সুখবর নেই

সুখবর নেই

সুখবর নেই

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে সারা দেশে আরো চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আবহাওয়া অফিস বলেছে, আজ বুধবার দিনের তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে তাপপ্রবাহ আরো ছড়াতে পারে। বৃষ্টির তেমন সম্ভাবনা না থাকায় মাসের বাকি দিনগুলোতেও তাপমাত্রা ও গরমের অনুভূতি কমবেশি একই রকম থাকতে পারে।

অব্যাহত গরমে প্রাণ অতিষ্ঠ হওয়ার মধ্যে একটিই স্বস্তির কথা শুনিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তা হচ্ছে, তাপমাত্রা আরেকটু বাড়লেও সামনের দিনগুলোতে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪২ ডিগ্রি বা এর বেশি তাপমাত্রা) হওয়ার সম্ভাবনা কম।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার দেশের ছয় বিভাগ ও আরো কয়েকটি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। রাজশাহী, পাবনা, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর ও পটুয়াখালী জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি বা বেশি) বয়ে গেছে।

এ ছাড়া মৌলভীবাজার, রাঙামাটি, চাঁদপুর, বান্দরবান জেলা; রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বাকি অংশ এবং ঢাকা, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু (৩৬-৩৭.৯) থেকে মাঝারি (৩৮-৩৯.৯) তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিনের তুলনায় গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ০.৬ ডিগ্রি বেশি ছিল। পূর্বাভাস বলছে, আজ ও আগামীকাল দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।  

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ  বলেন, গতকাল দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। আবার কোথাও কমেছে। তবে সব মিলিয়ে বাড়ার পরিমাণই বেশি। অঞ্চলভেদে ০.২ থেকে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়েছে তাপমাত্রা।

এখনো অঞ্চলভেদে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বলে জানান বজলুর রশিদ। রাতের তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা বেশি। মাসের বাকি দিনগুলোতেও পরিস্থিতি কমবেশি একই রকম থাকতে পারে।

সারা দেশে বড় পরিসরে বৃষ্টির সম্ভাবনা না থাকলেও আজ চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলও বন্ধের নির্দেশ
তাপপ্রবাহের কারণে এবার বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এ স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল মনছুর ভূঞা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দাবদাহের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হলো। ২৬ ও ২৭ এপ্রিল (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ২৮ এপ্রিল থেকে সংশ্লিষ্ট শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নির্ধারিত সময় পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

তীব্র গরমে চারজনের মৃত্যু
চলমান তাপপ্রবাহ ও অসহনীয় গরমে দেশের বিভিন্ন স্থানে আরো চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকাল ১০টায় রাজধানীর গুলিস্তানের রাস্তায় আলমগীর শিকদার (৫৬) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক আলমগীরকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাটি তদন্তে হাসপাতালে যাওয়া ওয়ারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম জানান, চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হিট স্ট্রোকেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।  

নাটোরের বড়াইগ্রামে দুপুরের তীব্র গরমের মধ্যে জমিতে কাজ করতে গিয়ে রকুল হোসেন (৩০) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের সাতইল বিলে তাঁর মৃত্যু হয়। রকুল হোসেন গাড়ফা উত্তরপাড়া গ্রামের হাজি আব্দুর রহিমের ছেলে।

প্রচণ্ড গরমে গতকাল দুপুরে ময়মনসিংহের ফুলপুরে রমজান আলী (৭০) নামের এক শিলপাটা খোদাইকারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি তারাকান্দা উপজেলার বগীরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার ইমাদপুর গ্রামে শিলপাটার কাজ করার সময় গরমে অসুস্থ হয়ে যান রমজান আলী। উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে গত সোমবার ক্ষেতে কাজ করার সময় পেয়ারা ব্যাপারী (৮০) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার গান্ধাইল ইউনিয়নের পাটাগ্রাম চরের বাসিন্দা। তবে কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহরাব হোসেন জানান, তিনি হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন কি না নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

news24bd.tv/aa