বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ

শহীদ উল্লা খন্দকার 

বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ

শহীদ উল্লা খন্দকার 

বঙ্গবন্ধুর সংক্ষিপ্ত জীবনী : হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালি জাতির ত্রাণকর্তা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ লুৎফর রহমান ও মাতা মোসাম্মৎ সাহারা খাতুনের চার কন্যা ও দুই পুত্রের মধ্যে তৃতীয় সন্তান ছিলেন শেখ মুজিব। বাবা মা তাঁকে ডাকতেন খোকা বলে। অজপাড়াগাঁয়ের সেই খোকাই আজকের বাঙালি জাতির মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

শৈশবেই তিনি সাধারণ মানুষের অধিকার সম্পর্কে ছিলেন সচেতন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন সাধারণ মানুষের ন্যায্য দাবি, অধিকার আদায়ে রাজনীতির কোনো বিকল্প নেই। তাই স্কুল জীবনেই তিনি রাজনীতি শুরু করেন এবং সান্নিধ্য লাভ করেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মতো মহান নেতাদের এবং দাবি জানান ছাত্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠার। ১৯৪৭-১৯৭১ পর্যন্ত প্রতিদিনই ছিল তার কঠিন সংগ্রামের জীবন।

পশ্চিম পাকিস্তানী শাসন শোষণ ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য তিনি নিরলস সংগ্রাম করে গিয়েছেন। এ সংগ্রামের পথ মোটেও সহজ ছিল না। সাধারণ মানুষের অধিকার আদায় করতে গিয়ে তার স্বল্প জীবনের অধিকাংশ সময়ই কেটে গেছে জেলখানার অন্ধকারে। তবুও মানুষের কথা তিনি ভোলেননি। সংগ্রামের পথ থেকে তিনি সরে আসেননি। আপোষহীন চিত্তে সারাজীবন উৎসর্গ করে গিয়েছেন মানুষের জন্য। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বঙ্গবন্ধুর জীবনে জনগণই ছিলেন অন্তপ্রাণ।

কথায় কথায় তিনি বলতেন আমার মানুষ, আমার বাঙালি, আমার গরীব দুঃখী অর্থাৎ এদেশের প্রতিটি মানুষকে তিনি নিজের অন্তরে ঠাঁই দিয়েছেন। জনগণের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। অন্ন-বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা – এই মৌলিক অধিকারগুলো পূরণের মাধ্যমে বাংলার মানুষের উন্নত জীবন প্রতিষ্ঠাই ছিল তাঁর আদর্শ। যার প্রমাণস্বরূপ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫নং অনুচ্ছেদে রয়েছে মৌলিক চাহিদা পূরণের নিশ্চয়তা। বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক মুক্তিই ছিল তাঁর জীবনের স্বপ্ন। আর এই স্বপ্নই হলো তাঁর আদর্শের বহিঃপ্রকাশ। তাঁর স্বপ্ন ছিল বাঙালি জাতির নিজস্ব ভূমিসত্ত্বা থাকবে, যে ভূমিতে বাঙালি তার নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারবে, তার নীতি সে নিজেই পরিচালনা করতে পারবে। জনগণকে অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়া, জনগণকে ক্ষমতায়ন করা, মানুষের জন্য কাজ করা, নিঃস্বার্থভাবে মানুষের জন্য জীবনকে বিলিয়ে দেওয়া- এগুলো হলো জাতির পিতার অন্যতম আদর্শ। যে কারণে তিনি জনগণের দাবি আদায়ের জন্য এক আদর্শবাদী আত্মত্যাগী নেতা হিসেবে আজীবন সংগ্রাম করে গিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনে সততাই ছিল মূল চালিকাশক্তি। এই সততার শিক্ষা তিনি পেয়েছেন পরিবার থেকে। বঙ্গবন্ধু তাঁর বাবার দেওয়া উপদেশ ‌‌‌‌"Sincerity of Purpose & Honesty Of Purpose" মেনেই সারাজীবন রাজনীতি করে গেছেন।

স্নেহময়ী বঙ্গবন্ধু: বঙ্গবন্ধু এদেশের জনগণকে এতোটাই ভালোবাসতেন যে প্রখ্যাত সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট এর প্রশ্নোত্তরে বলেন, “আমার সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে, আমি আমার জনগণকে ভালোবাসি। আর আমার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে যে, আমি আমার জনগণকে অত্যাধিক ভালোবাসি”। তিনি দেশের সাধারণ মানুষ, যারা আজও দুঃখী, যারা আজও নিরন্তর সংগ্রাম করে বেঁচে আছে, তাদের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখকে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির উপজীব্য করার জন্য শিল্পী, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিসেবীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি দেশের গরীব চাষীদের নিয়ে বলেন, “আমাদের চাষীরা হলো সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণি এবং তাদের উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে। গরীবের ওপর অত্যাচার করলে আল্লাহর কাছে তার জবাব দিতে হবে”।

