তীব্র গরমে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি ভালো নাকি ক্ষতিকর?

তীব্র গরমে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি ভালো নাকি ক্ষতিকর?

অনলাইন ডেস্ক

তীব্র গরম এবং তাপপ্রবাহ অনন্য এক নজির গড়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ৭৬ বছরের তাপপ্রবাহের রেকর্ডও ভেঙেছে। প্রচণ্ড গরমে সর্বস্তরের মানুষের যেনো হাঁসফাঁস অবস্থা। হিটস্ট্রোকে এই বছরের মতো মানুষের মৃত্যু যেনো কখনোই দেখেনি বাংলাদেশ।

তার উপর একের পর এক তাপপ্রবাহের রেকর্ড ভাঙছে। একদিকে অসহনীয় তাপমাত্রা অন্যদিকে বাতাসের অত্যধিক আদ্রতা। এই দুইয়ের আক্রমণে মানুষের অবস্থা নাজেহাল। তাই একটু স্বস্তির খোঁজে অনেকেই ফ্রিজ থেকে বের করে ঠান্ডা পানি পান করে থাকেন।

অনেকে বরফজমা ঠান্ডা পানিও পান করেন।

আপাতদৃষ্টিতে বরফজমা ঠান্ডা পানি সাময়িক কিছুটা আরাম দিলেও বিশেষজ্ঞদের মতে হুটহাট করে একেবারে ফ্রিজ থেকে বের করেই বরফজমা ঠান্ডা পানি পান করা ঠিক নয়। শুধু গরম বলে নয়, যেকোনো সময় ঠান্ডা পানি পানের বিষয়ে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকরা।

ঠান্ডা পানি পান কী স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?
গরমে ঠান্ডা পানি পান করা যেতেই পারে। তবে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করা শরীরের জন্য খারাপ হতে পারে। ঠান্ডা পানি হজমে ব্যাঘাত ঘটায়। গ্রীষ্মের গরমের কথা মাথায় রেখে যতটা সম্ভব ঠান্ডা পানি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

ঠান্ডা পানি খেলে কি কি হতে পারে তা নিচে দেওয়া হলো-

শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্যহীনতা: শরীরের তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করার কারণে দেহের তাপমাত্রা তখন আর ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইটে থাকে না। তখন শরীরে টনসিলের সমস্যা, মাইগ্রেনের সমস্যা, দাতে ব্যথা, খাদ্যনালীর সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করলে সর্দি, কাশি বা জ্বরের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

গলাব্যথা: গরমে ঠান্ডা পানি পানে গলাব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া সর্দি-কাশির অন্যতম কারণ হতে পারে এই ঠান্ডা পানি। খাবারের পরপর ঠান্ডা পানি পানে অতিরিক্ত মিউকাস (শ্লেষ্মা) তৈরি হয়। এটি শ্বাসপ্রশ্বাসে বাধা তৈরি করে। যখন শ্বাসনালীতে বাঁধা তৈরি হয়। এতে করে নানা প্রদাহযুক্ত সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

হৃদস্পন্দন কমিয়ে দেয়: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠান্ডা পানি পান হৃদস্পন্দন কমিয়ে দিতে পারে। তাইওয়ানের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঠান্ডা পানি পান করা হার্টের জন্য ক্ষতিকর। তাই বিপদ থেকে বাঁচতে ঠান্ডা পানি পানের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে। যাদের আগে থেকেই হার্টের সমস্যা রয়েছে, তারা ঠান্ডা পানি পুরোপুরি এড়িয়ে চলবেন।

হজমে বাধা: বিশেষজ্ঞদের মতে, ঠান্ডা পানি বা ঠান্ডা কোমল পানীয় রক্তনালীর সংস্পর্শে আসে এবং হজমপ্রক্রিয়ায় বাধা দেয়। হজমের সময় যে পুষ্টি শোষিত হয়, সে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়। শরীর তখন হজমপ্রক্রিয়ার চেয়ে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে। শরীরে বেশি পানিশূন্যতা দেখা যায়।

ঈষদুষ্ণ পানি পান করুন: অসহনীয় গরম পড়েছে বলে অনেকেই কুসুম গরম পানি খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। বরং ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খাচ্ছেন। কিন্তু এ ভুল করতে যাবেন না। সকালে ঈষদুষ্ণ পানি পান করলে শরীরের ফ্যাট কমে, হজম প্রক্রিয়া ঠিকমতো কাজ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তাও ভালো হয়ে যায়। তাই রোজ সকালে হালকা গরম পানি পান করতে মোটেও ভুল করবেন না।

বিশেষজ্ঞরা এই তীব্র গরমে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পানিশূণ্যতা দূর করতে ডাবের পানি, ফলের জুস, ঘোল, লেবুর শরবতও পান করা যায়।

news24bd.tv/SC