শি জিনপিং পাঁচবছর পর ইউরোপ সফর করছেন। তার এ সফরের প্রতি তীব্র নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সোম ও মঙ্গলবার দুই দিন ফ্রান্স সফরের পর তিনি হাঙ্গেরি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য নয় এমন দেশ সার্বিয়ায় যান। শি জিনপিং য়ের ফ্রান্স সফর সম্পর্কে বলা হয়, চীনের সঙ্গে ফ্রান্সের বন্ধন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মডেল।
কিন্তু ভেতরের ঘটনা কী ? শি জিনপিং কী চান ইউরোপে ? ইউরোপে বিভক্তি ? লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের এলএসই আইডিয়াসের সহযোগী অ্যান্ড্রু হ্যামন্ড আরব নিউজে এ নিয়ে তার বিশ্লেষণ তুলে ধরে ধরেছেন।
যেমন চীন রাশিয়া –ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে।
চীন নিয়ে ইউরোপ মহাদেশে সমসাময়িক যে মতামত, তার থেকে সার্বিয়া ও হাঙ্গেরির মতামত ভিন্ন।
সার্বিয়ার সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক চীনের। সার্বিয়াকে চীনের ‘নিরেট’ বন্ধু বলে প্রশংসা করেন। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কও বাড়ছে। এর মধ্যে সার্বিয়ার বায়ু, সৌর ও পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পে চীনের ২২০ কোটি ডলার বিনিয়োগও করছে।
দেখা যাচ্ছে ২৭ সদস্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে শি জিনপিং কিছু দেশের সঙ্গে খুব ফরম্যাল সম্পর্ক বজায় রাখছেন আবার কোনো দেশের সঙ্গে খুবই আন্তরিক। ফলে ২৭ দেশ একই ছাতার নিচে কার্যত হতেই পারছে না।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন একটু চটাই চীনের ওপর এই দ্বৈতনীতির ফলে। ফ্রান্সে চীন নিয়ে তিনি ডি-রিস্কিং বা ঝুঁকিপূর্ণ পণ্যে বাণিজ্য না করার নীতি ঘোষণা করেছেন। কিন্তু এমন বললে কি হবে , নিকট অতীতে দেখা যায়, জি-৭–ভুক্ত দেশের মধ্যেই ইতালিই প্রথম চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোডস মহাপরিকল্পনায় স্বাক্ষর করেছিল। যদিও পশ্চিমা বিশ্ব ইতালির এই সিদ্ধান্তকে তখনই বিতর্কিত বলেছিল। ওয়াশিংটনে ট্রাম্প প্রশাসন ইতালির সমালোচনা করেছিল।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ের প্রধান জোসেফ বোরেল এমন অভিযোগও করেছেন যে চীন ইউরোপে বিকল্প ধরনের সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ খুঁজছে।
চীন যা চাচ্ছে সেটা হচ্ছে ইউরোপে তাদের একচেটিয়া বাজার ও আদর্শিক অবস্থানও ধরে রাখা। চীন এগুচ্ছে ধীরে ধীরে। ইউরোপকে করায়ত্ত করাই লক্ষ্য । তবে
চীনের প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতি স্পষ্টতই কঠোরতর পথে হাঁটছে। এমনকি বেইজিং দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর যে বাণিজ্য ক্ষেত্রে সমন্বিত চুক্তি সম্পাদন করতে পেরেছিল, সেটাও ইউরোপীয় পার্লামেন্টে পুনর্নিরীক্ষণের জন্য পাঠানো হয়েছে। এই চুক্তি আটকে যাওয়ার পেছনে মূল উদ্বেগের জায়গা হলো চীনের আচরণ। কিন্তু চীন তার আচরণ পাল্টাচ্ছে না বরং তার আচরণকে যেসব ইউরোপীয় দেশ সমর্থন দিচ্ছে তাদের বন্ধু বানিয়ে দল ভারী করছে।
ইউরোপে চীনা বাজার ইতোমধ্যেই বিশাল। শি এই ইউরোপ সফরের মধ্য দিয়ে চাচ্ছেন সেটিকে আরও বিশাল করতে। চীনা আধিপত্য ক্রমশ বিস্তার করতে।
সেক্ষেত্রে হয়তো একদিন যুক্তরাষ্ট্র আর চীনকে মুখোমুখিই অবস্থান নিতে হবে।
news24bd.tv/ডিডি