দূরদর্শী বঙ্গবন্ধু : বঙ্গবন্ধু ছিলেন দূরদর্শী নেতা। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীন হলেও, তাতে বাঙালির কোনো লাভ হবে না বিচক্ষণ ও প্রজ্ঞাবান নেতা বঙ্গবন্ধু এটি ভালোভাবেই উপলব্ধি করেন এবং সেসময় হতেই তিনি বাঙালি জাতির স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে থাকেন। “ইতিহাসে তিনিই অমর, যিনি তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইতিহাস সৃষ্টি করেন এবং জাতিকে স্বপ্ন দেখান” যা বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত সচেতনতার সাথে বাস্তবায়ন করেন। এ কারণেই তিনি ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নাম নয়; বঙ্গবন্ধু একটি প্রতিষ্ঠান, একটি সত্তা, একটি ইতিহাস। জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে অন্তরালের বঙ্গবন্ধু আরও শক্তিশালী। যতদিন বাঙালি থাকবে, বাংলাদেশ থাকবে, এদেশের জনগণ থাকবে ততদিনই বঙ্গবন্ধু সবার অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।

দেশপ্রেমিক বঙ্গবন্ধু : নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের মুক্তির আলোকবর্তিকা হয়ে তিনি বিশ্বকে আলোকময় করেছেন, সর্বদাই নিপীড়িত মানুষের কথা ভেবেছেন। এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর মহান উক্তি- “এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না, যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না পায়। ”

আপোষহীন বঙ্গবন্ধু: বঙ্গবন্ধু জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই সংগ্রাম করে গিয়েছেন সাধারণ মানুষের জন্য, তিনি স্বপ্ন দেখতেন সোনার বাংলা গড়ার। তিনি আজীবন মানুষের জন্য কাজ করে গিয়েছেন। জনগণের অধিকার আদায় করতে গিয়ে ৪৬৮২ দিন বা প্রায় ১৩ বছর জেলখানার অন্ধকারে তিনি কাটিয়েছেন, তবুও তিনি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছেন।

অসাম্প্রদায়িক বঙ্গবন্ধু: ১৯৪৭ এর দেশভাগের পরে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বেঁধে গেলে তিনি তাঁর কর্মীদের নিয়ে দাঙ্গা থামানোর চেষ্টা করেন। দাঙ্গায় আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। মানুষকে সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি কখনও হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ করেননি। ১৯৫৫ সালে বঙ্গবন্ধুর অনুপ্রেরণায় “আওয়ামী মুসলিম লীগ” থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে “আওয়ামী লীগ” করা হয়, যা তাঁর অসাম্প্রদায়িক চিন্তা ধারার ফলাফল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে রচিত সংবিধানেও বঙ্গবন্ধু ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে লিপিবদ্ধ করেন, সকল ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের নিজ নিজ ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করেন।

তিনি আরও বলেন, “পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না। সাম্প্রদায়িকতা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বাংলাদেশ। মুসলমান তার ধর্মকর্ম করবে। হিন্দু তার ধর্মকর্ম করবে। বৌদ্ধ তার ধর্মকর্ম করবে, কেউ কাউকে বাধা দিতে পারবে না। এদেশের কৃষক-শ্রমিক, হিন্দু-মুসলমান সবাই সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে”।

মৃত্যুঞ্জয়ী বঙ্গবন্ধু : ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী ছিলেন। এ সময় পাকিস্তানী প্রশাসন বঙ্গবন্ধুর সাথে আপোষ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু যারা বাংলার মানুষের তাজা রক্ত ঝরিয়েছে তাদের সাথে বঙ্গবন্ধু আপোষ করতে রাজি হননি। এমনকি তাঁর সামনেই কবর খুঁড়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়া অথবা কবরে যাওয়া এর মধ্যে যে কোনো একটি বেছে নিতে বললে তিনি মৃত্যুকে ভয় পাননি এবং শত্রুর সাথে কোনো প্রকার আঁতাত করতে রাজি হননি।

তিনি বলেছিলেন, “যে মানুষ মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত তাকে কেউ মারতে পারে না”। যদিও পাকিস্তানী প্রশাসন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার দুঃসাহস দেখায়নি।

