সাকিব ও সালমাদের জয়ের গল্প

সাকিব আল হাসান ও সালমা খাতুন

ক্রীড়াঙ্গনে সাফল্য

সাকিব ও সালমাদের জয়ের গল্প

সুদীপ চক্রবর্তী

যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ; খেলাধুলা তো দূরের বিষয়- অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের চাহিদা পূরণই যেন চ্যালেঞ্জ। স্বাধীনতার অব্যবহিত পর এমনই একটা অবস্থায় ছিল বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক অগ্রগতির পাশাপাশি ক্রীড়া ক্ষেত্রেও ঘটেছে বিস্ময়কর উত্থান। ক্রীড়াঙ্গনে যুক্ত হয়েছে সাফল্যের নতুন নতুন পালক।

ফুটবল থেকে ক্রিকেট, হকি থেকে আর্চারি কিংবা গলফ থেকে দাবা, কোনো ক্ষেত্রেই পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ। ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে রচিত হয়েছে জয়গাঁথা। বিশ্বমঞ্চে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশের পতাকা মেলে ধরছেন নারী ও পুরুষ ক্রীড়াবিদরা।  

ক্রিকেট

বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট।

১৯৭৭ সালে আইসিসির সহযোগী সদস্য পদ লাভ করে বাংলাদেশ। এর ঠিক ২০ বছর পর ১৯৯৭ সালে পূর্ণাঙ্গ সদস্য পদ পায় বাংলাদেশ। একই বছর কেনিয়া, স্কটল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ডকে পেছনে ফেলে ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি জয় করে বাংলাদেশ। এরপর ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে খেলেন টাইগাররা।  

২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে ভারতকে বিদায় করে তাক লাগিয়ে দেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। প্রথমবারের মতো সুপার-এইটে খেলার টিকিট পায় বাংলাদেশ। ২০১৫ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইংল্যান্ডের মতো দলকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।

এ ছাড়া ঘরের মাঠে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে একাধিকবার নিউজিল্যান্ডের মতো ক্রিকেট পরাশক্তিকে হোয়াইটওয়াশ এবং ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলগুলোর বিরুদ্ধে সিরিজ জয় তো আছেই।

২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠে বাজিমাত করে মাশরাফি বিন মর্তুজার বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা এখন যেন হয়ে উঠেছে নিয়মিত ব্যাপার।

পুরুষ ক্রিকেটে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা​​​​​

মর্যাদার আসর এশিয়ান গেমসে ক্রিকেট ইভেন্ট থেকেও বাংলাদেশ স্বর্ণপদক জিতেছে একাধিকবার। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের খেতাব জিতে নিয়ে সাকিব আল হাসান বিশ্বকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের সাফল্যের সঙ্গে। তিনি ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই দীর্ঘদিন ধরে অলরাউন্ডার হিসেবে এক নম্বরে থেকে তাক লাগিয়ে দেন। তিনি ছাড়াও বাংলাদেশের মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুস্তাফিজুর রহমানের খ্যাতি এখন বিশ্বজোড়া। সাকিব, তামিম, মাশরাফি, মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহকে পঞ্চপাণ্ডব হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। ২২ গজের এই খেলায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাফল্যের বইয়ে পঞ্চপাণ্ডব যুক্ত করেছেন নতুন নতুন অধ্যায়।  

যুবাদের সাফল্য: বাংলাদেশ জাতীয় দল এখন বিশ্ব জয় করতে না পারলেও যুবাদের হাত ধরেই বিশ্বজয় করেছে বাংলাদেশ। ২০২০ সালে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিজেদের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায় জুনিয়র টাইগাররা। যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে ট্রফি জেতে বাংলাদেশ। দেশের ক্রিকেটে প্রথম বিশ্বকাপ জয়। ১৯৯৭ সালের পর  প্রথম ক্রিকেটের কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের এটিই ট্রফি জয়ের ঘটনা। ফাইনালে চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে বৃষ্টি আইনে ৩ উইকেটে হারিয়ে আকবর আলী-পারভেজ হোসেন, শরিফুল ইসলামরা, তানজীব হাসানরা গড়ে নতুন এক ইতিহাস।  

