অবশেষে সমুদ্রে তেল-গ্যাস উত্তোলনে দরপত্র আহ্বান

‘বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড-২০২৪’ উপলক্ষে পেট্রোবাংলার অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলন

অবশেষে সমুদ্রে তেল-গ্যাস উত্তোলনে দরপত্র আহ্বান

অনলাইন ডেস্ক

অবশেষে সমুদ্রে তেল-গ্যাস উত্তোলনে দরপত্র আহ্বান করেছে বাংলাদেশ। তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকে আরও বেগবান করতে অফশোর বিডিং-২০২৪ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (১১ মার্চ) ‘বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড-২০২৪’ উপলক্ষে পেট্রোবাংলার অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।  

সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী বলে জানিয়েছে।

এ বিষয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এবারের উৎপাদন বণ্টন চুক্তি (পিএসসি) অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি আকর্ষণীয়।

তিনি বলেন, মার্কিন বড় বড় কোম্পানিসহ আন্তর্জাতিক অনেক কোম্পানি এবারের বিডিংয়ে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দরপত্র জমার দেওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

এরপর যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে কোন কোম্পানিকে কাজ দেয়া যায়।

রোববার (১০ মার্চ) ‘অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস এক্সপ্লোরেশন আন্ডার বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড ২০২৪’ শীর্ষক দরপত্রটি আহ্বান করে পেট্রোবাংলা। আহ্বান করা দরপত্রে মোট ২৪টি অফশোর ব্লক রয়েছে। যার মধ্যে ৯টি অগভীর সমুদ্র ব্লক এবং ১৫টি গভীর সমুদ্র ব্লক। এসএস-০১, ০২, ০৩, ০৫, ০৬, ০৭, ০৮, ১০ ও ১১ এ ৯টি ব্লক অগভীর সমুদ্রের। বাকি ১৫টি ডিএস-০৮, ০৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১ ও ২২ গভীর সমুদ্রের।

পেট্রোবাংলার জানায়, গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস উত্তোলন কার্যক্রম কষ্টসাধ্য বিধায় সবদিক বিবেচনা করে কোম্পানিগুলো এককভাবে বা অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে মিলে এক বা একাধিক ব্লকের জন্য দরপত্র জমা দিতে পারবেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, খনিজ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী প্রমুখ।

২০১৯ সালে অফশোর এবং অনশোরের জন্য আলাদাভাবে পিএসসি হালনাগাদ করা হলেও করোনা মহামারির জন্য বিড রাউন্ড আয়োজন সম্ভব হয়নি। তবে করোনা মহামারির কারণে বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে তেলের বাজারেও বেশ অস্থিরতা দেখা যায়। ফলে অনুসন্ধান কার্যক্রমে ভাটা লক্ষ করা যায়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে অফশোর মডেল পিএসসি ২০১৯-কে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আরও যুগোপযোগী ও প্রতিযোগিতামূলক করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগ করা হয়। পরে পরামর্শকের মতামত এবং পেট্রোবাংলার নিজস্ব পর্যালোচনার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ অফশোর মডেল পিএসসি ২০২৩ প্রণয়ন করা হয়, যা ২৬ জুলাই, ২০২৩ তারিখ অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হয়।  

এবারের পিএসসিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বৈশিষ্ট্য হলো
 
১. নতুন পিএসসি-তে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিসমূহকে বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকায় অনুসন্ধানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে বেশ কিছু আকর্ষণীয় বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যার মধ্যে অন্যতম হলো, গভীর ও অগভীর সমুদ্রাঞ্চলের উভয়ের জন্য বাৎসরিক কস্ট রিকভারি (Cost Recovery) সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ করা। এই পরিবর্তনের ফলে কন্ট্রাক্টর তার বিনিয়োগকৃত অর্থ দ্রুত ফেরত পাওয়ায় একদিকে উৎসাহিত হবে, অপরদিকে কস্ট রিকভারি দ্রুত শেষ হলে পেট্রোবাংলা তথা সরকারও দ্রুত অধিক হারে লভ্যাংশ পাবে।  
 
২. লভ্যাংশ ভাগাভাগির ক্ষেত্রে পিএসসি-তে ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ইতোপূর্বে পিএসসি-তে প্রফিট শেয়ারিংয়ের পদ্ধতি ছিল প্রডাকশন বেজ, যা বর্তমান পিএসসি-তে প্রফিটেবলিটি বেজড (R-Factor) অনুসরণে করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে কন্ট্রাক্টরের বিনিয়োগকৃত অর্থ যৌক্তিক সময়ে ফেরত পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। সঙ্গে লভ্যাংশ শেয়ারের আপার লিমিট ও লয়ার লিমিটি বিডেবল রাখার কারণে সরকারের আরও বেশি লভ্যাংশ প্রাপ্তির সুযোগ রাখা হয়েছে।
 
৩ গ্যাসের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ইতোপূর্বে ব্যবহৃত মার্কার প্রাইস এইএসএফও-এর পরিবর্তে অগভীর এবং গভীর সমুদ্রাঞ্চলের গ্যাসের মূল্য নির্ধারণের জন্য মার্কার প্রাইস হিসেবে ব্রেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ব্রিন্টের ১০ শতাংশ। আগের মতো ফ্লোর এবং সিলিং না থাকায় গ্যাসের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে।
news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক

সম্পর্কিত খবর