আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়া নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই বলে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। বুধবার (৮ মে) সচিবালয় ঢাকায় সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।
তিনি বলেন, ‘আইএমএফ নতুন করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আয় বাড়ানো, সুদহারের বিষয় নিয়ে পরামর্শ দিয়েছে। জলবায়ু ও দুর্যোগ মোকাবিলার পরামর্শ অনুসরণ করে চলতি বছরই কাজ শুরু করবে সরকার।
’আইএমএফ প্রতিনিধি দল অর্থ প্রতিমন্ত্রীর কাছে ঋণের শর্ত ও সংস্কারে কতটা অগ্রগতি ও আরও কতটা করতে হবে সেই সুপারিশের মূল বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ এপ্রিল থেকে টানা ১৫ দিন আইএমএফ প্রতিনিধি দল সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করে। তার সারমর্ম নিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী সঙ্গে বুধবার বৈঠক করে সফররত প্রতিনিধি দলটি।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইএমএফের তৃতীয় কিস্তির ব্যাপারে কোনো উদ্বেগ নেই।
করের হার বা আওতা বাড়ানোর যে আলোচনা আছে, তাতে মানুষের কষ্ট বাড়বে কিনা সাংবাদিকরা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শর্ত পূরণ করতে গিয়ে মানুষের জন্য ভোগান্তি হয় এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না বাংলাদেশ।
এ সময় অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, আইএমএফের ১০টি শর্তের মধ্যে বাংলাদেশ কেন একটি পূরণ করতে পারেনি তার সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। সবকিছু ঠিক থাকলে আসছে জুনে রিজার্ভে যোগ হতে পারে তৃতীয় কিস্তির টাকা।
বাংলাদেশ পক্ষ বলছে, রিজার্ভ ছাড়া যেহেতু শর্তের অন্যান্য দিক পূরণ করা হয়েছে, সেহেতু ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়া নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। যদি এই রিভিউ মিশনের মূল্যায়নের পরিপ্রেক্ষিতে তৃতীয় কিস্তি ছাড় করে আইএমএফ, তাহলে সেটির পরিমাণ সব মিলিয়ে ৬৮ কোটি ডলার হতে পারে। চলতি মে মাসের শেষ দিকে কিংবা আগামী জুনের শুরুতে তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করতে পারে আইএমএফ।
জানা গেছে, আইএমএফের ঋণ কর্মসূচি শুরুর পর দুই কিস্তিতে ১০০ কোটি ডলারের বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। এবারের সফরে ঋণ পেতে বেঁধে দেওয়া শর্ত ও সংস্কার কতটা পূরণ হয়েছে সেই বিষয়গুলোই খতিয়ে দেখেছেন আইএমএফের বিশেষজ্ঞ দলটি। মোটা দাগে বাজেটের আকার, রাজস্ব আয়, যৌক্তিক ভর্তুকি নির্ধারণ ও নিট রিজার্ভ নিয়ে নতুন করে লক্ষ্যমাত্রা ও সুপারিশ দিয়েছে এই পূর্বমূল্যায়ন দল।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জন্য অনুমোদন করা ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের শর্ত পূরণের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে আইএমএফের প্রতিনিধি দল ঢাকায় তাদের মিশন পরিচালনা করছে। এরই মধ্যে দুই কিস্তিতে আইএমএফের ঋণের অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলারের প্রথম কিস্তি ছাড় করা হয়। আর ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ছাড় করে সংস্থাটি। প্রতিনিধি দলটি সরকারের অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক শেষ করেছে।
news24bd.tv/DHL