মেয়েদের অবদান: ২০০৭ সালের জুলাইয়ে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক মেয়েদের। এরপর একটু একটু করে এগিয়ে গেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর, নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের বাছাইয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ৯ উইকেটে হারিয়ে একদিনের আন্তর্জাতিকের মর্যাদা পায় টাইগ্রেসরা।

নারী ক্রিকেটে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা

নারীদের ক্রিকেটে সেরা সাফল্যটা এসেছে ২০১৮ সালে। সাকিব আল হাসান কিংবা মাশরাফি বিন মর্তুজারা যা পারেননি, তাই করে দেখিয়েছেন সালমা খাতুন আর জাহানারা আলমরা। ২০১৮ সালে এশিয়া কাপ শিরোপা জেতে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ফাইনালে ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে অনন্য উচ্চতায় পা রাখে টাইগ্রেসরা। বছরের শেষটাতে এসে মেয়েরা প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার টিকিটও নিশ্চিত করেছে। এ ছাড়া একবার ‘মিনি বিশ্বকাপ’ এবং দুবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের মতো মর্যাদার আসর সাফল্যের সঙ্গে আয়োজন করার কৃতিত্বও আছে।

ফুটবল

১৯৭২ সালের ১৩ মে তারিখটি দেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য বিশেষ একদিন। এর আগ পর্যন্ত শুধু ফুটবল নয়, আন্তর্জাতিক খেলাধুলার কোনো চিহ্নই পড়েনি নতুন দেশে। এমন একটা সময়ে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে ঢাকায় এলো ভারত ফুটবল ইতিহাসের সমীহ জাগানো নাম মোহনবাগান ক্লাব। ওই দলটিতে ছিলে ভারত জাতীয় দলের ৮-৯ জন ফুটবলার। ছিলেন কিংবদন্তী ফুটবলার চুনী গোস্বামীও।

বাংলাদেশের সেরা ফুটবলাররা অংশ নিলেও স্বাগতিকরা খেলল ঢাকা একাদশ নামে। ১৩ মে ম্যাচ শুরুর আগেই ঢাকা স্টেডিয়ামে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম) উপচে পড়া দর্শক। ফুটবলপ্রেমী বঙ্গবন্ধু এলেন মাঠে। দু’দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিচিত হলেন, ছবি তুললেন। দর্শকদের নিরাশ করেনি দু'দলের ফুটবলাররা। ম্যাচে জয়সূচক গোলটি করেছিলেন সালাউদ্দিন। উৎসবে মেতেছিল ফুটবলপাগল বাঙালিরা।

১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়াতে অনুষ্ঠিত মারদেকা টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ অংশ নিল ‘স্বাধীন বাংলা দল’ নামে। প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডের সঙ্গে ২-২ ড্র। এর পরের বছর ফিফা সদস্যপদের মর্যাদা পেল বাংলাদেশ। ১৯৭৫ সালে মারদেকা কাপে অংশ নিল বাংলাদেশ। সেসময় মারদেকা টুর্নামেন্টে প্রতিষ্ঠিত দলগুলো অংশ নিত। বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব কিংবা কোন বড় আসরের আগে একটা অলিখিত ‘ট্রায়াল টুর্নামেন্ট’ হিসাবে খ্যাতি ছিল মারদেকা আসরের।  

উপমহাদেশের প্রথম ফুটবলার হিসেবে কাজী সালাউদ্দিন ১৯৭৬ সালে হংকং পেশাদার লিগে খেলেন। সে সময় এশিয়ায় হংকংয়ের পেশাদার ফুটবল লিগ এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে, ইউরোপের বড় বড় তারকারাও সেখানে খেলতে আসতেন। এছাড়াও দেশের বাইরে ফুটবল খেলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন মোনেম মুন্না, শেখ মোহাম্মদ আসলাম, ইমতিয়াজ সুলতান জনি, কায়সার হামিদ, রুম্মন ওয়ালি বিন সাব্বির, গাউস, মানুনুল ইসলাম। দল হিসেবে বাংলাদেশের প্রথম শিরোপা লাভ করে ১৯৮৯ সালে। প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপের ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়ার সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয় একাদশকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ছাইদ হাছান কাননের দল।  

বাংলাদেশ ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার ছিলেন মুন্না। তাকে বাদ দিয়ে দেশের ফুটবল ইতিহাস সম্পূর্ণ হবে না কোনোভাবেই। ১৯৯২ সালে মুন্নাকে দলে ভেড়াতে ২০ লাখ টাকা ঢালতে হয়েছিল আবাহনীকে। যেটা ওই সময় উপমহাদেশ ফুটবলে একটা বিশেষ ঘটনাই বটে। মুন্নার ২০ লাখ টাকা পাওয়ার ঘটনা প্রবলভাবে আলোড়ন তুলেছিল দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে।

১৯৯৫ সালে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত চার জাতি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। ওই আসরে বাকি তিন দল ছিল স্বাগতিক মিয়ানমার, সিঙ্গাপুর ও চাইনিজ তাইপে।  

২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেও শিরোপা জয় করে লাল-সবুজের দল। বাংলাদেশ দুবার সাফ গেমসে (১৯৯৯ ও ২০১০ সাল) চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

জামাল ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুরুষ ফুটবল দল এখন সুনাম কুড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে

ভারতের জনপ্রিয় ক্লাব কলকাতা মোহামেডান বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে বানান দলপতি।

মেয়েদের সাফল্য: মেয়েদের ফুটবলেও এসেছে অভূতপূর্ব সাফল্য। সমাজের বাধাবিপত্তি, বিরোধিতা এমনকি নেতিবাচক পরিস্থিতি দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করেই মেয়েরা এমন সব চ্যালেঞ্জ জিতেছেন, যা একসময় কল্পনাও করা যেত না। মেয়েরা ক্রীড়াঙ্গনের দৃষ্টিভঙ্গিকেই পাল্টে দিয়েছে। এরপরও সনাতনী মানসিকতার পরিবর্তন আনার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

নারী ফুটবলে অর্জনের শুরুটা হয়েছিল ২০১৫-তে। নেপালে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ নারী রিজিওনাল চ্যাম্পিয়নশিপে সেবার অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০১৬-তেও একই আসরে তাজিকিস্তানে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় লাল-সবুজের দল।

২০১৭ সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। এর পরের তিন আসরে অবশ্য ফাইনালে গিয়েও খালিহাতে ফিরে আসতে হয়েছে লাল-সবুজদের। ভারতের কাছে দুবার এবং নেপালের কাছে একবার হেরে শিরোপাবঞ্চিত হয় বাংলাদেশ।

২০১৭-তে ভারতে অনুষ্ঠিত সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে স্বাগতিকদের কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের।

তবে বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে যে বাংলাদেশ সেরা, তা আরও একবার তারা প্রমাণ করেছে নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে।

লড়াকু মানসিকতা বজায় রেখে এখন মাঠ থেকে জয় নিয়ে ঘরে ফেরে বাংলার বাঘিনীরা 

স্বাগতিকদের হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলার বাঘিনীরা। এরপর সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপেও ভারতকে হারিয়ে শিরোপার স্বাদ পায় ছোটনের দল।

২০২৩ সালে সাফ অনুর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে অপরাজিত থেকে শিরোপা জয় করে বাংলাদেশের বয়স ভিত্তিক দলটি। এর আগে নেপালের দশরথ রঙ্গশালায় নেপালকে হারিয়ে সিনিয়র বিভাগের শিরোপা ঘরে তোলে সাবিনা খাতুনের দল।  

কাবাডি (হাডুডু)

কাবাডি বা হাডুডু বাংলাদেশের জাতীয় খেলা। ভারতীয় উপমহাদেশকে এই খেলার জন্মস্থান ধরা হয়। বর্তমান ভারত-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী রাজ্য পাঞ্জাবকে কাবাডি খেলার আদিভূমি মনে করা হয়। বাংলাদেশ ভূখণ্ডেও এই খেলা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। মূলত কোনো ধরনের সরঞ্জামের প্রয়োজনীয়তা না থাকায় এই খেলাটি খেলতে পারতো সকলেই। বাংলাদেশে সরকারিভাবে খেলাটিকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ অ্যামেচার কাবাডি ফেডারেশন গঠিত হয়। ফেডারেশন থেকে এ খেলার বিভিন্ন নিয়মকানুন তৈরি করা হয়। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় কাবাডি দলের সঙ্গে প্রথম কাবাডি টেস্ট খেলে। জাতীয় কাবাডি দল আন্তর্জাতিক কাবাডিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে।

