সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগে সোমবার (১ এপ্রিল) থেকে শুরু হয়েছে দুই মাসব্যাপী শুরু হচ্ছে মধু আহরণ মৌসুম। আহরণ মৌসুম শুরুর দিনেই শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ থেকে পাশ-পারমিট নিয়ে ৩২০জন মৌয়াল সরঞ্জামসহ নৌকায় করে দলবেঁধে মধু আহরণে ম্যানগ্রোভ এই বনে গেছেন।
এ বছর সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে রেকর্ড ১ হাজার কুইন্টাল মধু ও ৩০০ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছে। সুন্দরবনে মধু আহরণ ম্যেসুম শেষ হবে আগামী ৩১ মে।
সুন্দরবন বিভাগ এতথ্য নিশ্চিত করে জানায়, গত বছর ৩৬৫টি পাশ (অনুমতিপত্র) নিয়ে ২ হাজার ৪৫০জন মৌয়াল সুন্দরবন পূর্ব বিভাগ থেকে ৮৬৩ কুইন্টাল মধু ও কুইন্টাল মোম ২৫৮.৯৬ আহরণ করে। এবার বৃষ্টির কারনে সুন্দরবনের গাছে পর্যাপ্ত ফুল ফোটায় এবার পূর্ব বিভাগে মধু সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। সেকারনে এবার রেকর্ড ১ হাজার কুইন্টাল মধু ও ৩০০ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছে বন বিভাগ। গরান ও খলিশা গাছের ফুলের মধু সংগ্রহের উপযুক্ত সময় হওয়ায় আহরণ মৌসুমের দিনেই শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ থেকে ১৪ দিনের ৩৮টি পাশ (অনুমতিপত্র) নিয়ে ৩২০জন মৌয়াল বন অভ্যন্তরে গেছেন।
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামের মৌয়াল নুরুল ইসলাম ও খুড়িয়াখালী গ্রামের মৌয়াল আউয়াল খান জানান, গতবছর তাদের দলের প্রত্যেক সদস্য দুই মণ করে মধু পেয়েছিলেন। পাস সংগ্রহ, সরকারি রাজস্ব এবং খাওয়া খরচ মিলিয়ে মৌসুমে তাদের প্রতিজনের খরচ হয় ১২হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা। আর দুই মণ মধু বিক্রি করে একেকজন পেয়েছিলেন ৬০ হাজার টাকা। এবছরও আগাম বৃষ্টি হওয়ায় আশানুরুপ মধু পাবেন বলে মনে করছেন তারা।
বাগেরহাটের পূর্ব বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষ (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান বলেন, পূর্ব সুন্দরবন বিভাগে খলিসা ও গরাণ গাছে ফুলের মধু আহরণের জন্য সোমবার (১ এপ্রিল) থেকেই মৌয়ালদের ১৪ দিন করে পাস (অনুমতিপত্র) দেয়া শুরু হয়েছে। বৃষ্টির কারনে এবছর গাছে ফুলের সমারোহ বেশি মৌয়ালদের মধু আহরণের আগ্রহও বেশী দেখা যাচ্ছে। প্রথম দিনেই শুধুমাত্র শরণখোলা রেঞ্জ এলাকা থেকে ৩০টি পাশ ইস্যু করা হয়েছে। একই দিন এসব পাশ নিয়ে নৌকায় করে দলবেঁধে ২০০ মৌয়াল মধু আহরণে সুন্দরবন অভ্যন্তরে গেছেন। এতে করে বোঝা যাচ্ছে গতবারের তুলনায় বেশি মধু আহরণ হবে। তবে, মৌসুমের শেষে জুন মাস থেকে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার কারণে পুরো মৌসুম মধু মধুরণ সম্ভব হয় না।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহম্মদ নূরুল করিম জানান, একেকজন মৌয়ালকে ১৪ দিনের জন্য পাস দেওয়া হয়। বনে প্রবেশ করার পর মুধ আহরণের জন্য ৯টি নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে এসব মৌয়ালদের। এসব নির্দেশনাগুলো হচ্ছে কোনো মৌয়াল মধু সংগ্রহের সময় মৌমাছি তাড়াতে অগ্নিকুন্ড, মশাল বা অনুরূপ কোনো দাহ্য পদার্থ এবং রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার করতে পারবেন না। এই নির্দেশনা অমান্য করেল তার বিরুদ্ধে বন আইনে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
news24bd.tv/তৌহিদ