বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অটুট, কোনো প্রচারণায় নষ্ট হবে না: শ্রিংলা

হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অটুট, কোনো প্রচারণায় নষ্ট হবে না: শ্রিংলা

বাংলাদেশ ও মালদ্বীপে ‌‘ভারত বর্জন’-এর যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।  

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খুব জোরালো। এ কারণে ভারত বর্জনের মতো কোনো প্রচারণায় এই সম্পর্ক নষ্ট হবে না।

 

হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার ছাড়াও থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি ভারতের জি২০-এর সভাপতিত্বের মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।  

শ্রিংলা বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য সব সময় মানুষের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করা। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক সন্তোষজনক পর্যায়ে আছে।

এ সম্পর্কের ইতিবাচক আবহকে কাজে লাগিয়ে একে আরও এগিয়ে নেওয়ার ওপর জোর দেন তিনি। ’
 
বাংলাদেশ ও মালদ্বীপে ‘ভারত বর্জন’ প্রচারণা নিয়ে চিন্তিত নন বলে জানান হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ভারতের প্রতি ‘খুব শক্তিশালী এবং ইতিবাচক সম্পর্ক’ তিনি দেখতে পেয়েছেন।

শ্রিংলা বলেন, ‘আমি গত দেড় দশকে খুব কাছ থেকে কাজ করেছি। আমি খুবই নিশ্চিন্তে বলতে পারি, এই দুই দেশের (বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ) মানুষেরই ভারতের প্রতি অত্যন্ত দৃঢ় এবং ইতিবাচক সম্পর্ক ও দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। ’

শ্রিংলা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ পর্যটন, চিকিৎসার উদ্দেশ্যে এবং উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতে ভ্রমণ করে। ভারতের শাক-সবজি, ডিম থেকে প্রতিটি পণ্য মালদ্বীপে যায়। ’

হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের দেওয়া ঋণের ৫০ শতাংশই পায় বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলো। এ দেশগুলো কভিড টিকা বিতরণেও অগ্রাধিকার পেয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা থেকে দেশগুলো অব্যাহতি পেয়েছে। ’ 

শ্রিংলা বলেন, ‘নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়বে। সমুদ্রের তলদেশে তার দিয়ে ভারত থেকে শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুৎ গেলে ওই দেশটিতে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা আসতে পারে। ’

ভারতের ঋণের আওতায় অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়া প্রসঙ্গে শ্রিংলা বলেন, ‘প্রতিটি দেশেরই ঋণ নেওয়ার বা ধারণ করার নির্দিষ্ট ক্ষমতা আছে। এটি চীনা ঋণের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ’

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে শ্রিংলা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বর্তমান সম্পর্ককে ‘সোনালী অধ্যায়’ বলে অভিহিত করেছেন। ঋণসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই এগিয়ে যেতে হবে। ”

শ্রিংলা বলেন, ‘আমরা আমাদের সম্পর্কের মধ্যে বেশির ভাগ বিরক্তি দূর করেছি। আমাদের সম্পর্কের এই গতি বজায় রাখতে হবে। ’ 

গত ২০ মার্চ ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। এই ঘোষণা দিয়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সমালোচনার মধ্যে পড়েন তিনি। পরদিনই রিজভী বলেন, ‘এটি তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। ’ 

এরপর গত ২৫ মার্চ বিএনপির স্থায়ী কমিটিতেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, এ ধরনের ঘোষণা কোনো রাজনৈতিক দলের হতে পারে না। সামাজিক আন্দোলনকে রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার সমালোচনা করেন তাঁরা।

news24bd.tv/আইএএম