বাংলাদেশ কাবাডি দল 

১৯৮০ সালে প্রথম এশিয়ান কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্স-আপ হয় বাংলাদেশ। এর পরের বছরও এশিয়ান কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্স-আপ হয় বাংলাদেশ। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ কাবাডি দল এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে। এ ছাড়াও এশিয়ার বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় কাবাডি থেকে পদক পেয়েছে লাল-সবুজের কাবাড়ি দল।  

হকি
এক সময় গুণে-মানে ফুটবলের চেয়ে এগিয়ে ছিল হকি। ১৯৮২ সালে ওয়ার্ল্ড জুনিয়র হকি প্রতিযোগিতায় পঞ্চম স্থান পায় বাংলাদেশ। এ রকম একটা সময়ে দ্বিতীয় এশিয়া কাপ হকির আসর বসল ঢাকায়। ১০ জাতির এ আয়োজনের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা স্টেডিয়ামে; বর্তমানে যেটির নাম বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম।

অংশ নেওয়া দলগুলোর অন্যতম ভারত ও পাকিস্তান। ওই সময়ের বিশ্ব হকির সবচেয়ে সফল দল উপমহাদেশের এ দল দুইটি। এ টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার আগে পাকিস্তানের নামের পাশে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ও এশিয়া চ্যাম্পিয়নের মুকুট। বলা বাহুল্য এর আগেরবার (১৯৮০ সালের অলিম্পিক) চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। দুই গ্রুপে পাঁচটি করে দল। 'এ' গ্রুপে স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও ছিল পাকিস্তান, জাপান, চীন ও ইরান।  জয়ে দিয়ে শুরু স্বাগতিকদের মিশন। অপেক্ষাকৃত দুর্বল ইরানের বিপক্ষে জয় আসে ৩-১ ব্যবধানে। ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে হ্যাটট্রিক করেন রক্ষণ সেনানী জুম্মন লুসাই। এটি ছিল কোনো বিদেশি দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের কোনো হকি খেলোয়াড়ের প্রথম হ্যাটট্রিক। ম্যাচে ইরানের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জয়ের সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি স্বাগতিক স্ট্রাইকাররা। যার খেসারত দিতে হয় পরে। গোল গড়ে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে সেমিফাইনালে পৌঁছে যায় জাপান।  

বাংলাদেশের জয়ে শুরুর প্রভাব পড়ে গ্যালারিতে। পরের ম্যাচ থেকে বাংলাদেশের খেলা মানেই উপচে পড়া ভিড়। মনে রাখতে হবে, ওই সময় ঢাকা স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ছিল ৪০ হাজার। পরের ম্যাচে শক্তিশালী জাপানের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ড্র করে বাংলাদেশ। ঘটনাবহুল ম্যাচটি ছিল নাটকীয়তায় ভরপুর। ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট খানেক বাকি থাকতে পেনাল্টি স্ট্রোক লাভ করে জাপান। সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে নেন তাকামোরি। ম্যাচের শেষ দিকে এই পেনাল্টি স্ট্রোক দেওয়াতে ক্ষেপে ওঠেন দর্শকরা। শুরু হয় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ! খেলা বন্ধ ১৫ মিনিট। এরপর বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের অনুরোধে দর্শকরা শান্ত হয়। খেলা মাঠে গড়ায়। এবং শুরু হতে না হতেই গোল পরিশোধ করে বাংলাদেশ। লক্ষ্যভেদ করেন সালাউদ্দিন তিসা। গ্যালারিরর উচ্ছ্বাস তখন সপ্তম আকাশে।
তৃতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ চীন। স্নুায়ুক্ষয়ী ওই ম্যাচে একটা পর্যায়ে ০-২ গোলে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তবুও দমেনি স্বাগতিকরা। হার না মানা মানসিকতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিপক্ষের উপর। সুফলও মেলে। প্রথমে ব্যবধান কমান ইসলাম নাসিম। এরপর সমতাসূচক গোল করেন মালেক চুন্নু। এই ড্র দারুণভাবে জাগিয়ে তোলে বাংলাদেশের মানুষকে। পরের ম্যাচে প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। এই ম্যাচকে ঘিরে যথারীতি উত্তাপের পারদ চড়ে চরমে।  টিকিটের জন্য পড়ে যায় হাহাকার। সারা দেশেই টিভি সেটের সামনে উপচে পড়া ভিড়। যেমনটা পরবর্তীতে দেখা গেছে ক্রিকেটে।

