ফেসবুকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভীতি-বিদ্বেষ ছড়িয়েছে জান্তা: জাতিসংঘ

ফেসবুকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভীতি-বিদ্বেষ ছড়িয়েছে জান্তা: জাতিসংঘ

ফেসবুকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভীতি-বিদ্বেষ ছড়িয়েছে জান্তা: জাতিসংঘ

অনলাইন ডেস্ক

২০১৭ সালে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযান শুরুর আগে ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ খুলে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিরতিহীনভাবে যেসব ঘৃণা ও উসকানিমূলক বক্তব্য, পোস্ট ছড়ানো হয়েছিল, সেসবের পেছনে সরাসরি ইন্ধন ছিল দেশটির সামরিক বাহিনীর। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর এএফপি।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে কয়েকটি সেনা ছাউনি ও পুলিশ স্টেশনে বোমা হামলা এবং রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) সেই হামলার দায় স্বীকারের পর রাখাইনে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনা বাহিনী।

অভিযানে সেনা সদস্যদের হাতে সংঘটিত হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মুখে টিকতে না পেরে রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন অন্তত ১০ লাখ রোহিঙ্গা, এখনও তাদের ফেরত নেয়নি মিয়ানমার।

তবে আরসার বোমা হামলারও বেশ আগে থেকে মিয়ানমারে ফেসবুকের শত শত পেজে নিয়মিত ছড়ানো হচ্ছিল রোহিঙ্গাদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ বিভিন্ন বক্তব্য, ছবি এবং পোস্ট। ২০১৭ সালের অভিযানের তদন্তে গঠিত জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ইউএন হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলে ২০১৮ সালে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম অব মিয়ানমার (আইআইএমএম) নামে একটি শাখা সংস্থা খোলে। বুধবার মানবাধিকার কাউন্সিলে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে আইআইএমএম।

 

সেই প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০১৭ সালে ছড়ানো এসব ঘৃণা ও উসকানিমূলক বক্তব্য ও পোস্ট ছিল আসলে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আসন্ন অভিযানের প্রচারণা এবং এই পুরো প্রচারণা প্রকল্প আড়াল থেকে তত্ত্বাবধান করেছে মিয়ানমারের সেনা বাহিনী।

প্রসঙ্গত, ঘৃণামূলক পোস্ট ছড়ানোর অভিযোগে ২০২১ সালে ১৫ হাজার কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে রোহিঙ্গাদের আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থা।

আইআইএমএম সম্প্রতি যে প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে— ‘সামরিক বাহিনীর গোপন তত্ত্বাবধানে ২০১৭ সালের জুন-জুলাইয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ খুলে নিয়মিত ঘৃণা ও উসকানিমূলক বিভিন্ন পোস্ট ছড়ানো হচ্ছিল। মিয়ানমারের লাখ লাখ নেটিজেনের কাছে যেন এসব পোস্ট পৌঁছায় সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল। ’

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে তৈরি মোট ৪৩টি ফেসবুক পেজ শনাক্ত করেছে আইআইএমএম। এসব পেজে ২০১৭ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আপলোড করা হয়েছিল মোট ১০ হাজার ৪৮৫টি ঘৃণা ও উসকানিমূলক পোস্ট, যেগুলো পরে মুছে দেওয়া হয়েছে।

‘অধিকাংশ পোস্টেরই মূল বক্তব্য এক, আর তা হলো— রোহিঙ্গারা যদি মিয়ানমারে থাকে, তাহলে শিগগিরই দেশটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে এবং মিয়ানমার ক্রমশ একটি সন্ত্রাস কবলিত ইসলামি রাষ্ট্রে পরিণত হবে,’ প্রতিবেদনে বলেছে আইআইএমএম।

news24bd.tv/aa