কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে ঝরলো ১৪ প্রাণ

ঝড়ে গাছ উপড়ে বন্ধ হয়ে গেছে পিরোজপুরের একটি সড়ক

কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে ঝরলো ১৪ প্রাণ

অনলাইন ডেস্ক

দেশের বিভিন্ন জেলায় রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তারা পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বাগেরহাট, রাঙামাটি, ঝালকাঠি, খুলনা, নেত্রকোনা ও যশোর জেলার বাসিন্দা।    

পিরোজপুর
পিরোজপুরে সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঝড় শুরু হয়। এ ঝড়ে গাছচাপায় এক নারী ও ঝড়ে উড়ে গিয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।

এতে কমপক্ষে ১৩ জন আহত হন। জেলার ওপর দিয়ে ১৫ মিনিট ঝড়ো গতির বাতাস বয়ে যায়। এতে পুরো জেলার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শত শত গাছ উপড়ে পড়ে কয়েকশ’ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পৌরসভার প্রায় সব সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান এসব তথ্য জানান।  

ভোলা
ভোলার মনপুরা ও লালমোহনে দুপুরের দিকে আকস্মিক ঝড় শুরু হয়। এতে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ও গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় নিজ ঘরে চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া বজ্রপাতেও একজন মারা গেছেন। মনপুরার দুপুর ১২টা দিকে হওয়া ঝড়ের তাণ্ডবে দাসের এলাকায় ছয় জেলেসহ একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে গেছে। যাত্রীদের সবাইকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও ট্রলারটির খোঁজ পাওয়া যায়নি।  

পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর বাউফলে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হওয়া ৩৫ মিনিট স্থায়ী ঝড়ে দুইজন নিহত ও ১০ জন আহত হন। এদিকে বাউফলে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাতসহ ঝড় হয়েছে। এতে তেঁতুলিয়া নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে দুই জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোণিত কুমার গাইন হতাহতের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিখোঁজদের উদ্ধার ও অনুসন্ধানে কাজ চলছে।

বাগেরহাট
বাগেরহাটে ঝড়ের তাণ্ডবে গাছ ও বিলবোর্ড পড়ে একজন নিহত ও ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সকাল ৯টা ৪০ থেকে ১০ টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলা ঝড়ে অন্তত দেড় শতাধিক ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  

রাঙামাটি
রাঙামাটির রাজস্থলী উপজলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ধনুছড়ি পাড়া গ্রামে বজ্রপাতে সাজেউ খিয়াং (৪৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।  বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাজেউ ওই গ্রামের অংসাউ খিয়াংয়ের ছেলে। জানা যায়, বিকেলে বাড়ির সামনে কাজ করার সময় বৃষ্টি শুরু হলে নিজ ঘরে আশ্রয় নেন সাজেউ। এ সময় বজ্রপাতে ঘরের ভেতরেই তার মৃত্যু হয়।  

ঝালকাঠি
ঝালকাঠির দুই উপজেলায় ঝড়ের সময় মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই নারী ও এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে।  আজ বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার শেখেরহাট, পোনাবালিয়া ইউনিয়ন এবং কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।   

খুলনা
জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় বজ্রপাতে মো. ওবায়দুল্লাহ গাজী (২৯) নামের এক মৎস্যচাষি নিহত হয়েছেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়ার কোমলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওবায়দুল্লাহ গাজী ওই গ্রামের মো. দেলোয়ার হোসেন গাজীর ছেলে। ডুমুরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত কুমার সাহা এ তথ্য জানান।  

নেত্রকোণা

জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার হাওরে বজ্রপাতে শহীদ মিয়া (৫২) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। বেলা পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার রাজঘাট হাওরে বজ্রপাতে এ ঘটনা ঘটে। শহীদ মিয়া উপজেলার মেন্দীপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে। নিহতের ভাই স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম জানান, সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে গ্রামের সামনে রাজঘাট হাওরে মরিচ ক্ষেতের পরিচর্যা করছিলেন তার ভাই। দুপুরের দিকে হঠাৎ বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে এ ঘটনা ঘটে।  

যশোর

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় ধান ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে আব্দুল মালেক পাটোয়ারী (৬০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। সকালে উপজেলার বড়পোদাউলিয়া গ্রামের বিলে এ ঘটনা ঘটে। ঝিকরগাছার শংকরপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য পোদাউলিয়া গ্রামের জাহান আলি বিষয়টি নিশ্চিত করেন। নিহত আব্দুল মালেক উপজেলার বড়পোদাউলিয়া গ্রামের মৃত ওমর আলি পাটোয়ারীর ছেলে।
news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক