প্রশাসন ও নেতাদের ম্যানেজ করেই চলছে সিসা কারখানা

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই গড়ে উঠেছে সিসা কারখানা - নিউজ টোয়েন্টিফোর

প্রশাসন ও নেতাদের ম্যানেজ করেই চলছে সিসা কারখানা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে কোনো প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ভাঙা হচ্ছে পুরাতন ব্যাটারি। এসব ব্যাটারি পুড়িয়েই তৈরি করা হচ্ছে সিসা। ব্যাটারির অ্যাসিডের তীব্র গন্ধ ও ধোঁয়ায় ভারী হয়ে উঠছে আশপাশের এলাকা। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছে এলাকার গৃহপালিত পশু ও শিশুরা।

এছাড়া এখানকার বর্জ্য যাচ্ছে আবাদি জমিতে। ফলে কমে যাচ্ছে ফলন।

নিয়মনীতি না মানার অভিযোগ থাকলেও মালিকেরা বলছেন, এভাবেই পুরাতন ব্যাটারি প্রক্রিয়াজাত করা হয়। আর প্রশাসন ও নেতাদের ম্যানেজ করেই এসব কারখানা চালাচ্ছেন তারা।

উপজেলার চারতালা এলাকায় চারদিক ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে সিসার কারখানা। স্তূপ করে রাখা হয়েছে পুরাতন ব্যাটারি। দিনের আলোয় শ্রমিকেরা ব্যাটারি ভাঙার কাজ করলেও রাতে কয়েকটি বড় চুল্লিতে ভাঙাড়ি পুড়িয়ে তৈরি করা হয় সিসা। শুধু তাই নয়, ব্যাটারির বিষাক্ত সালফিউরিক অ্যাসিডসহ ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে যত্রতত্র। লোহার মোটা ছুরির সাহায্যে আলাদা করা হচ্ছে প্লাস্টিক ও সিসা। এভাবেই প্রতিদিন কারখানায় অবাধে চলছে সিসা তৈরির কাজ।

এতে জলাশয় ও আবাদি জমিতে বিষাক্ত বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ছে। এ থেকে সিসা যাচ্ছে মানবদেহে। এতে গৃহপালিত পশু ও শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক কৃষক জানান, এখানকার ধোঁয়ায় ছোট ছেলে-মেয়েদের শ্বাসকষ্ট ছাড়াও ফসল নষ্ট হচ্ছে। কারখানার পাশেই আমার ৫ বিঘা ফসলি জমি রয়েছে। এ কারখানা হওয়ার পর থেকে ফলন কমে গেছে। দ্রুত এই অবৈধ কারখানা বন্ধ হলে আমাদের উপকার হতো।

কারখানার শ্রমিক নুর আলম জানান, আমি গরিব মানুষ, কাজ করে খেতে হয়। অন্য কাজ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ব্যাটারি কারখানায় কাজ করছি।

কারখানার মালিক গাইবান্ধা জেলার মশিউর রহমান জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গায় এভাবেই পুরাতন ব্যাটারি প্রক্রিয়াজাত করা হয়। তবে আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাসহ সকলকে ম্যানেজ করেই কারখানা চালাচ্ছি।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি অবগত নই, তবে পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

news24bd.tv/SHS