‘পিপিং টম’পরিভাষাটি ইংলিশদের সৃষ্টি। অকারণে সৃষ্টি হয়নি এই শব্দ দুটি, এর শানে নজুলও আছে। সোজা বাংলায় ‘পিপিং টম’ বলতে ‘উঁকি মারা’ বোঝালেও ইংরেজিতে ‘পিপিং টম’ এমন কোনো ব্যক্তিকে বোঝায়, যিনি গোপনে অন্যের একান্ত বা অন্তরঙ্গ ধরনের কোনো দৃশ্য উপভোগ করেন, যা জনৈক ‘টম’ করেছিলেন। কাহিনির এই ‘টম’ কে ছিলেন এবং সকলে কেন মনে করেন যে, উক্ত ‘টম’ আড়াল থেকে নগ্ন লোকজনকে দেখা উপভোগ করতেন।
কাহিনীতে প্রকৃত ঘটনা হিসেবে রয়েছে যে, লেডি গডিভা নগরবাসীর পক্ষে তার স্বামীকে বলেন তাদের ওপর আরোপিত কর হ্রাস করতে। স্ত্রীর শালীনতা ও মার্জিত বৈশিষ্ট সম্পর্কে যেহেতু স্বামী লিওফ্রিক জানতেন, সেজন্য তিনি কৌতুকের সঙ্গে বলেন যে, তিনি যদি নগ্নাবস্থায় নগরীর রাস্তাগুলো প্রদক্ষিণ করতে সম্মত হন, তাহলে তিন কর হ্রাস করবেন।
লখনউয়ের বেগমের বদনা ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত উর্দু সাহিত্যিক এবং ১৪ খণ্ডের ‘উর্দু টু উর্দু’ অভিধানের সংকলক মুহাজ্জাব লখনউয়ি (১৯০৬-১৯৮৫) তার শহরের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ঐতিহ্যের ওপর গভীর অধ্যয়নের জন্যও খ্যাত। একবার তিনি তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের কাছে পুরোনো লখনউয়ের বেগমদের সূক্ষ্মতা, বিনয় এবং চারিত্রিক বৈশিষ্টের একটি ঘটনা বর্ণনা করেন। মুহাজ্জাব লখনউয়ি’র বর্ণনা অনুযায়ী, ‘একদিন সকালে বেগম সাহিবা দেখলেন যে, তিনি তার পায়খানায় যে বদনাটি ব্যবহার করেন, সেটি নেই। বদনা না পেয়ে তিনি অসহায়ের মতো কান্নাকাটি শুরু করেন। তার চাকরাণীরা ঘটনাটি নওয়াব সাহিবকে জানায়। নওয়াব তার প্রিয় বেগমের দুর্দশা দেখে তাকে আশ্বস্ত করেন যে, তিনি হারিয়ে যাওয়া সস্তা অ্যালুমিনিয়ামের বদনার স্থলে প্রতিস্থাপন করবেন সূক্ষ্মভাবে খোদাই করা একটি রৌপ্য বদনা। কিন্তু বেগমের শঙ্কা ছিল অন্যত্র। তিনি নওয়াব সাহিবের কাছে তার উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা ব্যক্ত করেন, ‘আসলে আমি এই সামান্য ক্ষতির জন্য আমার কোনো কষ্ট নেই। আমার মধ্যে একটি ভয় কাজ করছে এবং, তা হচ্ছে, পুরোনো বদনাটি শৈশব থেকে আমাকে নগ্ন অবস্থায় দেখে এসেছে, এখন অন্য একটি বদনা আমাকে উঁকি দিয়ে দেখবে। ’
( বানানরীতি লেখকের নিজস্ব)
news24bd.tv/ডিডি