সাঁতার প্রশিক্ষণে নারীদের ‘মাসিক কাপ’ ব্যবহারে সুফল

সাঁতার প্রশিক্ষণে নারীদের ‘মাসিক কাপ’ ব্যবহারে সুফল

অনলাইন ডেস্ক

কমিউনিটি নারী সাঁতার প্রশিক্ষকদের মাসিককালে সাঁতার প্রশিক্ষণ কাজ সচল রাখার জন্য মেন্সট্রুয়াল বা মাসিক কাপের গ্রহণযোগ্যতা ও উপযোগিতা নিয়ে গবেষণায়  ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এ সংক্রান্ত এক জরিপে দেখা গেছে,  প্রশিক্ষক নারীদের ৭০ জনের মধ্যে ৬৪ জনই সফলভাবে মাসিক কাপ ব্যবহার করতে পেরেছেন এবং মাসিক কাপ ব্যবহার করে স্বচ্ছন্দ্যে পানিতে নেমে সাঁতার শিখিয়েছেন। সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) এ জরিপ পরিচালনা করে ।

বাংলাদেশে প্রতিদিন পানিতে ডুবে মারা যায় ৪০ জন শিশু।

এই মৃতু রোধে ২০১৬ সাল থেকে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া  এবং বরগুনা জেলার তালতলী ও বেতাগী উপজেলায় ‘প্রজেক্ট ভাসা’ বাস্তবায়ন করছে সিআইপিআরবি ও রয়্যাল ন্যাশনাল লাইফ বোট ইনস্টিটিউশন (আরএনএলআই)। এই প্রকল্পের আওতায় ৬-১০ বছর বয়সী শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ২০২২ সালে প্রশিক্ষণের কাজে নিযুক্ত কমিউনিটি সাঁতার প্রশিক্ষকদের মধ্যে ৮৮ শতাংশই ছিলেন নারী। তাদের কাজে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল মাসিক চলাকালে পানিতে নামা।
এ সময়ে তারা কমপক্ষে দু’দিন সাঁতার শেখানো থেকে বিরত থেকেন, যাতে প্রকল্পের কর্মপরিকল্পনা থেকে প্রতি মাসে বাদ পড়েছিল ৯২ দিনের কর্মহীনতা। এ সময়ে প্রায় ৬০০ শিশুকে সাঁতার শেখানো সম্ভব ছিল।

মাসিককালীন কী ধরনের ব্যবস্থাপনা থাকলে নারী প্রশিক্ষকরা সাঁতার প্রশিক্ষণ চালিয়ে যেতে পারবেন— বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো তা নিয়ে গবেষণা করছে সিআইপিআরবি। গবেষণার অংশ হিসাবে কমিউনিটি সাঁতার প্রশিক্ষকদের মাসিক ব্যবস্থাপনার জন্য প্রথমবারের মতো ট্রায়াল দেওয়া হয় মেডিকেল গ্রেডেড সিলিকন দিয়ে তৈরি এই ঋতুপাত্র বা মেন্সট্রুয়াল কাপ। গবেষণালব্ধ তথ্য উপাত্ত সংশ্লিষ্ট সকলকে জানানোর জন্য একটি সভার আয়োজন করে সিআইপিআরবি।

২০২৩ সালে সাঁতার প্রশিক্ষক হিসাবে প্রজেক্ট ভাষায় যুক্ত হন ৮১ জন নারী, যাদের বয়স ১৮-৪০ এর মধ্যে। মৌসুমের শুরুতে তাদের বেসিক প্রশিক্ষণের অংশ হিসাবে মাসিক ব্যবস্থাপনা ও মাসিক কাপ পরিধান-পরিষ্কার-খোলা ও সংরক্ষণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের প্রত্যেককে মাসিক কাপ, জীবাণুমুক্তকরণ পাত্র ও ব্যবহারের নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের মধ্যে ৭০ জন মৌসুমের শেষ পর্যন্ত কাজ করেছেন। বাকি ১১ জন বিয়ে, অন্য চাকরিতে যোগদান ইত্যাদি কারণে প্রকল্প থেকে অব্যহতি নিয়েছেন।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এন্ড লাইন জরিপ করে দেখা গেছে, যে ৭০ জনের মধ্যে ৬৪ জনই (৯১.৪%) সফলভাবে মাসিক কাপ ব্যবহার করতে পেরেছেন এবং মাসিক কাপ ব্যবহার করে স্বচ্ছন্দ্যে পানিতে নেমে সাঁতার শিখিয়েছেন। ৬ জন প্রশিক্ষক অনিয়মিত মাসিক, গর্ভধারণ ইত্যাদি কারণে কাপ ব্যবহার করার সুযোগ পাননি কিন্তু সকলেই মাসিক কাপকে পছন্দ করেছেন । ব্যবহারকারীদের ৬৪ জনের মধ্যে মধ্যে ৬৩ জন মাসিক কাপের ব্যবহার অব্যাহত রাখবেন বলেছেন এবং ৬৪ জনই তাদের পরিচিত সকল নারীকে মাসিক কাপ ব্যবহারের স্বস্তি ও উপকারের কথা জানিয়েছেন।

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক

সম্পর্কিত খবর