সাংবাদিক রানাকে ৬ মাসের সাজা, ঘটনা তদন্তে শেরপুরে তথ্য কমিশনার

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক - নিউজ টোয়েন্টিফোর

সাংবাদিক রানাকে ৬ মাসের সাজা, ঘটনা তদন্তে শেরপুরে তথ্য কমিশনার

শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরের নকলায় দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার উপজেলা সংবাদদাতা শফিউজ্জামান রানাকে (৪৫) ভ্রাম্যমাণ আদালতে ছয় মাসের সাজা প্রদানের ঘটনা তদন্তে শেরপুর পরিদর্শন করেছেন তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক।

আজ রোববার (১০ মার্চ) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তদন্ত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

এরপর স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হলে তাদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ওই ঘটনার বিষয়ে খবর প্রকাশিত হওয়ার প্রেক্ষিতে তথ্য কমিশন একটি বিশেষ সভা করেছে। কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বিষয়টি অনুসন্ধান করতে হচ্ছে।

অর্থাৎ, সাজাপ্রাপ্ত সাংবাদিক রানা তথ্য চাইতে গিয়ে ওই অবস্থার শিকার হয়েছেন কি-না, সে বিষয়টি অনুসন্ধান করা হচ্ছে। ঘটনাটি যেভাবেই হোক না কেন, বর্তমানে তা আইনের আওতার মধ্যে এসে গেছে। কাজেই বিচারাধীন বিষয়ে কমেন্টস করা উচিত নয়। তা বলতে গেলে আইনের বরখেলাপ হবে।

এদিন, প্রথমে তথ্য কমিশনার জেলা কারাগারে গিয়ে সাংবাদিক রানার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলে তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর তিনি সাংবাদিক রানার ভাড়া বাসায় গিয়ে তার স্ত্রী বন্যা আক্তার ও দশম শ্রেণি পড়ুয়া পুত্র শাহরিয়ার জামান মাহিমের (১৫) সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি নকলা ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন, সাজা প্রদানকারী সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিহাবুল আরিফ ও ইউএনওর সিএ শিলা আক্তারসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার কথা বলেন। এছাড়া তিনি জেলা পর্যায়ে সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গেও একান্তে কথা বলেন।

অন্যদিকে, নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া উম্মুল বানিন জানান, তথ্য চাওয়ার কারণে রানাকে সাজা দেওয়া হয়নি। মূল ঘটনাটি তথ্য চাওয়া নিয়েও নয়। মূলত নারী সিএকে নাজেহাল ও ফাইলপত্র তচনচের পর দাপ্তরিক একটি সভা চলাকালে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কারণে ব্যক্তি রানাকে সাজা দেওয়া হয়েছে।

শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার ও সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় যখন সরকার স্বাধীন ও মুক্ত গণমাধ্যমের অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কাজ করছে, ঠিক তখন বির্তকের উর্ধ্বে না হলেও একজন গণমাধ্যমকর্মীকে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সরাসরি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে সাজা দেওয়ার ঘটনা আমাদেরকে বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে নকলার ইউএনও কার্যালয়ে প্রবেশ করে সিএ শীলা আক্তারকে নাজেহাল, অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল তচনচ এবং উপজেলা পর্যায়ে দাপ্তরিক এক সভায় ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিনের কর্তব্য কাজে বাধাসহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে শফিউজ্জামান রানাকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট মো. শিহাবুল আরিফ পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

news24bd.tv/SHS