হকির সুবাসে তখন মাতোয়ারা পুরো দেশ। সেমি-ফাইনালে খেলতে হলে ড্র করতে হবে, এই সমীকরণ মেলানোর প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামে চুন্নু-নাসিমরা। উত্তেজনা ঠাসা ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল উপভোগ্য; শিহরণ জাগানো। শুরু থেকেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলা জমে ওঠে। গোলের সুযোগও আগে পায় বাংলাদেশ। কিন্তু ফরোয়ার্ডরা সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। প্রথমার্ধ গোলশূন্য। দ্বিতীয়ার্ধেও সময়ও প্রায় শেষ। দু’মিনিটেরও কম সময় বাকি। আক্রমণে বাংলাদেশ। এ সময় দলের একজন সদস্য, টিম ম্যানেজার সাব্বির ইউসুফের কাছে সময় কত বাকি জানতে চান। টিম ম্যানেজার বলতে পারেননি। বল নিয়ে ওভারল্যাপ করে উপরে উঠে এলেন অধিনায়ক শাহাবুদ্দিন চাকলাদার। শেষ সময়ে এই আক্রমণাত্মক মনোভাবই কাল হলো। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে কলিমুল্লাহর বাড়ানো বল পেয়ে দারুণ ক্ষিপ্রতায় গোল করলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তীর হকি স্ট্রাইকার হাসান সরদার। হৃদয়ভাঙা বেদনায় পুড়ল বাংলাদেশ।

সে সময় দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ে হকি। মাঠ তো বটেই, নদীর চর, বাড়ির আঙিনা, মোট কথা যেখানেই ফাঁকা জায়গা, সেখানেই হকি। তৈরি হয় অদ্ভুত এক হকি জাগরণের। স্টিকেরও ধার ধারেনি শিশু কিশোররা। প্রত্যন্ত গ্রামেও গাছের ডাল, লাঠি, বিশেষ করে নারকেলের ডাল দিয়ে হকি খেলা শুরু হয়ে যায়।

বাংলাদেশ হকি দল 

১৯৮৬ সালে হকির বিশ্ব একাদশে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশের জামাল হায়দার। তিনটি ম্যাচেও তিনি অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৮৮ সালে হকির তারকা জুম্মন লুসাইও বিশ্ব একাদশের হয়ে মর্যাদাপূর্ণ ম্যাচে অংশ নিয়েছেন।

১৯৮৫ সালে ইরানের বিরুদ্ধে জুম্মন লুসাই বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রথম হ্যাটট্রিক করেন। ওই টুর্নামেন্টে হকিতে অন্যতম পরাশক্তি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১-০ গোলে হারলেও গোটা এশিয়ায় ব্যাপক প্রশংসা পায় বাংলাদেশ হকি দল। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ হকি ফেডারেশন ও সংগঠকদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সংবর্ধনা দেন। আয়োজক হিসেবেও হকিতে বেশ সাফল্য আছে বাংলাদেশের। ১৯৮৫ ও ২০১৭ সালে এশিয়া কাপের আয়োজন হয় ঢাকায়।

