এক নজরে ফলাফলের সবদিক

এসএসসির ফলাফল বিশ্লেষণ

এক নজরে ফলাফলের সবদিক

অনলাইন ডেস্ক

আজ রোববার ( ১২ মে) ২০২৪ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, এবার গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। ছাত্রদের পাসের হার ৮১.৫৭ শতাংশ, ছাত্রীদের পাসের হার ৮৪.৪৭। আর নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮৩.৭৭ শতাংশ।

এর মধ্যে সর্বোচ্চ পাসের হার যশোর বোর্ডে ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সিলেট বোর্ডে ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এছাড়াও মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৯.৬৬ শতাংশ। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাস ৮১.৩৮।

এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। এর মধ্যে ছাত্রীদের সংখ্যাই বেশি। সবচেয়ে বেশি জিপিএ-৫ রয়েছে ঢাকা বোর্ডে।

কোন বোর্ডে পাসের হার কত:
২০২৪ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় ৯টি সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডে গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ।

যশোর বোর্ডে পাসের হার সবচেয়ে বেশি ৯২.৩২ শতাংশ। আর সিলেটে সর্বনিম্ন ৭৩.৩৫ শতাংশ। এ ছাড়া ঢাকায় ৮৯.৩২, রাজশাহীতে ৮৯.২৫, বরিশালে ৮৯.১৩, ময়মনসিংহে ৮৪.৯৭, চট্টগ্রামে ৮২.৮০, কুমিল্লায় ৭৯.২৩, দিনাজপুরে ৭৮.৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।

এ বছর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৮১.৩৮।

জিপিএ-৫ কোন বোর্ড কত:
এবার মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। এর মধ্যে ছাত্রীদের সংখ্যাই বেশি। সবচেয়ে বেশি জিপিএ-৫ রয়েছে ঢাকা বোর্ডে।

এদিকে রাজশাহীতে পাস ও জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৮ হাজার ৭৪ শিক্ষার্থী। গতকার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২৬ হাজার ৮৭৭ জন।

যশোরে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৭৬১ জন শিক্ষার্থী। দিনাজপুরে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ১০৫ জন শিক্ষার্থী।

ময়মনসিংহে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩ হাজার ১৭৬ জন। কুমিল্লায় পেয়েছে ১২ হাজার ১০০ শিক্ষার্থী। গত বছরের চেয়ে এবারের ফলাফলে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গতবার জিপিএ- ৫ পেয়েছিল ১১ হাজার ৬২৩ জন।

চট্টগ্রামে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ হাজার ৮২৩ শিক্ষার্থী। গত বছর এই বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১১ হাজার ৪৫০ জন শিক্ষার্থী।

সিলেটে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজার ৯২০ জন। গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই কমেছে। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৮ হাজার ৫০৫ জন। বরিশালে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ১৪৫ জন।

এ ছাড়া মাদ্রাসা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ হাজার ২০৬ জন। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) ৮১.৩৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৭৮ জন।

শতভাগ পাস, সবাই ফেল যেখানে
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় এবার সারা দেশে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ হাজার ৯৬৮। কোনও শিক্ষার্থীই পাস করেনি ৫১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে।

রোববার (১২ মে) শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এ তথ্য জানান।

সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, এবার মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৯ হাজার ৮৬১।

পাসের শীর্ষে যশোর, সর্বনিম্ন সিলেট
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় পাসের হারে শীর্ষে রয়েছে যশোর বোর্ড আর সর্বনিম্ন পাসের হার সিলেট বোর্ডে।

বোর্ড সূত্র জানায়, যশোর বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

এ ছাড়া, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৩২ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৯ দশমিক ২৫ শতাংশ, কুমিল্লায় ৭৯ দশমিক ২৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ, বরিশালে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ ও ময়মনসিংহে ৮৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

জনসংখ্যা তেমন বাড়েনি, দ্বিগুণ বেড়েছে পরীক্ষার্থী
দেশের জনসংখ্যা তেমন না বাড়লেও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

তিনি বলেছেন, ২০০৮ সালে পরীক্ষার্থী ছিল ১০ লাখ ১৩ হাজার। সেখান থেকে ২০২৪ সালে পরীক্ষার্থী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৩ হাজারের বেশি। শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা প্রদানে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

রোববার (১২ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।

ছাত্ররা কেন পিছিয়ে, জানতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও পাসের হারে ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্রদের পিছিয়ে থাকার কারণ খুঁজতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (১২ মে) গণভবনে ২০২৪ আলের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রাপ্তির পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় জোর দিতে হবে। পরিপূর্ণ শিক্ষিত হতে এবং বিশ্ব নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব পালনে যা যা দরকার সেটা আমরা প্রবর্তন করতে চাই। শিক্ষাক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরও বলেন, একসময় মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও ফলাফল পাওয়া যেতো না। এখন মাত্র ৬০ দিনের মাথায় ফলাফল পাওয়া যায়। ফলাফল প্রকাশকে এখন একটা নিয়মের মধ্যে আনা হয়েছে।

শিক্ষার পেছনে ব্যয়কে বিনিয়োগ হিসেবে দেখে সরকার এ কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ইচ্ছা ছিল দেশের মানুষের মাঝে শিক্ষা বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টি করা। দিনে দিনে আমাদের দেশে স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যাও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও বলতে চাই, যারা এখনও শিক্ষার বাইরে রয়েছে তাদেরকে শিক্ষার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফলাফলে দেখলাম অধিকাংশ জায়গায় ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীরা বেশি পাস করেছে। এটা আমাদের জন্য সুখবর। এসএসসি পর্যন্ত নারীদের শিক্ষা আমরা অবৈতনিক করেছি। পরীক্ষায়ও ছাত্রী সংখ্যা বেশি। ছাত্রের সংখ্যা কম হওয়ার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে ভালো কথা, কিন্তু ছেলেরা পিছিয়ে যাচ্ছে কেনো সেটা খুঁজে বের করতে হবে।

news24bd.tv/তৌহিদ