একেক দেশে একেক সময় চাঁদ দেখার কারণ

চাঁদ পৃথিবীর একটি উপগ্রহ হলেও বিশ্বের সব দেশের অধিবাসীরা একই সময়ে চাঁদ দেখতে পায় না।

একেক দেশে একেক সময় চাঁদ দেখার কারণ

অনলাইন ডেস্ক

চাঁদ পৃথিবীর একটি উপগ্রহ হলেও বিশ্বের সব দেশের অধিবাসীরা একই সময়ে চাঁদ দেখতে পায় না। কোনো দেশে আগে, আবার কোনো দেশে পরে দেখা যায়।

জ্যোতির্বিদদের মতে, চাঁদ আগে পশ্চিমের দেশগুলোতে দেখা যায়, এরপর পূর্বের দেশগুলোতে। ফলে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল যেসব অনুষ্ঠান বা উৎসব যেমন রোজা, ঈদ ইত্যাদি কোথাও আগে, আবার কোথাও পরে শুরু হয়।

যেমন চলতি বছর সৌদি আরব ও প্রতিবেশী দেশগুলোতে গত ১০ মার্চ ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়। পরদিন ১১ মার্চ থেকে শুরু হয় রোজা।

আবার মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইরান, ওমান, জর্ডান, লিবিয়া ও মরোক্কোসহ বেশ কয়েকটি দেশের আকাশে ১১ মার্চ রমজানের চাঁদ দেখা যায়। এসব দেশে রোজা শুরু হয় ১২ মার্চ।

অর্থাৎ সৌদি আরবে আগে চাঁদ দেখা যায়। আর ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে পরে। কারণ সৌদি আরবের অবস্থান পশ্চিমে। ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের অবস্থান পূর্বে।

এই হেরফেরের কারণ কী? জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, দূরত্বের কারণে সব দেশ থেকে একই সময়ে চাঁদ দেখা যায় না। তাদের মতে, যত পশ্চিমে যাওয়া যাবে, তত তাড়াতাড়ি চাঁদ দেখা যাবে। আর যত পূর্ব দিকে যাওয়া যাবে, তত দেরিতে চাঁদ দেখা যাবে। এই কারণে নতুন চাঁদ উঠলেও পশ্চিম দিকে হওয়ায় সৌদি আরবে বাংলাদেশের আগে চাঁদ দেখা যাবে।

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আরও বলছেন, পৃথিবী গোলক আকারের। সে কারণে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদ দেখা যাবে দূরত্বের অনুপাতে। চাঁদের কক্ষপথ পৃথিবীর নিরক্ষ রেখার সঙ্গে সোয়া ৫ ডিগ্রিতে হেলানো থাকে। ফলে একই সময়ে পৃথিবীর কোথাও একই সময়ে চাঁদ দেখা যায় না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন গাণিতিক গণনার মাধ্যমে বের করে ফেলা যায় কোথায়, কখন কোন অক্ষাংশে চাঁদ যাবে বা অবস্থান করবে। চাঁদ কখনও স্থির হয়ে থাকে না। ফলে এটা সহজেই বোঝা যায়, চাঁদের অবস্থান কোথায়।

ফলে রোজা রাখা বা ঈদের ক্ষেত্রে ইসলামি মতে, চাঁদ দেখতে হবে। চাঁদ একেক দেশ বা এলাকায় একেক সময়ে দেখার কারণে রোজা, ঈদসহ ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো ভিন্ন ভিন্ন দিনে হয়ে থাকে।

চাঁদের আবর্তনের পর্যায়কাল ও তার কক্ষপথের পর্যায়কাল একই হওয়ায় আমরা পৃথিবী থেকে চাঁদের একই পৃষ্ঠ সবসময় দেখতে পাই। চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে ২৭ দিন ৭ ঘণ্টা ৪৩ মিনিট ১১ সেকেন্ডে।

কিন্তু সমসাময়িক আবর্তনের ফলে পৃথিবীর পর্যবেক্ষকরা প্রায় ২৯ দশমিক ৫ দিন হিসেবে গণনা করে। একটি ঘণ্টা আবর্তনের পর্যায়কাল অর্ধেক ডিগ্রি দূরত্ব অতিক্রম করে।

চাঁদ পৃথিবীকে যে অক্ষরেখায় পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করছে, সে অক্ষরেখায় চাঁদের সময় লাগে একদিন বা ২৪ ঘণ্টা। পৃথিবী থেকে আমরা চাঁদের শতকরা প্রায় ৫৯ ভাগ দেখতে পেয়ে থাকি।  

চাঁদ সবসময় আকাশের যে অঞ্চলে থাকে, তাকে জোডিয়াক (রাশিচক্র) বলে। যা ক্রান্তিবৃত্তের প্রায় ৮ ডিগ্রি নিচে এবং গ্রহণরেখার ওপরে অবস্থান করে।

news24bd.tv/ab

এই রকম আরও টপিক