কটন টেক্সটাইল শিল্পে ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার টাকা

কটন টেক্সটাইল শিল্পে ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার টাকা

অনলাইন ডেস্ক

কটন টেক্সটাইল শিল্পখাতের শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ১ টাকা। গত বৃহস্পতিবার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ শ্রমআইন-২০০৬ অনুযায়ী ‘কটন টেক্সটাইল’ শিল্পখাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে।

সর্বশেষ ২০১৮ সালে এ খাতের শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছিল।

তখন সর্বনিম্ন মজুরি ছিল ৫ হাজার ৭১০ টাকা। সে হিসাবে নতুন কাঠামোতে মজুরি বেড়েছে প্রায় ৭৫ শতাংশ।

এর আগে এ-সংক্রান্ত খসড়া প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ের ন্যূনতম মজুরি বোর্ড। সূত্রমতে, ‘কটন টেক্সটাইল’ শিল্প খাতের সব শ্রমিকের বিভিন্ন পদবি, কাজের ধরন ও প্রকৃতি, চাকরিকাল, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা প্রভৃতি বিবেচনা করে শ্রমিকদের গ্রেড-১ থেকে গ্রেড-১০ এবং কর্মচারীদের গ্রেড-১ থেকে গ্রেড-৬ পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ খাতের গ্রেড-১০-এর শ্রমিক হিসেবে ধরা হয়েছে তাঁত, প্যাকিং, উইভিং ও স্পিনিং কাজের হেলপারকে। উপজেলা পর্যায়ের এ ধরনের শ্রমিকের ন্যূনতম মূল মজুরি তিন হাজার ৬০০ টাকা এবং অন্যান্য ভাতা মিলিয়ে মোট ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৭১০ টাকা। একই গ্রেডের জেলা শহরে কর্মরত শ্রমিকের মজুরি পাঁচ হাজার ৯৯০ টাকা এবং বিভাগীয় শহরে কর্মরত শ্রমিকের মজুরি রাখা হয়েছে সাত হাজার ১১০ টাকা।

অপরদিকে গ্রেড-১-এর আওতায় রয়েছে কার্পেন্টার, ওয়েল্ডারসহ বিভিন্ন অপারেটিং কাজের প্রধানরা। এ পদে বিভাগীয় শহরে কর্মরত শ্রমিকদের মূল মজুরি ছয় হাজার ২০ টাকা এবং বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতাসহ সর্বমোট ১১ হাজার ২৮৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে জেলা শহরে ওই পদের শ্রমিকরা সর্বসাকুল্যে ৯ হাজার ৩৭৮ টাকা এবং উপজেলা শহরে আট হাজার ৯৭৭ টাকা মজুরি পাবেন। সব গ্রেডেই শ্রমিক-কর্মচারীদের বিভাগীয় শহর, জেলা শহর এবং উপজেলা ও অন্যান্য শহর এই তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। তিন ক্যাটেগরির শ্রমিকদের মধ্যে মূল মজুরি ও চিকিৎসা ভাতা সমান হলেও বাড়ি ভাড়া ও যাতায়াত ভাতায় কমবেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া শ্রমিকের জন্য ছয় মাস শিক্ষানবিশকাল নির্ধারণ করে ওই সময়ে ন্যূনতম চার হাজার ১০০ টাকা মজুরি দিতে বলা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনের দ্বিতীয় অংশে কর্মচারীদের ক্ষেত্রে ছয়টি আলাদা গ্রেডে ন্যূনতম মজুরির নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বিভাগীয় শহরে মূল মজুরির ৭০ শতাংশ, জেলা শহরে মূল মজুরির ৪০ শতাংশ এবং উপজেলা ও অন্যান্য এলাকায় মূল মজুরির ৩৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সব গ্রেড ও শ্রেণির শ্রমিক-কর্মচারীরা ৫৫০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পাবেন বলে নির্ধারণ করা হয়েছে।

তথ্যমতে, সিনিয়র ল্যাব টেকনিশিয়ান, সিনিয়র হোস্টেল সুপার, খাতিবসহ গ্রেড-১ কর্মচারীদের বিভাগীয় শহরে ন্যূনতম বেতন ১৪ হাজার ৮২০ টাকা, জেলা শহরে ১২ হাজার ২৯০ টাকা এবং উপজেলা পর্যায়ে ১১ হাজার ৭৮৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে সহকারী গার্ডেনার, ক্লাব অ্যাটেনডেন্ট, কাউবয়, সুইপারসহ গ্রেড-৬ কর্মীদের বিভাগীয় পর্যায়ে সাত হাজার ১৭০ টাকা, জেলা শহরে পাঁচ হাজার ৯৯০ টাকা এবং উপজেলা পর্যায়ে পাঁচ হাজার ৭১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কোনো শ্রমিককে নিম্নতম মজুরির চেয়ে কম মজুরি দেওয়া যাবে না এবং প্রজ্ঞাপন প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ গ্রেড অনুযায়ী পে-স্লিপ দেওয়ার জন্য মালিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আবার কোনো শ্রমিককে প্রজ্ঞাপনের নির্ধারিত মজুরির চেয়ে বেশি মজুরি দেওয়া হলে তা কর্তন করা যাবে না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সরকারি গেজেট প্রকাশের পর থেকেই প্রতি বছর শ্রমিকরা পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পাবেন। এছাড়া কোনো শ্রমিক ঠিকাদারের মাধ্যমে নিযুক্ত হলেও তাদের নির্ধারিত মজুরির চেয়ে কম দেওয়া যাবে না বলে স্পষ্ট করা হয়।

news24bd.tv/DHL