চাকরি হারালেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক, বেতন ফেরতের নির্দেশ

হাইকোর্টের রায়ে চাকরি হারালেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক, সুদসমেত বেতন ফেরতের নির্দেশ

চাকরি হারালেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক, বেতন ফেরতের নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক

লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই বড় ধাক্কার মুখে পড়লো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একদিনে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের নিয়োগ বাতিলের রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে ২০১৬ সালে শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মোট ৩৫০টি মামলা হয়েছিল।

ওইসব মামলা একত্র করে সোমবার (২২ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরির মাধ্যমে যাদের চাকরি দেয়া হয়েছিল, ৪ সপ্তাহের মধ্যে সাত বছরের সম্পূর্ণ বেতন ১২ শতাংশ সুদসহ সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে।

স্বাধীনোত্তর সময়ে এত বড় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ বাংলায় এমনকি পুরো ভারতেও বিরল। আজ সকাল থেকেই কলকাতা হাইকোর্ট চত্বরে আঁটসাঁট নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়। হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী থেকে শুরু করে অনেকের নজর ছিল এই রায়কে ঘিরে।

 

সোমবার নির্ধারিত সময় সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কলকাতা হাইকোর্টে এসএসসি মামলার রায় পড়তে শুরু করেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক। ২৮১ পাতার রায়ে মোট ৩৭০টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত সব মামলা গ্রহণযোগ্য বলেই পর্যবেক্ষণ বিচারপতি বসাকের। ২০১৬ সালের বিতর্কিত পুরো প্যানেলই খারিজ করার সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।

এই রায় শিক্ষা দপ্তর তথা স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওপর বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, যে ২৫ হাজার ৭৫৩ জন চাকরি হারিয়েছেন। চার সপ্তাহের মধ্যে বেতনের টাকা ১২ শতাংশ সুদসহ ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলা স্কুল পর্যবেক্ষককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সেই টাকা আদায়ের।  

হাইকোর্ট জানিয়েছে, বেআইনিভাবে নিয়োগের বিনিময়ে টাকা নেয়া হয়েছে বা টাকার বিনিময়ে যারা চাকরি কিনেছেন, তারা প্রত্যেকেই অভিযুক্ত। হাইকোর্টের রায়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার ইতোমধ্যেই তদন্ত প্রক্রিয়া চালাচ্ছে সিবিআই। এদিন সিবিআইকে তদন্ত চালিয়ে যেতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট।  

বিচারপতি দেবাংশু বসাক এদিন জানিয়েছেন, যে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের নিয়োগ বাতিল করা হলো, সেই শূন্যপদে অবিলম্বে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে। সময় বেঁধে সেই নিয়োগ করতে হবে এবং সেই প্রক্রিয়া হতে হবে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ। একইসঙ্গে ওএমআর প্রস্তুতকারক সংস্থা নাইসার বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আদালত। হাইকোর্টের মতে, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলের পরে সমস্ত নিয়োগই অবৈধ।

এদিনের রায়ে শুধুমাত্র সোমা দাস নামে এক নারীর চাকরি থাকবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। কারণ, তিনি ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। মানবিক কারণে তার চাকরি বহাল রেখেছেন আদালত।

news24bd.tv/aa