আত্মত্যাগী বঙ্গবন্ধু : ১৯৭০-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে কিন্তু পাকিস্তান সরকার বিজয়ী দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে টালবাহানা শুরু করে। এতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ আন্দোলন শুরু করলে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আন্দোলনে গুলি চালায়। এতে অনেক হতাহত হয়। পরবর্তী সময়ে ভুট্টো প্রশাসন বঙ্গবন্ধুর সাথে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলে তিনি বলেন, “আমার ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত লাশের ওপর দিয়ে কীভাবে আমি বৈঠকে যাব। আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না। প্রধানমন্ত্রী হবার কোনো ইচ্ছে আমার নেই। প্রধানমন্ত্রী আসে এবং যায়। কিন্তু, যে ভালোবাসা ও সম্মান দেশবাসী আমাকে দিয়েছেন, তা আমি সারাজীবন মনে রাখব। সাত কোটি বাঙালির ভালোবাসার কাঙ্গাল আমি। আমি সব হারাতে পারি, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা হারাতে পারব না”। তিনি জনগণের ভালোবাসা পেতে প্রধানমন্ত্রীর বিসর্জন দিতেও দ্বিধাবোধ করেননি।

বিচক্ষণ বঙ্গবন্ধু: বঙ্গবন্ধু ছিলেন অত্যন্ত বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। তাঁর বিচক্ষণতার প্রমাণ পাওয়া যায় ১৯৭১ সালে ৭ মার্চে রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে। সেদিন সমগ্র ঢাকা শহর পশ্চিমা বাহিনী দ্বারা ঘেরাও করা ছিল। তিনি জানতেন আজ যদি স্বাধীনতার ঘোষণা করা হয়, তাহলে পশ্চিমা বাহিনীর গুলিতে লক্ষ লক্ষ তাজা প্রাণ ঝরে যাবে। তাই তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে ঘোষণা করেন যে- “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। আমরা মরতে যখন শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না”। বঙ্গবন্ধু রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে, জনসাধারণকে আসলে স্বাধীনতা সংগ্রামের আহ্বান জানান।

মহানায়ক বঙ্গবন্ধু: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। ঠিক তখনই মহানায়ক গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্বে দিয়ে যান তাঁর জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ নির্দেশনা। তিনি বাঙালি জাতিকে দিয়ে যান মুক্তির বার্তা অর্থাৎ মহান স্বাধীনতার ঘোষণা। যার প্রেক্ষিতে দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা অর্জন করি প্রাণের স্বাধীনতা। পাকিস্তান শাসনামলে প্রশাসন ছিল চরম দুর্নীতিগ্রস্ত। দেশে বিরাজ করছিলো চরম অরাজকতা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত ধ্বংস প্রায় দেশকে পুনর্গঠনের জন্য বঙ্গবন্ধু উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পুনর্গঠনের জন্য তিনি ঘোষণা করেন- “আমার সরকার নব রাষ্ট্র এবং নতুন সমাজের উপযোগী করে প্রশাসন যন্ত্রকে পুনর্গঠিত করবে” এবং তারই ধারাবাহিকতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ২১(২) ধারায় সংযোজন করেন “ সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যক ব্যক্তির কর্তব্য”।

তিনি আরও বলেন- “সরকারি কর্মচারীদের জনগণের সাথে মিশে যেতে হবে। তারা জনগণের খাদেম, সেবক, ভাই। তারা জনগণের বাপ, জনগণের ছেলে, জনগণের সন্তান। তাদের এই মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। সমস্ত সরকারি কর্মচারীকেই আমি অনুরোধ করি, যাদের অর্থে আমাদের সংসার চলে তাদের সেবা করুন”। জনগণের প্রতি এই দায়িত্বশীল ভালোবাসাই বঙ্গবন্ধুকে নায়ক থেকে মহানায়কে পরিণত করে এবং তিনি হয়ে ওঠেন একটি জাতির জনক। জাতির সেই সূর্য সন্তান, বাংলার মহানায়ককে এদেশের কিছু কুলাঙ্গার ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। মানুষকে হত্যা করা যায় কিন্তু কারো দর্শন, নীতি ও আদর্শকে হত্যা করা যায় না। মানুষ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তারা হত্যা করতে পারেনি, বঙ্গবন্ধুর দর্শন, নীতি ও আদর্শকে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শই আজ আমাদের পথ চলার পাথেয়। বঙ্গবন্ধুর জীবন-দর্শন, নীতি-আদর্শ, কর্ম ও নেতৃত্বের বহুমাত্রিক গুণাবলীর মধ্যেই নিহিত রয়েছে আদর্শ মানুষ ও সুনাগরিক হওয়ার সব উপাদান। বঙ্গবন্ধুর লেখা 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' ‘কারাগারের রোজনামচা' এবং ‘আমার দেখা নয়া চীন' পাঠ করলে বঙ্গবন্ধুর জীবন-দর্শন ও ত্যাগের মহিমার প্রমাণ পাওয়া যায়।

লেখক: মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা-২১৭ গোপালগঞ্জ-৩ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত  প্রতিনিধি ও সাবেক সচিব।

news24bd.tv/তৌহিদ