জান্নাতে মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতের সংখ্যা কেমন হবে

জান্নাতে মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতের সংখ্যা কেমন হবে

 আলেমা হাবিবা আক্তার

আদম (আ.)-এর আগমনের মাধ্যমে পৃথিবীতে মানবজাতির যাত্রা শুরু হয়। আদম (আ.) ছিলেন প্রথম মানব ও প্রথম নবী। আদম (আ.) থেকে মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত আল্লাহ অসংখ্য নবী-রাসুলকে পাঠিয়েছেন। প্রত্যেক নবীর অনুসারীকে তাঁর উম্মত বলা হয়।

সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসারীদের উম্মতে মুহাম্মদি বলা হয়।
উম্মতের সংখ্যা কত?

পৃথিবীতে ঠিক কতজন নবী ও রাসুল পাঠানো হয়েছে এবং তাঁদের অনুসারী কতজন ছিলেন তার সঠিক সংখ্যা কেউ জানে না। এ বিষয়ে সঠিক জ্ঞান কেবল মহান আল্লাহই রাখেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের কাছে কি সংবাদ আসেনি তোমাদের পূর্ববর্তীদের, নুহের সম্প্রদায়ের, আদের ও সামুদের এবং তাদের পূর্ববর্তীদের? তাদের বিষয় আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ জানে না।

’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ৯)

পৃথিবীতে উম্মতে মুহাম্মদির সংখ্যা

অন্যান্য উম্মতের সম্মিলিত সংখ্যার তুলনায় মুসলিম উম্মাহর সংখ্যা খুব বেশি নয়। কেননা একদিকে যেমন মহানবী (সা.)-এর আগমনের আগে অসংখ্য অগণিত মানুষ গত হয়েছে, তেমনি তাঁর পরবর্তী যুগেও বহু মানুষ এমন রয়েছে, যারা তাঁর অনুসরণ করেনি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা তো অন্যান্য মানুষের তুলনায় এমন, যেমন সাদা ষাঁড়ের দেহে কয়েকটি কালো পশম অথবা কালো ষাঁড়ের শরীরে কয়েকটি সাদা পশম। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩৪৮)

পরকালে উম্মতে মুহাম্মদির সংখ্যা

পরকালে বিপুলসংখ্যক অনুসারীর মাধ্যমে আল্লাহ রাসুলে আকরাম (সা.)-কে সম্মানিত করবেন।

তিনি বলেন, আগের উম্মতদের আমার সামনে পেশ করা হয়। কোনো নবী তাঁর বহু উম্মতকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন। কোনো নবীর সঙ্গে অপেক্ষকৃত ছোট দল। কোনো নবীর সঙ্গে আছে ১০ জন উম্মত। কোনো নবীর সঙ্গে আছে পাঁচজন আবার কোনো নবী একা যাচ্ছেন।

দৃষ্টি দিতেই হঠাৎ দেখি অনেক বড় একটি দল। জিজ্ঞাসা করলাম, হে জিবরিল! ওরা কি আমার উম্মত? তিনি বললেন, না। তবে আপনি শেষ প্রান্তের দিকে তাকিয়ে দেখুন! আমি দৃষ্টি দিলাম : হঠাৎ দেখি অনেক বড় একটি দল। তিনি বললেন, ওরা আপনার উম্মত। আর তাদের অগ্রবর্তী ৭০ হাজার লোকের কোনো হিসাব হবে না, তাদের কোনো আজাব হবে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৫৪১)

জান্নাতে উম্মতে মুহাম্মদির সংখ্যা

পরকালে যারা আল্লাহর জান্নাত লাভ করবে, তাদের ভেতর একক উম্মত হিসেবে মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসারীরাই সংখ্যা গরিষ্ঠ হবে। যেমন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম। আমি আশা করি, তোমরা সব জান্নাতবাসীর এক-তৃতীয়াংশ হবে। (বর্ণনাকারী) আমরা এ সংবাদ শুনে আবার আল্লাহু আকবার বলে তাকবির দিলাম। তিনি আবার বললেন, আমি আশা করি তোমরা সব জান্নাতির অর্ধেক হবে। এ কথা শুনে আমরা আবারও আল্লাহু আকবার বলে তাকবির দিলাম। (সহিহ বুখারি : ৩৩৪৮)

অন্য হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, জান্নাতিদের ১২০টি কাতার হবে। এর মধ্যে এই উম্মতের হবে ৮০টি কাতার এবং অন্য সব উম্মতের হবে ৪০টি। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৫৪৬)

আল্লাহ আমাদের নবীর প্রকৃত উম্মত হওয়ার তাওফিক দিন। আমিন।