'দেশের ১৮.৬ ভাগ মানুষ বাত ব্যথায় ভুগছেন'

'দেশের ১৮.৬ ভাগ মানুষ বাত ব্যথায় ভুগছেন'

নিউজ টোয়েন্টিফোর হেলথ

দেশে ক্রমেই বাড়ছে বাতে ভোগা মানুষের সংখ্যা। শুরুতেই সঠিক চিকিৎসা, নিয়মিত ওষুধ সেবনের পাশাপাশি নিয়মমাফিক জীবন পরিচালনা করা গেলে বাতের যন্ত্রণা থেকে অনেকটা স্বস্তি পেতে পারেন রোগীরা। উদ্বেগের বিষয় সঠিক সময় উপযুক্ত চিকিৎসা না করা গেলে ঝুঁকিতে পড়তে পারে জীবন। বাত ব্যথা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, মাজা ব্যথা বাত, গিরাব্যথা, হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিস, স্পন্ডাইলো আর্থ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিস  বা হাড়ক্ষয় রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেশি।

শনিবার রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব কনভেনশন সেন্টারে বাত ব্যথা রোগীদের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন। বাত ব্যথা রোগীদের জন্য কাজ করা সংগঠন প্রফেসর নজরুল রিউমাটোলজি ফাউন্ডেশন এন্ড রিসার্চ (পিএনআরএফআর) ট্রাস্টের পক্ষ হতে অষ্টম বারের মতো এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাত ব্যথা সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিএনআরএফআর ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ও শমরিতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নীরা ফেরদৌস।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিএনআরএফআরের চেয়ারম্যান বাত ব্যথা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক)  মো. আখতার হোসেন, পথিকৃত ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলি, সাবেক সংসদ সদস্য ও বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা শিরীন আহমেদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, অধ্যাপক ডা. সুজন আল হাসান, পিএনআরএফারের সেক্রেটারি জেনারেল ড. পিযুষ কান্তি বিশ্বাস প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে দেশভেদে ২৫-৫০ ভাগ মানুষ বিভিন্ন গিরা/পেশীর ব্যথায় ভুগছেন। নারীরা পুরুষের  তুলনায় বেশী ভুগে থাকেন। গিরাব্যথার কারণে প্রায় ২০ ভাগ মানুষ কাজ করতে অক্ষম হয়ে যায়।

২০২২ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী দেশে প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ ১১ কোটি। সে হিসেবে প্রায় ৮০ লাখ মানুষ হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিসে ভুগছেন ( ৭ দশমিক ৩ শতাংশ)। তথ্য অনুযায়ী, হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিসে নারীরা বেশি ভুগছেন। পাশাপাশি  শারীরিক স্থুলতা ও হাঁটুতে আগে আঘাত পাওয়া ব্যক্তিদের এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। অন্যদিকে কোমড় ব্যথা বাত (লাম্বার স্পানাইলোসিস) প্রকোপও অনেক বেশি।  বাত নিয়ে দেশের এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ১৮.৬ ভাগ (২ কোটি ৫ লক্ষ বেশি) এই সমস্যায় ভুগছেন।

অন্যদিকে  যৌবন বয়সের বাত রোগীদের  স্পন্ডাইলো আর্থ্রাইটিসে (SPA) আক্রান্তের হারও উদ্বেগজনক।  গবেষণার প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেশের ১.২ ভাগ (সাড়ে ১৩ লক্ষ) মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন।

এরবাইরে যে কোনো ধরণের ব্যথায় ভোগা মানুষ নিজেকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তারা চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হয়ে গাউট রোগের চিকিৎসা নেন।  যেখানে ইউরিক এসিডহ নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকেন। তবে তথ্য বলছে, গাউট সমস্যায় ভুগছেন দেশের মাত্র ০.৫ ভাগ (সাড়ে ৫ লক্ষ) মানুষ।

তবে ইউরিক এসিডের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি থাকে ৩৩ ভাগ (সাড়ে ৩ ১/২কোটি ) মানুষের। তবে তারা গাউটের রোগী নন অথচ গাউটের ওষুধ সেবন করেন। এতে এক সময় শারীরিক অন্য জটিলতা তৈরি করতে পারে।

দেশের প্রায় ১১ লাখ মানুষ সোরিয়েটিক আর্থ্রাইটিস রোগে ভুগছেন বলেও জানানো হয় অনুষ্ঠানে।

news24bd.tv/health