কৃত্রিম তাপমাত্রা তৈরির রেকর্ড গড়লেন দক্ষিণ কোরিয়ার পরমাণুবিজ্ঞানীরা

পৃথিবীতে ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা তৈরি করে বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন দক্ষিণ কোরিয়ার পরমাণুবিজ্ঞানীরা।

কৃত্রিম তাপমাত্রা তৈরির রেকর্ড গড়লেন দক্ষিণ কোরিয়ার পরমাণুবিজ্ঞানীরা

অনলাইন ডেস্ক

পৃথিবীতে ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা তৈরি করে বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন দক্ষিণ কোরিয়ার পরমাণুবিজ্ঞানীরা। এখন পর্যন্ত কোনো দেশ তাপমাত্রা তৈরির এ রেকর্ড গড়তে পারেনি। ফিউশন বিক্রিয়ার চুল্লি বা ‘কৃত্রিম সূর্য’ নিয়ে পরীক্ষার সময় বিজ্ঞানীরা এ রেকর্ড গড়েন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় ডেইলি মেইল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবিষ্যৎ জ্বালানি প্রযুক্তির জন্যই মূলত নেয়া হয়েছে এমন পদক্ষেপ। ২০২১ সালে, ফিউশন বিক্রিয়ার চুল্লিতে পূর্বে এ পরিমাণ তাপ উৎপন্ন করা গেলেও সেটির সর্বাধিক স্থায়িত্ব ছিল মোট ৩০ সেকেন্ড। এরপর গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে পরিচালিত পরীক্ষায় ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার স্থায়িত্ব রেকর্ড করা হয় ৪৮ সেকেন্ড।

দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি, ভবিষ্যতের শক্তি প্রযুক্তিতে এই আবিষ্কার একটি মাইলফলক হতে পারে।

বর্তমানে চীন, আমেরিকা এবং ফ্রান্সের মতো বিশ্বের অনেক দেশই কৃত্রিম সূর্য নিয়ে কাজ করছে।
যখন দুটি পরমাণু একত্রিত হয় তখন ঘটে নিউক্লিয়ার ফিউশন। এর ফলে প্রচুর পরিমাণ শক্তির প্রকাশ ঘটে। সূর্যের মতো নক্ষত্রগুলি শুধুমাত্র পারমনবিক সংমিশ্রণ থেকে শক্তি এবং আলো দুইটিই পায়। ফলে পরমানুগুলি যখন চরম তাপ এবং চাপের মধ্যে থাকে তখন ঘটে ফিউশন। এই অবস্থায় পৃথিবীতে এই প্রক্রিয়াটি চালানোর জন্য প্রয়োজন পড়ে একটি বিশেষ চেম্বারের।

এই নিউক্লিয়ার ফিউশন রিঅ্যাক্টর চালাতে সাফল্য পাওয়ার পর বিজ্ঞানীরা অনেকটা সুবিধা পাবেন বলে জানা গেছে। জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানোর মত ফিউশন প্রক্রিয়ায় কোনও দূষণ সৃষ্টি হয় না। তবে পৃথিবীর বুকে এই প্রক্রিয়া আয়ত্ত করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বলে জানিয়েছেন পরমাণু বিশেষজ্ঞরা।
কোরিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ফিউশন এনার্জি কী বলছে?

ফিউশন শক্তি পাওয়ার সবচেয়ে সাধারণ উপায়ে টোকামাক নামে একটি ডোনাট আকারের চুল্লি জড়িত যেখানে হাইড্রোজেন রূপগুলিকে একটি প্লাজমা তৈরি করার জন্য উচ্চ তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা হয়। উচ্চ তাপমাত্রা এবং উচ্চ ঘনত্বের প্লাজমা হল পারমানবিক ফিউশন রিঅ্যাক্টের ভবিষ্যতের চাবিকাঠি বলে দাবি কোরিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ফিউশন এনার্জি-র কেএসটিএআর রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক সি উ ইউনের। তবে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রতিক্রিয়া হতে পারে। কারণ উচ্চ তাপমাত্রার প্লাজমার অস্থিতিশীল প্রকৃতির কারণে এই উচ্চ তাপমাত্রা বজায় রাখা খুব একটা সহজ নয়।

সি উ ইউন জানিয়েছেন, তাদের লক্ষ্য হল- ২০২৬ সালের মধ্যে ৩০০ সেকেন্ডের জন্য ১০০ মিলিয়ন ডিগ্রি প্লাজমা তাপমাত্রা বজায় রাখতে পারা, যা ফিউশন অপারেশনগুলিকে স্কেল করতে পারার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট।

news24bd.tv/ab