নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম নির্যাতন বাড়ে কেন ?

এটি মানববন্ধন - কাউন্টার পাঞ্চ ফাইল ফটো

নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম নির্যাতন বাড়ে কেন ?

দেবদুলাল মুন্না

যুক্তরাষ্ট্রে যতো দিন যাচ্ছে ততোই মুসলিমবিদ্বেষ বাড়ছে। এছাড়া ঠাঁই নেওয়া ফিলিস্তিনিদের প্রতিও  বৈষম্য করা হচ্ছে।  
গতকাল মঙ্গলবার ( ২ এপ্রিল)  যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান (অ্যাডভোকেসি গ্রুপ) কাউন্সিল অন আমেরিকান–ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর) এ তথ্য জানায় বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সিএআইআর তিন দশক আগে থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমবিদ্বেষ নিয়ে তথ্য সংরক্ষণ করতে শুরু করে।

তাদের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৮ হাজার ৬১টি মুসলিমবিদ্বেষী ঘটনার অভিযোগ এসেছে, যা তার আগের বছরের তুলনায় ৫৬ শতাংশ বেশি। সংস্থাটি ৩০ বছর ধরে যে তথ্য রেখেছে, তার মধ্যে গত বছরই সবচেয়ে বেশি মুসলিমবিদ্বেষের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এর মধ্যে গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই ঘটেছে ৩ হাজার ৬০০ ঘটনা।
অন্যদিকে মুসলিম নাগরিক অধিকার গোষ্ঠী বলেছে যে তারা গত বছর যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী ৮,০৬১টি অভিযোগ পেয়েছে, যা তার ৩০ বছরের ইতিহাসে রেকর্ড করা সর্বোচ্চ।

যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমবিদ্বেষী ঘটনার মধ্যে রয়েছে গত অক্টোবরে ইলিনয়ে ছয় বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি-আমেরিকান শিশুকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, নভেম্বরে ভারমন্টে ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত তিন শিক্ষার্থীকে গুলি করা, টেক্সাসে গত ফেব্রুয়ারিতে এক ফিলিস্তিনি-আমেরিকানকে ছুরিকাঘাতের মতো বিভিন্ন ঘটনা।

তবে এ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমবিদ্বেষের অভিযোগ কমতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু গত বছর তা আবার  বেড়ে গেছে। এর প্রধান কারণ ছিল ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সহিংসতার জের।  

এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নেওয়ার পর গত ছয় মাসে মুসলিমবিদ্বেষী ঘটনা চরম মাত্রায় বেড়ে গিয়েছিল।

২০১৬ সালের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ২০১৭ সালের একই সময়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের বিরুদ্ধে হেট ক্রাইম বা জাতিগত সহিংসতা বেড়ে যায় ৯১ শতাংশ। শুধু মুসলিম হওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে হামলা, আক্রমণ, নির্যাতন ও খুনের শিকার হচ্ছে ইসলাম অনুসারীরা।  

সিএআইআরের একজন সমন্বয়ক জয়নাব আরাইন কাউন্টার পাঞ্চকে বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্যাম্পেইন ও ট্রাম্প প্রশাসন এক ধরনের ধর্মান্ধতা ও ঘৃণা ছড়িয়েছে, যার ফলে আক্রোশের শিকার হয়েছে আমেরিকান মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। প্রতিটি নির্বাচনের আগে মুসলিমদের ওপর নির্যাতন বাড়ে। এবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। সে ট্রাম্পাই হোক আর বাইডেন হোক। যে যার মতো মুসলিম ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে নির্যাতন করে ।  
কাউন্টার পাঞ্চকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞানের অধ্যাপক স্যামুয়েল হান্টিং বলেন, নির্বাচনের সময় মুলত রক্ষণশীল ও নেটিবদের ভোট পাওয়ার জন্যেই এরকম ঘটনা বাড়তে থাকে।  

news24bd.tv/ডিডি