বাংলাদেশের সাথে কুয়েতের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন

কুয়েত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হলো।

বাংলাদেশের সাথে কুয়েতের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন

অনলাইন ডেস্ক

কুয়েত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হলো। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪তম বার্ষিকী ও জাতীয় দিবসের পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে কুয়েতের কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর পূর্তি তথা সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করে কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪তম বার্ষিকী ও জাতীয় দিবসের পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে কুয়েতের কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর পূর্তি তথা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করে কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস।

সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এদিন সন্ধ্যায় পাঁচ তারকা হোটেল ক্রাউন প্লাজায় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সম্মানার্থে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ দূতাবাস।

কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) মোঃ আশিকুজ্জামান ও তার স্ত্রী মিসেস নাহিদ নিয়াজ শিলু, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মু. হাসান উজ্জামান, মিনিষ্টার শ্রম আবুল হোসেন, কাউন্সিলর ও দূতালয় প্রধান মুনিরুজ্জামান ও কাউন্সিলর ইকবাল আকতার অতিথিদের স্বাগত জানান।

কাউন্সিলর ও দূতালয় প্রধান মুনিরুজ্জামানের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ ও কুয়েতের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরু হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রাষ্ট্রদূত মোঃ আশিকুজ্জামান। বক্তব্যে তিনি প্রধান অতিথি ও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, রাষ্ট্রদূত ও বিশিষ্ট অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান।

রাষ্ট্রদূত কুয়েতে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রতি অব্যাহত সমর্থনের জন্য দেশটির আমির শেখ মেশাল আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ, কুয়েত সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রদূত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। এছাড়া জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধকালে ত্রিশ লাখ শহীদ, দুই লাখ অসম্মানিত নারী এবং জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান-মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

রাষ্ট্রদূত সেই সকল বিদেশী দেশ ও নাগরিকদের ধন্যবাদ জানান যারা বাংলাদেশের বিজয় অর্জনে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে নৈতিক ও শারীরিকভাবে অবদান রেখেছেন।

রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে বলেন, কুয়েতই প্রথম উপসাগরীয় দেশ যারা স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৪ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ ও কুয়েত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, রফতানি ও আমদানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জনশক্তি, কৃষি, শিক্ষা, পর্যটন ও প্রতিরক্ষা খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা উপভোগ করছে।

তিনি আরও বলেন, উভয় দেশ খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সবুজ প্রযুক্তি, আইসিটি ও ডিজিটালাইজেশন ইত্যাদির মতো পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।

কুয়েতের আমির শেখ মেশাল আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, একটি উন্নয়নশীল দেশ হওয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও জ্ঞানভিত্তিক সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে ‘রূপকল্প ২০৪১ স্মার্ট বাংলাদেশ’ ঘোষণা করা হয়েছে।

গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ নির্মাণ, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, সিরামিক, চামড়া, কৃষি-ব্যবসা, আইসিটি, জ্বালানি খাত এবং পর্যটনসহ বাংলাদেশের প্রধান প্রধান অর্থনৈতিক সম্ভাবনাময় খাতগুলো তুলে ধরে কুয়েত ও বিশ্বের সব বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান রাষ্ট্রদূত।

রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য শেষে কেক কাটা হয়। এরপর একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তাতে প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পী কেয়া ও কুয়েতী নাগরিক স্বনামধণ্য কন্ঠশিল্পী মোবারক আল রাশেদ বাংলায় গান পরিবেশন করেন।

অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র তৈরী হওয়ার পাশাপাশি কুয়েতের আমির শেখ মেশাল আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।

news24bd.tv/ab

এই রকম আরও টপিক