বর্ষ বরণের অপেক্ষায় রমনা বটমূল

রমনা বটমূল

বর্ষ বরণের অপেক্ষায় রমনা বটমূল

অনলাইন ডেস্ক

আজ বাংলা নববর্ষ ১৪৩১। নতুন বছরকে বরণ করতে দেশব্যাপী চলছে বিশাল আয়োজন। নানান আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় নতুন বছরকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান হয় রাজধানীর রমনা বটমূলে।

ইতোমধ্যে মঞ্চ প্রস্তুতসহ সব ধরনের প্রস্তুতি শেষে বর্ষ বরণের জন্য অপেক্ষা করছে রমনা বটমূল।  

শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে রমনার বটমূলে অনুশীলন করেন সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র ছায়ানটের শিল্পীরা। ১৭০ জন শিল্পী মঞ্চে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অনুশীলন করেছেন। মূলত শব্দ ব্যবস্থাপনা, কারিগরি ব্যবস্থা ও মঞ্চের সঙ্গে শিল্পীদের অভ্যস্ত করাই ছিল আজকের এ মহড়ার মূল উদ্দেশ্য।

তৈরি করা হয়েছে একসঙ্গে সব শিল্পীর বসার মতো করে মঞ্চ। বসানো হয়েছে পাটাতন। বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে নির্দিষ্ট সীমানা।

বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে ছায়ানটের পক্ষ থেকে যাদের প্রবেশের বিশেষ কার্ড দেওয়া হয়েছে, তারাই শুধু সীমানার ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন। অন্য সবাই বর্ষবরণের এ আয়োজন উপভোগ করতে পারবেন নিরাপত্তাবেষ্টনির বাইরে বসে।

আগামী রোববার (১৩ এপ্রিল) ভোরে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ৩০টি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানাবেন ছায়ানটের শিল্পীরা। ভোরের আলো ফুটতেই আহীর ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে এবারের নতুন বছর আবাহনের শুরু হবে। পুরো অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। আজকের মহড়ায় সেই গানগুলোই গাওয়া হয়।

মহড়ার সঙ্গে ছিল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি। ২০০১ সালে রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। সেই তৎপরতা ছিল আজকের মহড়াতেও। বোমার বিস্ফোরণের শব্দ তৈরি করে র‍্যাবের মহড়াও দেওয়া হয়। এ সময় ১০ মিনিটের জন্য বন্ধ রাখা হয় মঞ্চে অনুশীলন।

ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এমন নিরাপত্তাবেষ্টনির মধ্যে সাংস্কৃতিক আয়োজন শিল্পী ও দর্শক- সবার জন্যই অস্বস্তিকর। তবে পরিস্থিতি মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। ’

রমনার বটমূলে মূল আয়োজনটি হলেও পুরো রমনায় শব্দযন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। একটু পরপর বসানো হয়েছে মাইক। যাতে দূর থেকেও শোনা যায় বর্ষবরণের আহ্বান। এদিকে রমনার বটমূলের নিরাপত্তার দিকটি নিশ্চিত করতে সেখানে আছেন র‌্যাবের সদস্যরা। এলাকাজুড়ে বসানো হয়েছে সিসিটিভি। আছে ডগ স্কোয়াড।

ছায়ানটের যুগ্ম সম্পাদক জয়ন্ত রায় বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে সংস্কৃতির সম্পর্ক তৈরি করতে না পারাতেই আজকের এ সংকট। শিল্পীদের গান গাইতে হবে নিরাপত্তাবেষ্টনির ভেতরে থেকে। ’

দেশের অন্যতম প্রধান সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র ও সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছায়ানটের আয়োজনে বর্ষবরণের সংগীতানুষ্ঠান হয়ে আসছে ১৯৬৭ সাল থেকে। এরপর কেবল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ অনুষ্ঠান হয়নি। করোনা মহামারির সময় দুই বছর হয়েছে অনলাইনে। বাকি সময় ধারাবাহিকভাবে হয়েছে রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।  
news24bd.tv/আইএএম