নাইজার থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি যুক্তরাষ্ট্র

সংগৃহীত ছবি

নাইজার থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক

নাইজারের সামরিক জান্তা সরকারের দাবিতে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সে দেশ থেকে তাদের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে। মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ট ক্যাম্পবেল গত শুক্রবার নাইজারের প্রধানমন্ত্রী আলি লামিন জেইনের সঙ্গে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তবে কবে নাগাদ সেনা প্রত্যাহার করা হবে সে বিষয়টি এখনো জানানো হয়নি।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, আগামী দিনে প্রত্যাহারের সময়সীমা নিয়ে প্রতিরক্ষা বিভাগের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে।

এরপর সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, ওয়াশিংটনে নাইজারের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠককালে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ডেপুটি সেক্রেটারি কার্ট ক্যাম্পবেল সৈন্য সরিয়ে নেয়ার আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন।

২০২৩ সালে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে আবদোরাহমানে চিয়ানি। ওই সময় দেশ জুড়ে ফ্রান্স বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়।

দেশটিতে সহস্রাধিক মার্কিন সেনা অবস্থান করছে। নাইজার থেকে সেনা প্রত্যাহারে আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতিতে গভীর প্রভাব ফেলবে। বিশেষত নাইজার যখন ইরান ও রাশিয়ার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরো গভীর করছে। এর আগে গত মাসে নাইজার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা চুক্তি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। ওই চুক্তিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সামরিক ও বেসামরিক কর্মীদের নাইজারে কাজ করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল।  

নাইজার একসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক অংশীদার ছিল, কিন্তু সামরিক জান্তা গত বছরের জুলাইয়ে ক্ষমতায় আসার পর থেকে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।  

সাম্প্রতিক বিক্ষোভে জান্তার প্রতি সমর্থন করে অনেককেই ‘‘ইউএসএ রাশ আউট অব নাইজার’’ লেখা ফেস্টুন বহন করতে দেখা যায়।

এ বছরের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক চুক্তি বাতিল করে দুই ঘাঁটিতে শুধু এক হাজার মার্কিন সেনাকে থাকার অনুমতি বহাল রাখে নাইজার।

তবে এরমধ্যেই মার্কিন সেনাদের তাড়াতে নাইজারে আন্দোলন শুরু করে দেশটির হাজারো নাগরিক।

গত বছরের ২৬ জুলাই সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন দেশটির প্রেসিডেনশিয়াল গার্ডের সদস্যরা। অভ্যুত্থানের পর নাইজারের প্রেসিডেনশিয়াল গার্ডের প্রধান আবদোরাহমানে চিয়ানি নিজেকে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করেন, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে একটি অভ্যুত্থান হিসেবে দেখেছিল।  

জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর থেকেই পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে প্রতিবেশী মালি ও বুরকিনা ফাসোর পথেই হেঁটে চলেছে নাইজার, যারা এ অঞ্চলে ইউরোপীয় বাহিনীকে হটিয়ে দিতে চায় এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভর করতে চায়।

এদিকে আফ্রিকার আরেক দেশ শাদ মার্কিন সেনাদের বের করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। যে চুক্তির অধীনে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা দেশটিতে অবস্থান করছেন সেই চুক্তি বাতিল করার হুমকি দিয়েছে দেশটি। সব মিলিয়ে এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়েছে।

news24bd.tv/DHL