ফজরের সময় ঘুম থেকে জাগতে শয়তান যেভাবে বাধা দেয়

প্রতীকী ছবি

ফজরের সময় ঘুম থেকে জাগতে শয়তান যেভাবে বাধা দেয়

 হাবিবুর রহমান

আল্লাহ মুমিনদের জন্য নামাজের শুভ সূচনা করেন ফরজ নামাজের মাধ্যমে। ফজর নামাজ আদায়ের মাধ্যমে শয়তানের বিরুদ্ধে প্রথম জয়লাভ করে মুমিন ব্যক্তি। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, যখন তোমাদের কেউ নিদ্রা যায় তখন তার গ্রীবাদেশে শয়তান তিনটি করে গাঁট বেঁধে দেয়; প্রত্যেক গাঁটে সে এই বলে মন্ত্র পড়ে যে, ‘তোমার সামনে আছে দীর্ঘ রাত, অতএব তুমি ঘুমাও। ’ অতঃপর যদি সে জেগে উঠে আল্লাহর জিকির করে, তাহলে একটি গাঁট খুলে যায়।

তারপর যদি অজু করে, তবে তার আরেকটি গাঁট খুলে যায়। তারপর যদি নামাজ পড়ে, তাহলে সমস্ত গাঁট খুলে যায়। আর তার প্রভাত হয় স্ফূর্তি ও ভালো মনে। নচেত্ সে সকালে ওঠে কলুষিত মনে ও অলসতা নিয়ে।


(বুখারি, হাদিস : ১১৪২; মুসলিম, হাদিস : ১৮৫৫ )
ফজরের নামাজ পড়তে না পারা দুর্বল ঈমানের আলামত। দুর্বল ঈমানের মানুষও শয়তানের কাছে নত হয়ে আলসেমি করে ঘুম থেকে উঠতে চায় না। মহানবী (সা.) বলেন, মুনাফিকদের জন্য ফজর এবং এশার সালাতের চেয়ে কষ্টকর আর কিছু নেই। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫৪৪)

ফজরের নামাজের গুরুত্ব আমাদের মুমিন জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

একজন ঈমানদার মুমিন ব্যক্তি ইচ্ছা করে কখনো ফজরের নামাজ অবহেলায় ছেড়ে দেয় না। নবী করিম (সা.) বলেন, মানুষ যদি ফজর এবং এশার সালাতের গুরুত্ব বুঝতে পারত তাহলে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও উভয় সালাতে উপস্থিত হতো। (বুখারি, হাদিস : ৬৫৭)
আল্লাহ ফজরের নামাজকে এত বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন যে তিনি ‘ফজর’ নামেই পবিত্র কোরআনে পূর্ণাঙ্গ একটা সুরা নাজিল করেছেন এবং তাঁর নিয়ামত তুলে ধরেছেন। আল্লাহ সেখানে শপথ করে বলেন, ‘শপথ সুবহে সাদিকের!’ (সুরা : আল-ফজর, আয়াত : ১ )

ফজরের নামাজের নিয়ামত, গুরুত্ব ও উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে আল্লাহ তাআলা ও নবী মুহাম্মদ (সা.) তা বর্ণনা করেছেন।

নবী করিম বলেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের সালাত আদায় করল সে আল্লাহর জিম্মায় চলে গেল। অতএব আল্লাহ যেন তাঁর জিম্মার ব্যাপারে তোমাদের কোনোরূপ অভিযুক্ত না করেন। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২১৮৪)
আমরা সবাই কাল কিয়ামতের মাঠে আল্লাহর নিয়ামতপূর্ণ জান্নাতে যেতে চাই। জাহান্নামের কঠিন আগুন থেকে পেতে চাই মুক্তি। আল্লাহর নবী নিজে সে মুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন। আবু জুহাইর উমারা ইবনে রুয়াইবা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে (ফজর ও আসরের ওয়াক্ত) সালাত আদায় করবে সে কখনো জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। (মুসলিম, হাদিস : ৬৩৪)

উসমান ইবনে আফফান (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে এশার সালাত আদায় করল সে যেন অর্ধেক রাত জেগে নামাজ পড়ল। আর যে ব্যক্তি ফজরের সালাত জামাতের সঙ্গে আদায় করল সে যেন পুরো রাত জেগে নামাজ পড়ল। ’ (মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৭)
 

এই রকম আরও টপিক