পাকিস্তানে মানহীন ওষুধ বিক্রির দায়ে চারজনের কারাদণ্ড ও জরিমানা

পাকিস্তানে মানহীন ওষুধ বিক্রির দায়ে চারজনের কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে।

পাকিস্তানে মানহীন ওষুধ বিক্রির দায়ে চারজনের কারাদণ্ড ও জরিমানা

অনলাইন ডেস্ক

পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মানহীন ওষুধ বিক্রির দায়ে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান নির্বাহী সহ চারজনকে কারাদণ্ড দিয়েছে রাওয়ালপিন্ডি ওষুধ আদালত। অভিযুক্তদেরকে মোটা অঙ্কের জরিমানাও করা হয়েছে। খবর ডনের।

অভিযোগ অস্বীকার করে জিএসকে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ঘোষণা দিয়েছে।

রায় অনুযায়ী, প্রাদেশিক ওষুধ পরিদর্শক তেহসিল হাসান আবদাল আদালতে অভিযোগটি দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে আরেকজন পরিদর্শক উজমা খালিদ জিএসকের প্রস্তুত করা সেপট্রান ট্যাবলেটের স্যাম্পল পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে এটিকে মানহীন হিসেবে শনাক্ত করেছিলেন।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভিযোগ গঠন করা হয়। অভিযুক্ত সকলেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন এবং আদালতে বিচারের সম্মুখীন হয়েছিলেন।

রায়ে বলা হয়, পাকিস্তানে জিএসকের উৎপাদন এবং মান নিয়ন্ত্রণ ইউনিট রয়েছে। মানহীন ওশুধটির বিক্রি ও উৎপাদন বন্ধে জিএসকে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

আদালত জিএসকের প্রধান নির্বাহী, প্রোডাকশন ম্যানেজার, কোয়ালিটি কন্ট্রোল ম্যানেজার এবং গ্যারান্টরকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।

আদালতের পরবর্তী নির্দেশ আসা পর্যন্ত জিএসকের প্রধান নির্বাহীকে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। তাকে ৪ দশমিক ৭ মিলিয়ন রুপি জরিমানা করা হয়েছে, যা অনাদায়ে তাকে আরও তিন মাস জেলে থাকতে হবে।

বাকি তিনজনকে দুই বছরের কারাদন্ড এবং ৬ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। জরিম্না অনাদায়ে তাদেরকে আরও ছয় মাস জেলে থাকতে হবে।

জিএসকের সেক্রেটারি আগা সালমান তৈমুর আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।

পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জকে লেখা এক চিঠিতে তৈমুর বলেন, জিএসকে ও অভিযুক্তরা অভিযোগ অস্বীকার করছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাওয়ালপিন্ডি ওষুধ আদালতের চেয়ারম্যান নাদিম বাবর খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ মামলার রায় প্রদান করে। মামলাটি পাকিস্তানের ওষুধ খাতে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

পাকিস্তানের ওষূধ আইনজীবী ফোরামের প্রেসিডেন্ট নুর মোহাম্মদ মাহের জানান, ওষুধটির মানে কোনো সমস্যা নেই। ওষুধটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে মলিকিউল ছিল, কিন্তু ট্যাবলেটটি গলে যাওয়ার ক্ষেত্রে সময় লাগছিলো। ফিল্ম কোটেড ট্যাবলেট পাকস্থলীতে গলতে ৩০ মিনিট সময় লাগে, অন্যান্য ট্যাবলেট গলতে ৬০ মিনিট সময় লাগে। ট্যাবলেট গলতে যতো বেশি সময় লাগবে রোগ সারতেও ততো বেশি সময় লাগবে। মার্কিন ফার্মাকোপিয়ার বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে প্রতিটি ট্যাবলেটকে গলে যেতে হবে, যা না ঘটলে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। কিন্তু অভিযুক্তদের যে শাস্তি দেয়া হয়েছে তা মাত্রাতিরিক্ত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ওষুধ কোম্পানির প্রধান জানান, এমন শাস্তির কথা আগে শুনিনি। আদালত জিএসকে'কে কয়েকবার নোটিশ দিলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি। আদালতে তর্ক না করে অভিযুক্তদের উচিত ছিল আরও নমনীয় হওয়া। এই রায় অন্য ওষুধ কোম্পানিগুলোর জন্যও একটি শিক্ষা।

news24bd.tv/ab