খালিদ গান গাইতো সরল ভাবে। জীবনের সরলতার আদলে। প্রানবন্ত থাকতো ,চাইতো হাসতো। কিন্তু প্রানহীনতার আরেকটা দিক দেখেছি যার কারনে স্যাড রোমান্টিক গানগুলো শ্রোতার হৃদয়ে একেকটা সুপার হিট গানের তালিকায় সুখের অনুভূতি ।
আমার আর খালেদের বেশ কয়েকটা ডুয়েট গান হয়েছে “নিছক স্বপ্ন “অ্যালবামে তানভীর তারেকের কথা ও সুরে। প্রিন্স মাহমুদের কথা সুরে “ঘুমাও”গানটা তো অনেকের প্রিয় একটি গান।খালেদ বলতো নুমা তুমি কিন্তু বেশী ভালো গেয়েছো! এখনো মনে পড়ে। আমরা একসাথে দর্শন বিভাগে পড়াশোনা করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ওর অকালে যাওয়া খুব কঠিন করে দিলো আমাদের সবাইকে। মানে আমাদের শিল্পীদেরকে । জীবনের প্রতি উদাসীনতা কেউ রাখবেন না ছোট বড় সব শিল্পীকে বলছি। নিজেকে ভালোবাসুন। আমাদেরকে আমাদেরই দেখতে হবে। সত্যি বলতে কি ,গান এখন হয়না! তাই জীবন নিয়ে অন্য কিছু ভাবুন ।
যেটুকু কাজ হয়েছে তা নিয়ে যথেস্ট মনে করে অন্য কিছু ভাবুন , কাজ করুন কিন্তু হতাশাগ্রস্হ হবেননা। গানের জন্য ভালোবাসা ,ভাবনা, সুর, কথার গভীরতা লাগে। যা এখন কর্পোরেট কালচার ! সেখানে গান হয়না , হয় এ্যাড মার্কেটিং !সেটা কে গান বলা যায়না! তাই সোনালী রূপালী দিনের গান নিয়ে শ্রোতাও বেঁচে থাকবে আমাদের মতোই। অস্হিরতায় আর যাই হোক গান হবেনা!
পরপর সাদী ভাইয়ের চলে যাওয়া আর খালিদের মৃত্যু আমাকে আরো বুঝিয়ে দিয়েছে। শ্রোতা যে আসনে কাউকে বসায় ,তাঁর জন্য বহুদিন কাজ করতে হবেনা একটা ভালো গানই হয়তো যথেষ্ট মনে রাখার জন্য , ভালোবাসার জন্য। হৃদয়ে আসন তৈরী করবার জন্য।
আমাদের প্রত্যেক শিল্পীকে ভালো থাকতে হবে। তাঁর নিজের জন্য, সমাজের জন্য, পরিবারের জন্য। আমাকে আমারই দেখতে হবে।
অভিমান অভিযোগ কোন কাজে আসেনা। মনে রাখতে হবে। আমাদের কষ্ট আছে কিন্তু পাশাপাশি অনুসরনীয় হয়ে বাচঁতে হবে। কঠিন কাজ তবু তা করতে হবে। আমাদেরকে দেখে অনেক কিছু শেখে অনেকেই। তাই সাহসী এবং সুস্হ হয়ে চলতে হবে। যতদিন আয়ু! শিল্পী তাঁর গানে বেঁচে থাকে শ্রোতার হৃদয়ে।
খালিদের বউ শামিমা আর একমাত্র সন্তান ওদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। বন্ধু খালিদ ভালো থেকো ওপারে। সবাইকে আমাদের চলে যেতে হবে সময় মতো।
news24bd.tv/ডিডি