দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ মহা বারুনীর স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ মহা বারুনীর স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দিতে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১৩ তম জন্ম তিথি উপলক্ষে শুরু হয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মতুয়া সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ মহা বারুনীর স্নান উৎসব ও তিন দিনব্যাপী বারুনী মেলা।

পূণ্য লাভের আশায় দেশ ও বিদেশের লাখ লাখ মতুয়া ভক্তরা এ পূর্ণ স্নানে অংশ নিচ্ছেন। এ স্নান উপলক্ষে বসেছে তিনদিন ব্যপূ গ্রামীণ মেলা।

জানা যায়, শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ইংরেজি ১৮১১ খ্রিষ্টাব্দ ১১ই মার্চ কাশিয়ানী উপজেলা সাফলীডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ফাল্গুন মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে প্রতি বছর ওড়াকান্দিতে এ স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

শনিবার ভোর ৭টা থেকে শুরু হয় স্নাণ উৎসব। চলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত। পাপ থেকে মুক্তি ও পূণ্য লাভের আশায় দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে আগত পূর্ণাথীরা অংশ নিয়েছেন এ স্নান উৎসবে।

স্নান উৎসবে যোগ দেয়া ভক্তদের পদচারণার সাথে ঢাক, ঢোল আর কাসের শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরা ঠাকুরবাড়ি।

ভক্তরা মন্দিরে পূজা অর্চনা শেষে ঠাকুর বাড়িতে অবস্থিত কামনা সাগর ও বাসনা সাগরে (মূলত পুকুর) স্নান করে ঠাকুরের কাছে পাপ থেকে মুক্তি, পুণ্য লাভ ও দেশবাসীর মঙ্গল প্রার্থনা করেন। শুধু বাংলাদেশ নয় পার্শ্ববর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, চীন, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মতুয়া ভক্তের আগমন ঘটে।

এ উৎসব সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে ঠাকুর বাড়ি এলাকায় সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ চৌকি ও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের পাশাপাশি মতুয়া সংঘের প্রায় তিন শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।

স্নানোৎসবকে ঘিরে ঠাকুর বাড়ির পাশ ঘেঁষে ৬০ একর জায়গাজুড়ে বসেছে ৩ দিনব্যাপী লোকজ মেলা। মেলায় কাঠ, বাঁশ, বেত, মাটির তৈরি জিনিসপত্র ও খেলনা সামগ্রী, তালপাখা, চানাচুর, মিষ্টি দোকান, হোটেল-রেস্তোরার দোকান বসেছে।

ওড়াকান্দির স্নানোৎসবকে আসা অনিমা রানী সরকার বলেন, পূণ্য লাভের আশায় আমি ঠাকুর বাড়ীতে এসেছি। এখানে স্নাণ করে পূর্ণ লাভ করেছি। সেই সাথে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করেছি।

নড়াইলের লোহাগড়া থেকে আসা কাব্য সাহা বলেন, আমি এবারই প্রথম ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়ীতে এসেছি বন্ধুদের সাথে। স্নাণ করলাম, পরিবারের সবার জন্য মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করেছি।

শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর পরিবারের সদস্য ও কাশিয়ানী উপজেলা চেয়ারম্যান সুব্রত ঠাকুর বলেন, এখানে পূর্ণ লাভের আশায় সারা দেশ থেকে পূণ্যার্থীরা এখানে আসেন, স্নান করেন। শুধু বাংলাদেশই নয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, চীন, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মতুয়া ভক্তের আগমন ঘটে। ভক্তরা এখানে এসে স্নান করলে তাদের মনোবাসনা পূরণ হয়।

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক