অপহৃত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ফেলে গেল দুর্বৃত্তরা

সংগৃহীত ছবি

অপহৃত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ফেলে গেল দুর্বৃত্তরা

নাটোর প্রতিনিধি:

নাটোরে অপহৃত সিংড়া উপজেলা নির্বাচনের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশাসহ তিনজনের খোঁজ মিলেছে। তবে দুর্বৃত্তদের ব্যাপক মারধরে দেলোয়ার হোসেন পাশার অবস্থা আশঙ্কাজনক।  

সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশি পাহারায় নাটোর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নাটোর পুলিশ সুপার কার্যালয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকালে জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে অপহৃত দেলোয়ারকে বিকাল সোয়া পাঁচটার দিকে তার নিজ বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।

খবর পেয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম সেখানে ছুটে যান। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে দেলোয়ারকে পুলিশি পাহারায় নাটোর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে তাৎক্ষণিক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোছা. রওশনারা বেগম জানান, দেলোয়ারের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

রোগীর মাথায় আঘাত রয়েছে। বাইরে থেকে রক্তপাত না হলেও অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। তার মুখ দিয়ে লালা ঝরছে এবং তিনি অচেতন অবস্থায় আছেন। তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল (জটিল)। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

দেলোয়ারের সঙ্গে থাকা তার সহোদর এমদাদুল হক জানান, বেলা পৌনে ১১টার দিকে তাকে ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন মুন্সিকে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে থেকে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা সবাই সম্ভাব্য প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের কর্মীসমর্থক। তারা একটা কালো হাইস মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে থাকে।  

এ সময় তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে আহত করা হয়। তবে তার ভাই দেলোয়ার হোসেনকে একই স্থান থেকে অপহরণ করার পর দুর্বৃত্তরা বেদম মারধর করেছে। তার অবস্থা ভালো নয়। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা পোষণ করায় তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান।

লুৎফুল হাবীব রুবেল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের আপন শ্যালক।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সম্ভাব্য প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমি অনেক আগে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছি। কিছুক্ষণ আগে পত্রিকা পড়ে ঘটনা জানলাম।

ঘটনার সময় যাদের দেখা গেছে তারা আপনার সহযোগী, আপনার নির্দেশে তারা অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি কাউকে অপহরণ করতে বলিনি।

নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, সকালের ঘটনাটি তিনি জানতেন না। বিকালের ঘটনার পর সম্ভাব্য প্রার্থী দেলোয়ারকে উদ্ধারের জন্য ব্যাপক অভিযান শুরু করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে দুর্বৃত্তরা তাকে তার বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায়। তিনি অসুস্থ। তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করা হবে। তবে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।

জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঞা জানান, তিনি নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। তিনি পুলিশ সুপারকে বিভিন্ন স্থানে চৌকি বসিয়ে ওই মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীকে উদ্ধারে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তদন্ত করে এ ঘটনার সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

news24bd.tv/কেআই