জাতীয় মসজিদে বসুন্ধরার ইফতারে ধনী-গরিবের মেলবন্ধন

বায়তুল মোকাররমে বসুন্ধরার ইফতারে মুসল্লিরা

জাতীয় মসজিদে বসুন্ধরার ইফতারে ধনী-গরিবের মেলবন্ধন

অনলাইন ডেস্ক

একই সারিতে বসা ফুটপাতে রাত কাটানো ইব্রাহিম, প্রাইভেট কম্পানিতে চাকরি করা শহিদুল ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মাসুদ রানা। সবার উদ্দেশ্য একটি―একসঙ্গে ইফতার করা। এ যেন শ্রেণিবিভেদ ভুলে ধনী-গরিবের মেলবন্ধন। আজ বুধবার (১৩ মার্চ) এমন চিত্রই দেখা গেছে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পবিত্র রমজান মাসজুড়ে রোজাদারদের মাঝে ইফতার বিতরণ কার্যক্রমের দ্বিতীয় দিনে।

বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) প্রেসিডেন্ট ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির প্রধান উপদেষ্টা সায়েম সোবহান আনভীরের পক্ষ থেকে মাসব্যাপী এই ইফতার বিতরণ করা হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আসরের নামাজের পর থেকেই সারিবদ্ধভাবে মসজিদের বারান্দায় বসে পড়ে উপস্থিত মুসল্লিদের বেশির ভাগ। যেখানে ছিল না কোনো শ্রেণিবিভেদ। ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রিকশাচালক থেকে শুরু করে বেসরকারি চাকরিজীবী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, ভবঘুরে, বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদের বারান্দায় ইফতারের জন্য বসে পড়ে।

আবু আব্দুল্লাহ নামে কবি নজরুল সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি পল্টনে একটি কাজে এসেছিলাম। দেখলাম ইফতারের সময় হয়ে গেছে। আসরের নামাজ পড়তে মসজিদে ঢুকলাম। নামাজ আদায়ের পর বসুন্ধরার ইফতারের আয়োজন দেখে সবার সঙ্গে ইফতার করতে বসে পড়লাম। একসঙ্গে অনেক মানুষের ইফতারে শুনেছি অনেক বরকত। ’

স্বেচ্ছাসেবীরা বাইতুল মোকাররম মসজিদের বিভিন্ন দরজায় দাঁড়িয়ে রোজাদারদের ইফতার করার জন্য আহ্বান জানান। ইফতার বিতরণে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্বে থাকা আব্দুর রব ভূঁইয়া কালু বলেন, ‘বসুন্ধরার বিতরণ করা ইফতারে মানুষের উপস্থিতি সব সময় থাকে। রাজধানীতে বিভিন্ন কাজে আসা অনেক মুসাফির এবং মসজিদের বাইরে থাকা মানুষের জন্য আমরা হ্যান্ড মাইক দিয়ে ইফতারের জন্য ডাকতে থাকি, যাতে সবাই অংশ নিতে পারেন। ’

ইফতারের পরে কথা হয় রিকশাচালক শাহ আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তৃপ্তি ভইরা ইফতার করার সুযোগ দিছেন। রিকশা নিয়া যাইতেছিলাম। শুনলাম মসজিদে বসুন্ধরা ইফতার করাইতাছে। এই জন্য চলে আসছি। আল্লাহ বসুন্ধরা গ্রুপের ভালো করুক। ’

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজি মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মানিক উপস্থিত থেকে রোজাদারদের মাঝে এই ইফতারসামগ্রী বিতরণ করেন।

মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী বলেন, ‘এ বছর তৃতীয়বারের মতো বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইফতার বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতিদিন তিন হাজার রোজাদারকে ইফতার করানো হবে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে। ’

তিনি বলেন, ‘রোজাদারদের ইফতার করানো অনেক সওয়াবের কাজ। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর একজন ইসলামপ্রিয় মানুষ। প্রতিনিয়ত তিনি ইসলামের খেদমত করে যাচ্ছেন। ’

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মানিক বলেন, ‘বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে রোজাদারদের ইফতারে যেন কোনো প্রকার সমস্যা না হয় সে জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর সুন্দর ব্যবস্থাপনা করেছেন। পুরো রমজান মাসে এ আয়োজন অব্যাহত থাকবে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আপাতত তিন হাজার মানুষকে ইফতার করানো হচ্ছে। দশম রোজা পর্যন্ত দেখে প্রয়োজন হলে সেটিকে চাহিদামাফিক বাড়ানোর নির্দেশনা রয়েছে। সব শ্রেণির মানুষ বসুন্ধরার ইফতার আয়োজনে উৎফুল্লভাবে অংশ নিচ্ছেন। ’

news24bd.tv/আইএএম