বেনজীরের অপরাধের দায় পু‌লিশ বা‌হিনী নেবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আসাদুজ্জামান খান কামাল

বেনজীরের অপরাধের দায় পু‌লিশ বা‌হিনী নেবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বেনজীরের ব্যক্তিগত অপরাধের দায় পু‌লিশ বা‌হিনী নেবে না। সে দেশে না‌কি বিদেশে সে বিষয়ে সু‌র্নিদিষ্ট তথ্য নেই। অপরাধ করলে বিচার হবে। তদন্ত চলছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আজ শনিবার (১জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ছাত্রলীগের এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।  

মন্ত্রী বলেন, যদি কেউ অন্যায় করে তাহলে তার শাস্তি বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী হবে। তার বিষয়ে তদন্ত চলছে। তিনি অন্যায় করেছেন না কি নির্দোষ, তিনি কি কর ফাঁকি দিয়েছেন না কি অন্যভাবে অর্থ-সম্পদ গড়েছেন, সেটা তদন্ত শেষ হলে সে অনুযায়ী তার বিচার করা হবে।

আইজিপির এমন কর্মকাণ্ডে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, না, এটা ব্যক্তিগত বিষয়। আমাদের পুলিশ বাহিনী অনেক কষ্ট করে।

জঙ্গি-সন্ত্রাস দমন, কোভিডসহ যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তারা জীবন বাজি রেখে কাজ করেছে। কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে তার দায় প্রতিষ্ঠান নেয় না।

এমপি আনার হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এমপি আনার হত্যার মূল মামলা ভারতে হয়েছে এবং মূল তদন্তও ভারতে হবে। তবে তদন্তে বাংলাদেশ সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।  

হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত একজন নেপালে পালিয়ে গেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একজন সংসদ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে আর আমরা বসে থাকব এমন হতে পারে না। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এবং সহযোগিতাকারী সবাইকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। নেপালে একজন পালিয়ে গেছে। তবে সে কোথায় আছে সেটা সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। তদন্ত হচ্ছে, তাকে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এরআগে গত ৩১ মার্চ কালের কণ্ঠে প্রকাশিত হয় ‘সাবেক আইজিপির অপকর্ম-১’। এই পর্বে ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে মূল প্রতিবেদনে বলা হয়, গোপালগঞ্জে বেনজীরের পরিবারের মালিকানায় রয়েছে প্রায় ৬০০ বিঘা জমির ওপর নির্মিত চোখ-ধাঁধানো রিসোর্ট। তার পাশে কিনেছেন আরও ৮০০ বিঘা জমি। শুধু তা-ই নয়, রাজধানীর গুলশানে ১৭ কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে তিন কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাটসহ দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়ে তোলেন তিনি।

এরপর গত ২ এপ্রিল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত হয় ‘সাবেক আইজিপির অপকর্ম-২’। এই পর্বের মূল শিরোনাম ছিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’। অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুরের ভাওয়াল গড় ইউনিয়নের নলজানী গ্রামে ১৬০ বিঘা জমির ওপর যে রিসোর্ট গড়ে তোলা হয়েছে, তাতে বনের জমিই রয়েছে অন্তত ২০ বিঘা। ওই রিসোর্টের ২৫ শতাংশের মালিকানা বেনজীরের পরিবারের হাতে।

কালের কণ্ঠ’র এসব প্রতিবেদন দেশে-বিদেশে আলোচনার ঝড় তোলে। পরে গত ৪ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে অনুসন্ধানের উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান। পরে ২১ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। একই দিন বেনজীরের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকে আবেদন করেন সংসদ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি অনুসন্ধানে গত ২২ এপ্রিল তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে দুদক। কমিটির সদস্যরা হলেন কমিশনের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক জয়নাল আবেদীন ও নিয়ামুল হাসান গাজী। ২৩ এপ্রিল হাইকোর্টের এক আদেশে দুই মাসের মধ্যে অনুসন্ধানের অগ্রগতি প্রতিবেদন হলফনামা আকারে জমা দিতে বলা হয়।

news24bd.tv/কেআই