‘অশনি সংকেত’ থেকে বইছে ‘পেয়ারার সুবাস’

আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বদের কয়েকজন

বিশ্ব দরবারে দেশের সিনেমার সাফল্য

‘অশনি সংকেত’ থেকে বইছে ‘পেয়ারার সুবাস’

মরিয়ম রিমু

বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫৩ বছর হতে যাচ্ছে। এই ৫৩ বছরে বাংলাদেশের সিনেমা জগৎ একটু একটু করে উন্নতির চূড়ায় পৌঁছেছে। তবে এর পেছনের কারিগর কিন্তু একজনই। তিনি হলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনিই প্রথম উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে এ দেশের সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে চলচ্চিত্রের ভূমিকা অপরিসীম।  ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদে বিল পাসের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা (ইপিএফডিসি) প্রতিষ্ঠত হয়।  এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেন শেখ মুজিবুর রহমান।   পরে  এফডিসি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের ভিত্তি স্থাপিত হয়।
  ১৯৫৯ সালে থেকে নিয়মিতভাবে প্রতিবছর চলচ্চিত্র মুক্তি পেতে থাকে। পরে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই সংস্থার নাম বদল করে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন’ (বিএফডিসি) নামকরণ করা হয়। তবে ১৯৫৭ সালের আইনের অধীনেই এখনো চলছে বিএফডিসি। এরপর থেকে প্রতিবছর নিয়মিত চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়ে আসছে। বর্তমানে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রশংসিত হচ্ছে বাংলাদেশের সিনেমা।  

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়নে ১৯৭৩ সালে দেশে সরকারিভাবে ১০০টি সিনেমা হল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরবর্তীতে চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান, ফিল্মসিটি নির্মাণ ও এফডিসি সংস্কারসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

ঢাকাই সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি (এফডিসি) 

১৯৫৬ সালের ৩ আগস্ট মুক্তি পায় ঢাকায় নির্মিত প্রথম সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’। এরপর থেকেই মূলত চলচ্চিত্র নিয়ে ঢাকাই মানুষের আগ্রহ, আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নের বিস্তার ঘটে। যা টের পেয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৫৭ সালে যাত্রা শুরু করা এফডিসিকে কেন্দ্র করেই ঢাকাই চলচ্চিত্রের সোনালি যুগের সূচনা হয়েছিল। বাংলা চলচ্চিত্রের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত এফডিসি। ১৯৫৯ সাল থেকে এফডিসিতে চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছে। চলচ্চিত্রশিল্প অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে। বর্তমান সরকার বিভিন্ন সময় এফডিসির বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে অবদান রেখে চলচ্চিত্রশিল্পকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

বিশ্বের চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশি সিনেমা

অশনি সংকেত
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের খ্যাতনামা অভিনেত্রী ববিতা। চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ সিনেমায় অভিনয় করে বাংলাদেশকে পৌঁছে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনে। ১৯৭৩ সালে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘অশনি সংকেত’-এর জন্য বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন বেয়ার পুরস্কার অর্জন করে। সত্যজিৎ রায়ের 'অশনি সংকেত' ছবিতে অনঙ্গ বৌ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ববিতা।

মাটির ময়না
ফ্রান্সের সম্মানজনক কান চলচ্চিত্র উৎসব পর্যন্ত পৌঁছে গেছে বাংলাদেশের সিনেমা। এ অর্জন বাংলাদেশের বিনোদন জগতের উন্নতির বড় ধাপ বলাই যায়। প্রয়াত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ পরিচালিত ‘মাটির ময়না’ সিনেমার মাধ্যমে ৫৫তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে অভিষেক ঘটে বাংলাদেশি সিনেমার। এরপর ধাপে ধাপে বাংলাদেশি আরও কয়েকটি সিনেমা কানে প্রতিযোগিতা করে।

শুনতে কি পাও!
প্যারিসে অনুষ্ঠিত ‘সিনেমা দ্যু রিলে’র ৩৫তম উৎসবে কামার আহমাদ সাইমনের প্রথম ছবি ‘শুনতে কি পাও! সিনেমাটি পুরস্কৃত হয়। পায় 'গ্রাঁপ্রি'পুরষ্কার।  ২০১৪ সালে মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত এশিয়ার অন্যতম প্রামাণ্য উৎসব 'মিফে'তে এই একই সিনেমা শ্রেষ্ঠ ছবির সর্বোচ্চ পুরষ্কার 'স্বর্ণশঙ্খ' পদক লাভ করে।  

রেহানা মরিয়ম নূর 
‘মাটির ময়না’ ২০০২ সালে ৫৫তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্যারালাল বিভাগের অংশ ডিরেক্টরস ফোর্টনাইটে নির্বাচিত হয়েছিল। এর ২০ বছর পর ৭৪তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ ‘আঁ সার্তে রিগা’-তে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশের আরেক সিনেমা ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। কান চলচ্চিত্র উৎসবের ১৮টি দেশের সিনেমার মধ্যে প্রতিযোগিতা বিভাগে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশের ছবি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’।

একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের একজন শিক্ষক রেহানা মরিয়ম নূরকে ঘিরে এ সিনেমার গল্প। এটির পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন, আফিয়া জাহিন জাইমা, কাজী সামি হাসান, আফিয়া তাবাসসুম বর্ণ, ইয়াছির আল হক, সাবেরী আলম প্রমুখ।

মুজিব: একটি জাতির রূপকার
বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ ৭৫তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রের ট্রেলার প্রদর্শিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই বায়োপিকে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেন আরিফিন শুভ, বঙ্গমাতার চরিত্রাভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। শেখ হাসিনার চরিত্রে নুসরাত ফারিয়া, তাজউদ্দীন আহমদের চরিত্রে রিয়াজ আহমেদসহ প্রায় শতাধিক বাংলাদেশি এতে অভিনয় করেছেন। একই আসরে অনন্ত-বর্ষা অভিনীত নেত্রী: দ্য লিডার ছবির ট্রেলার প্রদর্শিত হয়।

মা
৭৬তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয় বাংলাদেশি সিনেমা ‘মা’। মার্শে দ্যু ফিল্মের আওতায় পালে দে ফেস্টিভ্যালে ভবনের পালে ই থিয়েটারে বাংলাদেশের একমাত্র সিনেমা হিসেবে প্রিমিয়ার ‘মা’ সিনেমা। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই সিনেমার পরিচালক অরণ্য আনোয়ার। সিনেমাটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ঢালিউড চিত্রনায়িকা পরীমনি।

এছাড়া কান চলচ্চিত্র উৎসবে মার্শে দ্যু ফিল্মে ভারতের এনএফডিসি ফিল্ম বাজার থেকে আমন্ত্রিত হয়েছিল নুহাশ হুমায়ূনের প্রথম চলচ্চিত্র ‘মুভিং বাংলাদেশ’।

২০১৬ সালে কানের মার্কেট স্ক্রিনিংয়ে ‘অজ্ঞাতনামা’ নিয়ে পৌঁছেন তৌকীর আহমেদ। তার সঙ্গী ছিলেন বিপাশা হায়াত। একই আসরে অমিতাভ রেজা চৌধুরী দেখিয়েছেন ‘আয়নাবাজি’। ২০১৩ সালে অনন্ত জলিল পরিচালিত ও অভিনীত ‘নিঃস্বার্থ ভালোবাসা’ কান শহরে প্রেক্ষাগৃহ ভাড়া করে দেখানো হয়। ২০১৮ সালে জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রযোজক আব্দুল আজিজ পালে দে ফেস্টিভাল ভবনের একটি প্রেক্ষাগৃহ দেখানো ‘পোড়ামন ২’। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে কান চলচ্চিত্র উৎসবে জায়গা করে নেয় অনেক সিনেমা।  

কানের লাল গালিচায় বাংলাদেশি তারকারা

আজমেরী হক বাঁধন
স্বাধীনতা পরবর্তী বিনোদন জগতের সাফল্যের প্রতিফলনের আরেক ধাপ চোখে পড়ার মত কানের রেড কার্পেটে বাংলাদেশি তারকাদের পদচারণা। বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ আসর ৭৪তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছবির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে জিতেছেন পুরস্কার।

জয়া আহসান
বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ৬৬তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রিত হয়ে লাল গালিচায় হেঁটে বেড়ান দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান।
৭৫তম কান চলচ্চিত্র উৎসব মাতিয়েছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এছাড়া ২৮তম বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ সিনেমার প্রিমিয়ার হয়েছে গতবছরের ৯ অক্টোবর। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত সিনেমা নো ল্যান্ডস ম্যান ফ্রান্সের ভেসুল চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিক্স দু পাবলিক পুরস্কার জিতেছে। সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য ফারুকীকে শিকাগো সাউথ এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ১৩তম আসরে সাউথ এশিয়ান ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে।

পরিচালক অরণ্য আনোয়ার
৭৬তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে পদচারণা ঘটে ‘মা’ সিনেমার পরিচালক অরণ্য আনোয়ারের। আসরের পালে দে ফেস্টিভ্যাল ভবনের পালে-ই থিয়েটারে প্রদর্শিত হয় মা সিনেমা।

ফারনাজ আলম
২০২৩ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৬তম আসরে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন ফারনাজ আলম। তিনি একাধারে আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সার, সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ এবং উইমেন্স ওয়ার্ল্ডের পরিচালক।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে বাংলাদেশ

বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রসহ বহু উৎসবে বাংলাদেশের তারকাদের পদচারণা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি ইরানের তেহরানে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৪২তম ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। ইরানের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশি দুই অভিনেত্রী জয়া আহসান এবং তাসনিয়া ফারিণ অংশগ্রহণ করেন। জয়া-ফারিণ দুইজনেই পুরস্কার জিতেছেন। ৪২তম ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জয়া আহসান ‘ফেরেশতে’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য পুরস্কার জেতেন। আর এই প্রজন্মের তরুণ অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ ‘ফাতিমা’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য পুরস্কার পান। মস্কো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ৪৫তম আসরের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে নুরুল আলম আতিক পরিচালিত জয়া আহসান অভিনীত সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া সিনেমা,  ‘পেয়ারার সুবাস’। এটি সর্বশেষ যাচ্ছে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে।  
ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের পুরস্কার 
এ প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন সময়ে  দশটি সিনেমা পুরস্কৃত হয়। সিনেমাগুলো হচ্ছে ১. তিতাস একটি নদীর নাম, ঋত্বিক ঘটক (১৯৭৩)
২. চিত্রা নদীর পারে, তানভীর মোকাম্মেল (১৯৯৯) ৩. নদীর নাম মধুমতি, তানভীর মোকাম্মেল (১৯৯৪) ৪. সীমানা পেরিয়ে, আলমগীর কবির (১৯৭৭) ৫. বেদের মেয়ে জোসনা, তোজাম্মেল হক বকুল (১৯৮৯) ৬. সূর্য দীঘল বাড়ী, শেখ নিয়ামত আলী ও মসীহউদ্দীন শাকের (১৯৭৯) ৭. ধীরে বহে মেঘনা, আলমগীর কবির (১৯৭৩)৮. রুপালি সৈকতে, আলমগীর কবির (১৯৭৯) ৯. শ্রাবণ মেঘের দিন, হুমায়ূন আহমেদ (১৯৯৯) ১০. সাত ভাই চম্পা, দীলিপ সোম (১৯৬৮)

জুরি বোর্ড 
এক সময়ের জনপ্রিয় গুণী অভিনেত্রী ববিতা। সত্তর ও আশির দশকে বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। মস্কো ও তাসখন্দ চলচ্চিত্র উৎসবে তিনি অংশ নিয়েছেন অসংখ্যবার। এমনকি মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে হয়েছিলেন জুরিবোর্ডের সদস্যও। তিনি গেছেন জার্মানি, ইতালি, ভারত, চেকোস্লোভাকিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মিসরসহ বহু দেশের চলচ্চিত্র উৎসবে। সম্প্রতি ইরানের ঐতিহ্যবাহী ৪২তম ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ফের জায়গা করে নেয় বাংলাদেশও। এশিয়ান কম্পিটিশন বিভাগে জুরি হয়ে দায়িত্ব পালন করেন ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল। ববিতা, আহমেদ মুজতবা জামাল ছাড়াও বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের আরও অনেকের নানা চলচ্চিত্র উৎসবে পদচারণা ছিল।

ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রির বাইরে তারকাদের পদচারণা

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির বাইরে যেয়ে অভিনেত্রী জয়া আহসান, আজমেরী হক বাঁধন, তাসনিয়া ফারিণসহ অনেক তারকা নিজের অভিনয় দক্ষতা তুলে ধরেছেন। ঢালিউড এবং টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানের বলিউডে পদার্পণ ঘটে ২০২৩ সালে। পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর ‘কড়ক সিংহ’ সিনেমায় দাপুটে অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠির সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন তিনি। গোয়া চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয় ওই সিনেমার। বলিউডে পা দিয়েই বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন গুণী এই অভিনেত্রী। ২০১৩ সালে ‘আবর্ত’ ছবির মাধ্যমে টালিউডে অভিষেক হয় জয়ার। তার পরে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘রাজকাহিনী’, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বিসর্জন’, শিবপ্রসাদ-নন্দিতার ‘কণ্ঠ’, অতনু ঘোষের ‘রবিবার’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করে নিজের অভিনয় দক্ষতা তুলে ধরেছেন।

বাংলাদেশের আরেক অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন বলিউডের ‘খুফিয়া’ ছবিতে অভনয় করেছেন। ছবিতে বলিউড অভিনেত্রী টাবুর সঙ্গে তার চরিত্রের রসায়ন নজর কেড়েছে অনুরাগীদের। পর্দায় সময় কম পেলেও অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের ছাপ রেখেছেন বাঁধন।

এছাড়াও অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া, শবনম বুবলী, মোশাররফ করিমসহ বাংলাদেশি বহু তারকা টালিউডে নজর কেড়েছেন।

সাফটা চুক্তি 
চলচ্চিত্রের উন্নয়নে যোগ হয়েছে সাফটা চুক্তি। সাফটা চুক্তির ফলে বাংলাদেশের সিনেমার ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে ভারতের ইন্ডাস্ট্রির যোগসূত্র বেড়েছে। বহু ঢাকাই সিনেমা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হচ্ছে। একই সঙ্গে  দেশের প্রেক্ষাগৃহে আমদানি করা হয়েছে ‘পাঠান’, ‘জওয়ান’, ‘অ্যানিমেল’ ও ‘ডানকি’র মতো বহু বিদেশি সিনেমাও।

news24bd.tv/ডিডি/টিআর/

এই রকম আরও টপিক