দাবা

ইনডোর গেম দাবাতেও এসেছে দারুণ সাফল্য। দাবায় তো বাংলাদেশ প্রতিবেশী ভারতকেও ছাপিয়ে গেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার পেয়েছে লাল-সবুজরা। দাবায় সফলতায় যার নাম না নিলেই নয় তিনি হলেন নিয়াজ মোরশেদ। মাত্র ১২ বছর বয়সেই দেশের শীর্ষস্থানীয় দাবাড়ুদের একজনে পরিণত হন তিনি। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বাংলাদশের জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে একাধারে ৪টি শিরোপা জেতেন। এর ৩০ বছর পর ২০১২ ও ২০১৯ সালে আবারও চ্যাম্পিয়নের মুকুট মাথায় তোলেন। এতে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ছয়বারের মতো শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসেন তিনি।

১৯৭৯ সালে ভারতের কলকাতায় প্রথমবারের মতো যেকোনো পর্যায়ের আন্তর্জাতিক দাবা প্রতিযোগিতায় অংশ নেন নিয়াজ। এরপর ১৯৮১ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে যৌথভাবে প্রথম হলেও টাইব্রেকে দ্বিতীয় হন তিনি। পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায় অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। একই বছর আন্তর্জাতিক মাস্টারে নর্ম অর্জন করেন দেশসেরা এ দাবা খেলোয়াড়।

দাবাতেও পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ 

নিয়াজ ১৯৮২ সালে বিশ্ব জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেন নিয়াজ। তবে ওই টুর্নামেন্টে অকৃতকার্য হলেও ডেনমার্কের লার্স স্কানডর্ফের বিরুদ্ধে তার দাবার লড়াইটি টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সেরা খেলা হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। ১৯৮৪ সালে যুগোস্লাভিয়ায় অনুষ্ঠিত ‘বেলা ক্রোভা ওপেনে’ গ্র্যান্ড মাস্টারের প্রথম নর্ম অর্জন করেন। আর দ্বিতীয় নর্মটি অর্জন করেন ১৯৮৬ সালে।  

নিয়াজের প্রাপ্তির ঝুলিতে সবচেয়ে বড় সাফল্যে আসে ১৯৮৭ সালে। মাত্র ২১ বছর বয়সেই বিশ্ব দাবা সংস্থার (ফিদে) কাছ থেকে গ্র্যান্ড মাস্টারের মর্যাদায় ভূষিত হন নিয়াজ। যা তাকে বাংলাদেশ তো বটেই, একই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এবং সমগ্র এশিয়ার মধ্যে ৫ম গ্র্যান্ড মাস্টারের খ্যাতি এনে দেয়। শুধু তাই নয়, বার্মা (বর্তমানে মিয়ানমার) থেকে তুরস্ক পর্যন্ত অঞ্চল নিয়ে ফিদের নবম আঞ্চলিক জোনের প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টারও তিনিই।

ফিদের সম্মানসূচক মর্যাদা পেয়ে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন নিয়াজ। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত যথাক্রমে ভারতের গোডরিকে প্রথম, ফিলিপাইনের সেবু’তে গ্র্যান্ড মাস্টার টুর্নামেন্টে ২য়, কাতারের দোহা দাবা উৎসবে ৩য় এবং আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করেন তিনি। সব মিলে বাংলাদেশে এখন পাঁচজন গ্র্যান্ডমাস্টার- নিয়াজ মোর্শেদ, জিয়াউর রহমান, রিফাত বিন সাত্তার, আবদুল্লাহ আল রাকীব ও এনামুল হোসেন রাজীব।

মেয়েদের দাবায় রানি হামিদ তো কিংবদন্তি। ১৯৮৫ সালে আন্তর্জাতিক মাস্টার খেতাব পাওয়া এ তারকা এখন পর্যন্ত ২০বার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছেন। তিনবার ব্রিটিশ ওমেন্স চেজ চ্যাম্পিয়নশিপেও শিরোপা জিতেছেন তিনি। ৭৫ বছর বয়সে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন রানি হামিদ।

শ্যুটিং

শ্যুটিংয়েও সাড়া জাগানো সাফল্য আছে বাংলাদেশের। ১৯৯০ সালে কমনওয়েলথ গেমসের মতো বৈশ্বিক আসরে যুগ্মভাবে স্বর্ণপদক লাভ করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন দুই শুটার আতিকুর রহমান ও আবদুস সাত্তার নিনি।

