পরিবেশবান্ধব শক্তির ওপর শতভাগ নির্ভরশীল ৭ দেশ

সংগৃহীত ছবি

পরিবেশবান্ধব শক্তির ওপর শতভাগ নির্ভরশীল ৭ দেশ

অনলাইন ডেস্ক

ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদনের এমন কয়েকটি দেশের নাম উঠে এসেছে যারা জিওথার্মাল, হাইড্রো, সৌর বা বাতাস থেকে থেকে ৯৯ দশমিক সাত শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস থেকে প্রায় শতভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে সাতটি দেশ। দেশগুলো হচ্ছে আলবেনিয়া, ভুটান, নেপাল, প্যারাগুয়ে, আইসল্যান্ড, ইথিওপিয়া ও কঙ্গো।

‘ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)’ এবং ‘ইন্টারন্যাশনাল রিনিউএবল এনার্জি এজেন্সি (আইরেনা)’র মতো সংস্থা বলছে, ২০২১ ও ২০২২ সালে আরও ৪০টি দেশে নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে অন্তত ৫০ শতাংশ, যার মধ্যে ইউরোপীয় দেশ ১১টি।

এই প্রতিবেদন প্রকাশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাপক মার্ক জ্যাকবসন বলেন, আমাদের যুগান্তকারী প্রযুক্তি দরকার নেই। সবকিছুকে বিদ্যুতায়ন করার ফলে কার্বন নিঃসরণের হার বাড়ছে। আমাদের এ প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। আর এর বদলে বাতাস, পানি ও সৌর উৎসের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে।

এর মধ্যে রয়েছে উপকূলীয় বাতাস, সৌর ফটোভলটাইক, নিমজ্জিত সৌর শক্তি, জিওথার্মাল বিদ্যুৎ এবং ছোট ও বড় হাইড্রোইলেক্ট্রিসিটি।

অধ্যাপক জ্যাকবসন আরও বলেন, জার্মানির মতো দেশও অল্প সময়ের জন্য নবায়নযোগ্য উৎস থেকে শতভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছিল।

জানুয়ারিতে আইইএ’র প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে সাড়ে ৪১ শতাংশ, যা এর আগের বছরের তুলনায় সাড়ে ১০ শতাংশ বেশি।

এদিকে, ২০২২ সালে স্কটল্যান্ডে যে নবায়নযোগ্য শক্তির প্রযুক্তি ছিল, সেগুলোর সক্ষমতা দেশটির সামগ্রিক বিদ্যুৎ চাহিদার চেয়েও ১৩ শতাংশ বেশি।

বিদ্যুৎ উৎপাদক কোম্পানি ‘স্কটিশ রিনিউএবলস’-এর প্রধান নির্বাহী ক্লেয়ার ম্যাক বলেন, নেট-জিরো লক্ষ্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে এ রেকর্ড ভাঙা পরিসংখ্যান স্কটল্যান্ডের জন্য বড় এক মাইলফলক। এমনকি আমাদের বিশ্বমানের নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসে যে অপার সম্ভাবনা আছে, তাও স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে এর মাধ্যমে।

স্কটল্যান্ডে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সিংহভাগ ভূমিকা ছিল বায়ু শক্তির। গবেষকদের অনুমান বলছে, আসন্ন বছরগুলোয় বৈশ্বিক বিদ্যুৎ সরবরাহে আধিপত্য দেখাবে সৌর শক্তি।

সৌর কোষের কার্যকারিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বড় অগ্রগতি দেখা গেছে, যেখানে প্রাথমিক উদ্দীপক হিসেবে কাজ করেছে ‘পেরোভস্কাইট’ নামের ‘মিরাকল ম্যাটেরিয়াল’।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাণিজ্যিক খরচও কমে এসেছে, যার সহায়তায় গত বছর ‘ইউনিভার্সিটি অফ এক্সেটার’ ও ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন’-এর বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, সৌর বিদ্যুৎ ‘এমন এক পর্যায় এসে পৌঁছেছে’, যার মাধ্যমে ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের প্রধান বিদ্যুতের উৎস হয়ে উঠবে এটি।

২০২৩ সালে ‘নেচার কমিউনিকেশনস’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে উঠে এসেছে, প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির সহায়তায় পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রায় পৌছানো শুধু সম্ভবই না, বরং এটি অপরিহার্য।

গবেষকরা গবেষণাপত্রে লিখেছেন, অতীতের বিভিন্ন নীতি প্রযুক্তিগত গতিপথে বাধা সৃষ্টি করায়, সৌর শক্তি ধীরে ধীরে আধিপত্য বিস্তার করতে পারে, যেখানে জলবায়ু নীতি মেনে চলার মতো বাধ্যবাধকতাও নেই। সৌরশক্তি বিশ্বের সবচেয়ে সহজলভ্য শক্তির উৎস। আর এতে বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়ায় এর অর্থনৈতিক আবেদনও বাড়ছে।

news24bd.tv/DHL