খালি পড়ে আছে ৯০ লাখ বাড়ি

জাপানের গ্রামে পরিত্যক্ত একটি আকিয়া। ছবি: সংগৃহীত

খালি পড়ে আছে ৯০ লাখ বাড়ি

অনলাইন ডেস্ক

জাপানের ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যা দেশটির সমাজ ও অর্থনীতিতে যেমন প্রভাব ফেলছে, তেমনি খালি বাড়ির সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৯০ লাখ। এই খালি বাড়িগুলোর প্রত্যেকটিতে তিনজন করে রাখলে অস্ট্রেলিয়ার সমগ্র জনসংখ্যার বাসস্থান জাপানেই সম্ভব। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

গত মঙ্গলবার প্রকাশিত জাপানের সরকারি পরিসংখ্যান দেখায় যে আকিয়া নামে পরিচিত জাপানের খালি বাড়ির সংখ্যা ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বেড়েছে পাঁচ লাখেরও বেশি।

জাপানে এত বেশি খালি বাড়ির কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, দেশটির গ্রামগুলোতেও জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। সে সঙ্গে, উত্তরাধিকার সূত্রে যারা বাড়িগুলোর মালিক তাঁদের অনেকে সেখানে বাস করতে চান না। বাড়িগুলো সংস্কার বা ভেঙে ফেলার ব্যাপারেও অনীহা কাজ করে তাঁদের।

জাপানের মোট বাড়ির ১৪ শতাংশই খালি।

যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান নোমুরা রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অনুমান, জাপানে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ আকিয়া রয়েছে এবং এক দশকের মধ্যে দেশটির ৩০ শতাংশেরও বেশি বাড়ি খালি হয়ে যেতে পারে।

জরিপের মধ্যে থাকা বাড়িগুলোর মধ্যে ৪৪ লাখই ভাড়া দেওয়া যাবে। কিন্তু এসবের বেশির ভাগই অনেক দিন ধরে খালি পড়ে আছে এবং প্রধান জনবসতি থেকে দূরে। ৩৮ লাখ বাড়ির অবস্থা জানা যায়নি। কেবল ৩ লাখ ৩০ হাজার বাড়ি বিক্রির জন্য রাখা ছিল।

জাপানে খালি জমির কর ভবনসহ জমির চেয়ে বেশি। এ কারণে জমির অনেক মালিকই তাঁদের পুরোনো বাড়ি ভেঙে বাড়তি করের বোঝা মাথায় নিতে চান না। আবার অনেকেই উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি এড়াতে চান।

তবে খালি বাড়ির এই আধিক্য বিদেশিদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে কমিঙ্কা নামের ঐতিহ্যবাহী বাড়িগুলো যেমন সস্তা, তেমনি এর গঠনও অনেকটাই অপ্রচলিত। তাই ভাড়া করে থাকার জন্য পর্যটকদের কাছে এসব বাড়ির চাহিদা বাড়ছে।

হানা সাকাতা এবং তাঁর স্বামী প্রায় এক দশক ধরে তাঁদের নিউ হেরিটেজ নামক উদ্যোগের মাধ্যমে বাড়িগুলো সংস্কার করে ভাড়া দিচ্ছেন। সাকাতা জানান, বাড়িগুলোকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে প্রচুর খরচ হয়।

তিনি বলেন, ‘বিদেশিদের মধ্যে বাড়িগুলো নিয়ে প্রচুর আগ্রহ আছে। জাপানে এই বিশাল খামারবাড়িগুলো খুব সস্তায় বা বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। কিন্তু এই উদ্যোগটি বিশাল এবং বাড়িগুলো ঠিকভাবে সংস্কার করতে পারে—এমন ঠিকাদার খুব বেশি নেই। ঐতিহ্যবাহী বাড়িগুলোর কাজ যারা করতেন তাঁদের সংখ্যাও কমে আসছে। তবে গত ১০ বছরে আমরা প্রচুর বিদেশি মালিকানাধীন আকিয়া দেখতে পাচ্ছি। ’

বিদেশি পর্যটকদের মাঝে ঐতিহ্যবাহী জাপানি বাড়িতে থাকার আগ্রহ অনেক বেশি। বর্তমানে এই চাহিদা সরবরাহকেও ছাড়িয়ে গেছে বলে জানান সাকাতা।

news24bd.tv/aa