্ষতির মাধ্যমে। (এমন পরিস্থিতিতে ধৈর্যধারণ করতে হবে) তুমি ধৈর্যশীলদের (জান্নাতের) সুসংবাদ দান করো। ’ (সূরা বাকারা, আয়াত, ১৫৫)

আরও বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয় তোমার রব যাকে ইচ্ছা তার জন্য রিজিক বাড়িয়ে দেন এবং যাকে ইচ্ছা তার জন্য রিজিক সীমিত করে দেন। আর অবশ্যই তিনি তার বান্দাদের সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞাত এবং প্রত্যক্ষদর্শী। ’ (সূরা বনি ইসরাঈল, আয়াত, ৩০)

কোরআন মাজিদে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘পার্থিব জীবনের ওপর কাফেরদের উন্মত্ত করে দেওয়া হয়েছে। আর তারা ইমানদারদের প্রতি লক্ষ করে হাসাহাসি করে। পক্ষান্তরে যারা পরহেজগার তারা সেই কাফেরদের তুলনায় কেয়ামতের দিন অত্যন্ত উচ্চমর্যাদায় থাকবে। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সীমাহীন রুজি দান করেন। ’ (সূরা আল বাকারা , আয়াত, ২১২)

পার্থিব জীবনে পরিস্থিতি ও অবস্থার ওপর ভিত্তি করে মানুষ রিজিক নিয়ে টেনশন করে থাকে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা রিজিক নিয়ে চিন্তা-টেনশন না করতে অভয়বাণী শুনিয়েছেন কোরআনে। বর্ণিত হয়েছে, ‘এবং তিনি তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দান করেন যার উৎস সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই নেই। যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে তিনিই তার জন্য যথেষ্ট। ’ (সূরা আত ত্বালাক, আয়াত, ৩)।  

আল্লাহ আরও বলেন, ‘এমন কে আছে, যে তোমাদের রিজিক দান করবে? যদি তিনি তাঁর রিজিক বন্ধ করে দেন?’ (সুরা মুলক, আয়াত ২১)।  

রিজিক বলতে মানুষ সাধারণত খাদ্যসামগ্রী বুঝে থাকে। কিন্তু রিজিক মানে শুধু খাদ্যসামগ্রী আর সম্পদ নয়। বরং জীবন-উপকরণের সবকিছু। আবার আল্লাহ সবাইকে সমানভাবে রিজিক দান করেন না। তিনি বলেন, ‘যদি আল্লাহ তায়ালা তার সব বান্দাদের প্রচুর রিজিক দান করতেন, তাহলে তারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করত। বরং তিনি যে পরিমাণ চান তার জন্য ততটুকুই রিজিক নাজল করেন। ’ (সূরা শুয়ারা, আয়াত, ২৭)।  

রিজিকের জন্য মানুষকে চেষ্টা করতে হবে। তবে চেষ্টার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসাও রাখতে হবে। কারণ, সবাই তার নির্ধারিত রিজিক অবশ্যই পাবে। এ বিষয়ে সুসংবাদ দিয়ে  আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘হে মানুষ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। ধনসম্পদ সংগ্রহে উত্তম পন্থা অবলম্বন করো। কেননা কেউ তার রিজিক পরিপূর্ণ না করে মৃত্যুবরণ করবে না। যদিও তা অর্জনে বিলম্ব হোক না কেন। ’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)

news24bd.tv/aa