সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম নাসিম ওসমান

সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

অনলাইন ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম নাসিম ওসমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী মঙ্গলবার (৩০এপ্রিল)। ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল ভারতের দেরাদুনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

নাসিম ওসমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং আপাদমস্তক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি শুধু প্রত্যক্ষ মুক্তিযুদ্ধই করেননি, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ নিতে অংশ নিয়ে ছিলেন প্রতিরোধ যুদ্ধেও।

১৯৫৩ সালের ৩১ জুলাই নারায়ণগঞ্জে ঐহিতাসিক ওসমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন নাসিম ওসমান। তার বাবা স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত (মরোণত্তর) প্রয়াত একেএম শামসুজ্জোহা ছিলেন ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তার মা মরহুম বেগম নাগিনা জোহাও ছিলেন ভাষাসৈনিক।

সদালাপী নাসিম ওসমান ছিলেন পরিবারের বড় সন্তান।

ছাত্রজীবনে পরিবারের ভূমিকায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নাসিম ওসমান আওয়ামী লীগের রাজনীতি দিয়ে জীবন শুরু করে ছিলেন। মহানমুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন অকুতোভয় বীরসেনানী। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নাসিম ওসমান ভারতে চলে যান। সেখানে তিনি গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ শেষ করে দেশে ফিরে এসে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন।

১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট রাতে নাসিম ওসমানের বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠপুত্র ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, যে অনুষ্ঠানে তোলা ছবিটি ছিল তার জীবনের শেষ আলোকচিত্র। পরদিন তথা ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর একটি অনুষ্ঠান থাকায় নাসিম ওসমানের অনুরোধ সত্ত্বেও শেখকামাল ওই রাতে নারায়ণগঞ্জে আসেননি। তিনি নারায়ণগঞ্জে এলে বাংলাদেশের ইতিহাস হয়তো অন্যভাবেও রচিত হতো।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিজের নবপরিণীতা স্ত্রীকে রেখে পরিবারের সব নারী সদস্যের অলংকার সংগ্রহ করে নাসিম ওসমান চলে যান বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে। জাতির পিতার আদর্শে বিশ্বাসী হলেও শুধু তৎকালীন আওয়ামী ১৯৮৮, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে মোট চারবার জাতীয় পার্টি ও মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদরওবন্দর) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বন্দরের নাসিম ওসমান উচ্চ বিদ্যালয়ে মিলাদ ও দোয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এতিমখানা, মসজিদসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকেও পবিত্র কোরআন খতম ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

পাশাপাশি তার ছোট ভাই ও সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম ওসমানের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কয়েক হাজার শ্রমিক ও এতিমদের নিয়ে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় অংশ নেওয়ার আকুল আবেদন জানানো হয়েছে।

news24bd.tv/কেআই