মুম্বাইয়ের মুখোমুখি চেন্নাই। তাও আবার মুম্বাইয়ের হোম গ্রাউন্ডে। লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছিলো। কিন্তু লঙ্কান পেসার মাথিশা পাথিরানার কৌশলী বোলিংয়ে মুম্বাইকে ২০ রানে রুখে দেয় চেন্নাই।
রোহিত ঝড়ে প্রায় ছিটকে যাওয়া ম্যাচে দলকে দারুণ জয় এনে দিলেন পাথিরানা। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ভালোই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে টাইগার পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে।
নিজের কোটার ৪ ওভারে প্রায় ১৪ গড়ে রান খরচ করেছেন ৫৫।
রোববার (১৪ এপ্রিল) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রুতুরাজ গায়কোয়াড় ও শিভাম দুবের জোড়া ফিফটি ও শেষ দিকে ধোনির হ্যাটট্টিক ছয়ে ২০৬ রানের বড় পুঁজি গড়েছিল চেন্নাই। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পেয়েছিল মুম্বাই। এক পাথিরানার তাণ্ডবে ধস নামে স্বাগতিক শিবিরে। ৬৩ বলে ১০৫ রানে অপরাজিত থেকেও দলকে জেতাতে পারলেন না রোহিত শর্মা। ৪ ওভারে ২৮ রান খরচায় ৪ উইকেট শিকার করেছেন পাথিরানা।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিংয়ে বদল এনে শুরুটা ভালো হয়নি চেন্নাই সুপার কিংসের। নিয়মিত ওপেনার রুতুরাজ গোয়কোয়াড়ের বদলে এদিন রাচিন রবীন্দ্রের সঙ্গে ওপেনিংয়ে এসেছিলেন আজিঙ্কা রাহানে। তবে দলীয় ৮ রানে জেরাল্ড কোয়েটজের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন রাহানে।
রাহানের বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেটে ৫২ রানের জুটি গড়েন রবীন্দ্র এবং গায়কোয়াড়। ১৬ বলে ২১ রান করে রবীন্দ্র ফিরলে ভাঙে সেই জুটি। তৃতীয় উইকেটে বড় জুটি বাঁধেন দুবে-গায়কোয়াড়। ৪৫ বলে ৯০ রানের সেই জুটিই দলকে বড় সংগ্রহের ভিত এনে দেয়।
৫ ছক্কা এবং ৫ চারে ৩৯ বলে ৬৯ রান করে হার্দিক পান্ডিয়ার শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন গায়কোয়াড়। তার বিদায়ের পর রানের গতি কিছুটা কমে। তবে শেষদিকে মাহেন্দ্র সিং ধোনির ক্যামিও ইনিংসে ২০০ রানের গণ্ডি পেরোয় চেন্নাই।
২০তম ওভারে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম তিন বলে তিনটি ছক্কা মারেন ধোনি। নিজের খেলা চতুর্থ বলে ২ রান নেন তারকা এই ব্যাটার। ৪ বলে ২০ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। দুবেও অপরাজিত ছিলে শেষ পর্যন্ত। ৩৮ বলে ৬৬ রান করেছেন তিনি।
জবাবে শুরুটা ভালোই করেন দুই মুম্বাই ওপেনার রোহিত শর্মা ও ইশান কিশান। তবে একটা ওভারেই যেন ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। অষ্টম ওভারে মাথিশা পাথিরানাকে নিয়ে আসেন রুতুরাজ। সেই ওভারের প্রথম বলেই ঈশানকে আউট করেন শ্রীলঙ্কার বোলার। মরিয়া হয়ে মুম্বাই তিনে নামিয়েছিল সূর্যকুমার যাদবকে। ক্রিজে টিকলেন মাত্র দু’টি বল। তবে সূর্যকুমারের আউট হওয়ার বলে মোস্তাফিজের ক্যাচটি চলতি আইপিএলের অন্যতম সেরা ক্যাচ হতেই পারে। পাথিরানার বলে তুলে দিয়েছিলেন থার্ডম্যানে। আর একটু হলেই ছয় হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু মোস্তাফিজ সেই ক্যাচ ধরেন। ভারসাম্য সামলাতে না পেরে বল উপরে ছুড়ে দিয়েছিলেন। বাউন্ডারির ভেতরে একটি পা রেখে ভারসাম্য ফিরিয়ে আবার মাঠের ভেতরে এসে ক্যাচ লোফেন। রিভিউ দেখার পর আউট দেওয়া হয়।
পর পর দু’টি উইকেট হারিয়ে বেসামাল হয়ে যাওয়া মুম্বাইয়ের হাল ধরেন রোহিত এবং তিলক ভার্মা। দু’জনে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬০ রান যোগ করেন। দুজনই আগ্রাসী হয়ে খেলছিলেন। কিন্তু আবারও পাথিরানাকে এনে ধাক্কা দিলেন রুতুরাজ। দ্বিতীয় স্পেলের প্রথম বলেই পাথিরানা ফেরালেন তিলককে। এরপর হার্দিককে ফেরালেন তুষার দেশপান্ডে।
যদিও শেষদিকে মোস্তাফিজুরের বলে দুই ছয় মেরে কিছুটা আশা জাগিয়েছিলেন টিম ডেভিড। তবে অতি আগ্রাসী ডেভিডকে ক্যাচ দিয়েই তার মাশুল দিতে হয়। রোহিতও শেষ অব্দি খেলে শতরান করলেন। কিন্তু সেরূপ সঙ্গ না পাওয়ায় হার নিয়েই ছাড়লেন মাঠ।
৪ ওভার খরুচে বোলিং কর পাথিরানা ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার নিজের ঝুলিতে ভরেছেন।
news24bd.tv/SC
