সাদি মুহম্মদ আত্মহত্যার আগে যা যা করেছিলেন

সাদি মুহম্মদ

সাদি মুহম্মদ আত্মহত্যার আগে যা যা করেছিলেন

অনলাইন ডেস্ক

সাদি মুহম্মদ দেশসেরা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী । কিন্তু তিনি পাননি কোনো বিশেষ পুরস্কার। এমনকি এবছর ‘জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ এ তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।  গতবছর তার মা মারা যাওয়ার পর থেকেই বলতেন ‘আমার কিছু ভালো লাগে না’।

বোনও মারা যান পাশাপাশি সময়ে। দুটো মৃত্যু মেনে নেওয়া তার জন্য কষ্টের ছিল।  
শিবলী মুহম্মদ ও সাদি মুহম্মদ মারা যাওয়ার পর বলেন, ‘আমারও কিছু ভালো লাগে না। ’  এসময়পাশে থাকা তার বড় বোন বলেন, ‘ আমরাও মরে যেতে চাই’।

বড় ভাইয়ের চলে যাওয়ার মুহূর্তটা কিছুতেই ভুলতে পারছেন না ভাই শিবলী মহম্মদ। বারবারই কান্না করছেন। তিনি  বলেন, ‘আমার ভাইয়ের অনেক অভিমান ছিল। ও মনে করত, তাকে মূল্যায়ন করেনি। আমরা বোঝাতাম, তোমাকে হাজার কোটি লোক ভালোবাসে। তোমার গান ভালোবাসে। এটাই তো তোমার জন্যে অনেক বড় পাওয়া।
তিনি জানান, তাকে একুশে পদক দেওয়া হলে তিনি লজ্জ্বাই পেয়েছিলেন। সাদিকে পুরস্কারগ্রহণ অনুষ্ঠানে যেতে বললে সাদি বলেছিলেন, ‘আমি খুব খুশি হয়েছি। তুই এদেশে নৃত্যের জগতে অনেক করেছিস। তুই যোগ্য। কিন্তু আমি যাচ্ছি নারে। দেখা হলে কে কি বলে বসবে আমাকে সেটা নিতে পারব না। ’
শিবলী মহম্মদ বলেন, ‘আমরা প্রতিরাতে আড্ডা দিতাম একসঙ্গে। মুভি দেখতাম। গান শুনতাম। আমরা একটু সেকেলে হয়তো। পুরনো দিনের গান শুনতাম। প্রতিমা বন্দোপাধ্যায় এসব। ‘
সবশেষ সাদি মহম্মদের মানসিক অবস্থা নিয়ে শামীম আরা নীপা বলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই বিষণ্নতায় ভুগছিলেন, শিবলী আমাকে বলেছিল, তুই একটু আয়, আমরা সাদি ভাইকে একটু বোঝাতে চাই, তুই থাকলে সাদি ভাই কথা শোনে। এসেছিলাম, অনেকক্ষণ কথা হলো, কথা দিয়েছিল আর ডিপ্রেশনে যাবে না। তখন বলছিলাম, তুমি একজন চিকিৎসকের কাছে যাও, উত্তরে বলেছেন, “না, আমারটা আমি বুঝব। তোমরা আমাকে নিয়ে ভেবো না”।
তখন শামীম আরা নীপা বলেন, চৈত্র সংক্রান্তিতে একটা অনুষ্ঠান করার। এর উত্তরে সাদি চুপ ছিলেন। তবে হাসিখুশি ছিলেন। বুঝতে দেননি তার ভেতরের হতাশা বা অভিমানের কথা।  
যে সন্ধ্যায় সাদি মুহম্মদ আত্মহত্যা করেন সেইদিন রোজা রেখেছিলেন। নামাজ পড়েছেন। ইফতারি করেছেন। ইফতারি বানানোতেও তদারকি করেছেন। গানের রেওয়াজ করেছেন। এর আগে গান শুনেছেন। বই পড়েছেন।  এরপর সন্ধ্যার পর ইফতারি শেষে তাকে দেখভালের দায়িত্বে থাকা ছেলেটিকে বলেন, তুমি এখন যাও। আমি দরজা বন্ধ করে কাজ করব। দরকারে তোমাকে ডাকব।  
ছেলেটি না বোঝে চলে যায়। তখন বাসায় ছিলেন না শিবলি মুহম্মদ। বাসায় ফিরেই দরজা বন্ধ দেখে নক করেন প্রথমে। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে অঘটনের আশঙ্কায় দরজা ভাঙেন। এরপর দেখেন যা হওয়ার ততোক্ষণে হয়ে গেছে। এসব তথ্য শিবলী মুহম্মদ জানান। তিনি বলেন, বড্ড অভিমানী ছিল আমার ভাইটি। কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়েই চলে গেলো।  

news24bd.tv/ডিডি

 

 

সম্পর্কিত খবর