শ্যুটিংয়েও সাড়া জাগানো সাফল্য অর্জন করছে বাংলাদেশ

এর এক যুগ পর আবারও বিশ্বমঞ্চে আলোচনায় আসে বাংলাদেশ। ২০০২ সালে ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসে আবারও সোনা জেতেন বাংলাদেশের আরেক কৃতী শ্যুটার আসিফ হোসেন খান।

গলফ

গলফকে ধনীদের খেলা হিসেবে ধরা হলেও এই খেলায় বাংলাদেশের সাফল্য কিংবা প্রাপ্তিও কম না। সোনার ছেলে সিদ্দিকুর রহমান একাই দু-দুবার এশিয়ান ট্যুরের শিরোপা জিতে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছেন বিশ্বমঞ্চে। ২০১০ সালে ব্রুনাই ওপেন এবং ২০১৩ সালে হিরো ইন্ডিয়া ওপেনের শিরোপা জয় ছাড়াও ইউরোপিয়ান ট্যুরের আসরেও বেশ সাড়া ফেলেছিলেন সিদ্দিকুর।

বিশ্বজুড়ে সুখ্যাতি কুড়িয়েছেন বাংলাদেশি গলফার সিদ্দিকুর রহমান

বিবিসির মতো বড় মিডিয়াতে তাকে নিয়ে ছাপা হয়েছে কিছু ফিচার স্টোরি। ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের পর বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম গলফার সিদ্দিকুর রহমান।

আর্চারি

২০১৮ সালে আর্চারিতে বিস্ময়কর উত্থান হয় বাংলাদেশের। নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত মর্যাদাপূর্ণ আসর বিশ্ব আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেন রোমান সানা।

বিশ্বমঞ্চে সুখ্যাতি কুড়িয়েছেন বাংলাদেশি আর্চার রোমান সানা

২০১৯ সালে কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সাফ গেমসে বাংলাদেশের আর্চারি দল তো রীতিমতো চমক সৃষ্টি করে। ওই আসরের ১০ ইভেন্টের সবকটিতে স্বর্ণপদক জেতে বাংলাদেশ। ওই একই আসরে সর্বমোট ১৯টি স্বর্ণ নিজেদের করে নিয়েছিলেন লাল-সবুজের দল।

অ্যাথলেটিকস

অ্যাথলেটিকসেও সাফল্য আছে বাংলাদেশের। ১৯৮৫ ও ১৯৮৭ সালের সাফ গেমসে অ্যাথলেট শাহ আলম একাই দু-দুবার দ্রুততম মানব হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

বাংলাদেশের দ্রুততম মানব ইমরানুর রহমান

১৯৯৩ সালে সাফ গেমসে দ্রুততম মানব হয়েছিলেন বিমল তরফদার। সাঁতারে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন মোশারফ হোসেন। ১৯৮৫ সালের সাফ গেমসে এ ইভেন্ট থেকে একাই পাঁচটি স্বর্ণপদক লাভ করেন।

টেবিল টেনিস

টেবিল টেনিসে বিস্ময় এক নাম জোবেরা রহমান লিনু। তিনি টানা ১৬বার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করেছেন। বিশ্ব টেবিল টেনিসের ইতিহাসে এমন ঘটনা আর নেই। বাংলাদেশের একমাত্র পেশাদার ক্রীড়াবিদ হিসেবে নাম লিখিয়েছেন ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড’-এ।

টেবিল টেনিসে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের মেয়েরা 

গোটা ক্রীড়াঙ্গনের কথা বিবেচনা করলে স্বাধীনতার ৫৩ বছরে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে যে সাফল্য এসেছে তা নিঃসন্দেহে অভাবনীয়। ক্রীড়াকে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। সব বিভাজনকে দূরে ঠেলে ভিন্ন মত-পথের মানুষকে সহজেই নিয়ে আসে এক ছাতার নিচে। দেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে এবং দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সবচেয়ে সহজ ও কার্যকরী পন্থা খেলাধুলা। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর মানুষ আজও একত্রিত হয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের বড়ো পর্দায় দেখার জন্য। শত ব্যস্ততাকে পেছনে ফেলে বাংলার দামাল সন্তানদের জয়ের সাক্ষী হতে ভোলেন না দেশবাসী।  

news24bd.tv/আইএএম/এসসি