গাজায় গণহত্যা বন্ধ চান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন

গাজায় গণহত্যা বন্ধ চান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন

অনলাইন ডেস্ক

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞে বিষয়ে দেশের বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের নীরবতার সমালোচনা করে এবং দেশটিতে চলমান গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে এডুকেশন, রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি)।

শনিবার (২৫ মে) এ বিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার রাফায় ইসরায়েল অভিযানের নামে যে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, তা স্পষ্টতই গণহত্যা এবং ইসরায়েলের এই আগ্রাসন ফিলিস্তিনি জনগণের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।

বিবৃতিতে ফিলিস্তিনে এই হত্যাযজ্ঞের নিন্দা ও বন্ধের আহ্বান জানাবার পাশাপাশি দেশের বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের নীরবতার সমালোচনাও করা হয়। এ বিষয়ে নীরবতা পালন করায় বিষয়টির সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, কিছু রাজনৈতিক দল তাদের বিদেশি প্রভুদের খুশি করতে নীরবতা পালন করে চলেছে।

ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যার বিষয়ে বিএনপি-জামাত যে নীরব ভূমিকা পালন করছে, তা ইসরায়েলকে সমর্থনের নামান্তর।

এর আগে গণমাধ্যম প্রতিবেদনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন ও পলাতক আসামি তারেক রহমানের সঙ্গে ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির মেন্দি এন সাফাদির কথোপকথনের ভিডিও প্রকাশিত হয়।

এই ইসরায়েলি ব্যক্তি নিজেও গণমাধ্যমে এ বিষয়টি স্বীকার করে নেন। ফলে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিজেদের পক্ষে রাখতেই বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলো এই ইস্যুতে তেমন বক্তব্য দিচ্ছে না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

সকল সদস্যের পক্ষে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া এবং ইআরডিএফবি’র সদস্য ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এই বিবৃতিতে জানানো হয়, ফিলিস্তিনের গাজার দক্ষিণের গুরুত্বপূর্ণ শহর রাফায় সামরিক অভিযানের নামে নিপীড়ন, আগ্রাসন ও গণহত্যা চালাচ্ছে দখলদার ইসরাইলী বাহিনী।

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস রাজি হওয়ার পরও এ আগ্রাসন চালিয়েছে ইসরায়েল, যা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। রাফায় ইসরায়েলি হামলায় উদ্বেগ জানিয়ে এটিকে 'আরও মানবিক বিপর্যয়' আখ্যা দিয়েছেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিস। ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এবং এতে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে।

গাজার বাসিন্দাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না এবং ওই ভূখণ্ডটি দুর্ভিক্ষের মুখে পড়তে চলেছে।

এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আরও বলা হয়, গাজা উপত্যকার রাফা শহরে যে কোনো ধরনের সামরিক হামলা ও আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নিপীড়ন, আগ্রাসন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত গঠনের উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যেই নানান বৈশ্বিক ফোরামে বক্তব্য রেখেছেন।

‘গাজায় ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত প্রকৃত অর্থে যুদ্ধ নয়, গণহত্যা’- এমন মন্তব্য করে বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৭৫ বছর ধরে ইসরাইল যুদ্ধের নামে গণহত্যা, আগ্রাসন, জাতিগত নিধন চালাচ্ছে ফিলিস্তিনে, যার সর্ব সাম্প্রতিক হিংস্রতম পর্যায় চলছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার রাফায়। গাজায় প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছে সাধারণ নাগরিক, নারী, শিশু, বৃদ্ধ; পুড়ছে জনবসতি।

মাত্র তিন মাসে ২৭ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, ধ্বংস করা হয়েছে ৮০ ভাগ ঘরবাড়ি। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের নির্দেশ মেনে ইসরায়েলকে অবশ্যই সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের শুরু থেকেই রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে। এ বিষয়ে একাধিকবার ফিলিস্তিনের পক্ষে বক্তব্যও প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বশেষ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে ও যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনের পক্ষে থেকে নিপীড়নের শিকার হওয়া শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে দেশ জুড়ে ছাত্রলীগের আয়োজনে লাখ লাখ শিক্ষার্থী সংহতি সমাবেশ আয়োজন করে।

news24bd.tv/SC